শিরোনাম
শুক্রবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

সাহিত্যে নোবেল ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক ইশিগুরোর

প্রতিদিন ডেস্ক

সাহিত্যে নোবেল ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক ইশিগুরোর

এবার সাহিত্যে নোবেল পেলেন জাপানি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেখক কাজুরো ইশিগুরো। ইশিগুরো উপন্যাসিক, চিত্রনাট্যকার এবং ছোটগল্পকার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের যে শহরটিকে পারমাণবিক বোমা ক্ষতবিক্ষত করেছিল সেই নাগাসাকি শহরে তার জন্ম ১৯৫৪ সালে। তার বয়স যখন পাঁচ তখন পরিবারের সঙ্গে ইংল্যান্ডে আসেন। ইংরেজিভাষী জগতের অন্যতম নন্দিত লেখক তিনি। চারবার ম্যান বুকার পুরস্কার অর্জন করেছিলেন তার চারটি উপন্যাসের জন্য।

সুইডিশ একাডেমি তার প্রশংসায় বলেছে, ‘জোরালো আবেগীয় শক্তির’ প্রকাশ ঘটে তার উপন্যাসে, যেখানে ‘বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগের কাল্পনিক অনুভূতির ভিতরের কষ্টগুলো ফুটে ওঠে’। দ্য টাইমস ম্যাগাজিন তাকে ১৯৪৫ সালের পরের শ্রেষ্ঠ ৫০ জন ব্রিটিশ লেখকদের তালিকায় ৩২তম বলে সম্মান জানিয়েছিল। তার শেষ উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় ২০১৫ সালে, ‘দ্য ব্যুরিড জায়ান্ট’ (সমাহিত দানব) নামে।

ইশিগুরোর নোবেল পুরস্কার বিজয় বিশ্বসাহিত্য পাঠকদের কাছে এক চমক। আবার জাপানিদের বেশিরভাগ তার নামই জানে না। গতকাল ইশিগুরোর সাহিত্যে নোবেল জয়ের ঘোষণার পর জাপানের অন্তত তিন ডজন জাপানি সাধারণ নাগরিকের প্রতিক্রিয়া জানতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে এ তথ্য। ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তমকি মাসুকা বলেছেন, তারা এ ধরনের সাহিত্যিকের নাম এবারই প্রথম শুনেছেন। ছোটবেলা থেকে অনেক সাহিত্যিকের বই পড়লেও কাজুও ইশিগুরোর কোনো বই পাননি বলে জানান তিনি। এদিকে গত বছরে মার্কিন গীতিকার বব ডিলানের এই পুরস্কার পাওয়ায় যে বিতর্ক ও বিস্ময় ছিল, একজন ব্রিটিশ সাহিত্যিককে পুরস্কৃত করে নোবেল একাডেমি পুরস্কারটিকে আবার সনাতন সাহিত্য ঘরানায় ফিরিয়ে নিয়ে এল বলে মতামত দিয়েছেন সাহিত্যিকরা। আটটি উপন্যাস লিখেছেন ইশিগুরো, যা ৪০টির বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্যও লিখেছেন ইশিগুরো। তার লেখা উপন্যাস ‘নেভার লেট মি গো’, ‘দ্য রিমেইনস অব দ্য ডে’, ‘দ্য হোয়াইট কাউন্টেস’ ও ‘দ্য স্যাডেস্ট মিউজিক ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’কে চলচ্চিত্রে রূপান্তরের জন্য চিত্রনাট্য তার লেখা। কাজুও ইশিগুরোর বেড়ে ওঠা যুক্তরাজ্যের সারে ও কেন্ট শহরে। কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ও দর্শন বিষয়ে পড়েছেন তিনি। এরপর ইস্ট এনগ্লিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়েটিভ রাইটিং বিষয়ে তিনি স্নাতকোত্তর করেছেন। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলেন দুই বিখ্যাত ইংরেজ সাহিত্যিক ম্যালকম ব্রাডবুরি ও এঞ্জেলা কার্টারকে। তার লেখালেখির ক্ষেত্রে এই দুই সাহিত্যিকের অবদানের কথা তিনি স্মরণ করেছেন বার বারই। কাজুরো ইশিগুরোর উপন্যাসের মূল বিষয় থাকে ইতিহাস এবং অতীত। যেমন তার দ্য রিমেইনস অব দ্য ডে অথবা নেভার লেট মি গো সুইস একাডেমির ভাষায় ‘খুবই পরিমিত প্রকাশভঙ্গি, যা-ই ঘটুক কাহিনীতে লেখকের ভাষা থাকে নির্বিকার’। ইশিগুরো যে আটটি উপন্যাস লেখেছেন সবগুলোর একটা বৈশিষ্ট্য হলো তা কোনো সমাধানে পৌঁছায় না। তার চরিত্ররা অতীতে যে সমস্যা-সংঘাতে পড়ে, তা অমীমাংসিতই থেকে যায়। বিষণ্নতায় শেষ হয় তার কাহিনী। আজ শান্তি এবং আগামী সোমবার অর্থনীতিতে এবারের নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।  এএফপি, বিবিসি।

সর্বশেষ খবর