বুধবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

এক দিন পরই আরেক ছাত্রীর আত্মহত্যা

সাথীর মৃত্যুতে গ্রেফতার হয়নি বখাটে

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় এক দিনের ব্যবধানে আবারও উত্ত্যক্তের শিকার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী মিলি খাতুন (১৪) আত্মহত্যা করেছে। সোমবার সন্ধ্যায় দুপচাঁচিয়া উপজেলার মোস্তফাপুর গ্রামের আবদুর রশিদের মেয়ে মিলি আত্মহত্যা করে। সে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী।

এ ঘটনায় মিলির মা বেলী খাতুন বাদী হয়ে সোমবার রাতেই দুপচাঁচিয়া থানায় দুজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন।

জানা যায়, মোস্তফাপুর গ্রামের জাহিদ হোসেন মণ্ডলের ছেলে বুলু মণ্ডল (৩৮) ও আবুল ফকিরের ছেলে ছদরুল ফকির (৩৬) বেশ কিছু দিন ধরে মিলি খাতুনকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। মিলির মা ওই দুজনের অভিভাবককে বিষয়টি জানান। কিন্তু তাতে তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তাদের উত্ত্যক্তের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে সোমবার সন্ধ্যায় মিলি গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের তীরের সঙ্গে ফাঁস নেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাতেই বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। দুপচাঁচিয়া থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক জানান, মিলি খাতুন নামের এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। তার মা বেলী খাতুন বাদী হয়ে মামলা করেছেন। প্রসঙ্গত, গত রবিবার বিকালে দুপচাঁচিয়ার জিয়ানগর উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী রোজিফা আক্তার সাথী বখাটের উত্ত্যক্তের ঘটনায় নিজ ঘরে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে।

স্কুলছাত্রী সাথী আত্মহননের তিন দিনেও ইভ টিজার গ্রেফতার হয়নি : বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় স্কুলছাত্রী রোজিফা আকতার সাথী আত্মহনন ঘটনার তিন দিন অতিবাহিত হলেও উত্ত্যক্তকারী বখাটে হুজাইফ ইয়ামিনকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। তাকে গ্রেফতার করতে গিয়ে গ্রামবাসী কর্তৃক সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় আটক ২৬ জনকে গতকাল আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে। খোয়া যাওয়া পুলিশের ওয়্যারলেস সেটটিও উদ্ধার হয়নি। বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক জানান, ঘটনার পর থেকে ওই বখাটে ও তার বাবাকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পলাতক থাকায় তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

এ ছাড়া ঘটনার পর পরিবারের লোকজন সবাই পলাতক রয়েছে। আত্মহত্যার প্ররোচণায় মেয়ের বাবা গোলাম রব্বানী উপজেলার হেরুঞ্জা গ্রামের হুজাইফ ইয়ামিন ও তার বাবা আমিনুল মীরকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ ছাড়া দায়িত্বপালনে বাধা ও হামলার অভিযোগে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুর রহিম ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে ৪০-৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। উল্লেখ্য, বখাটে হুজাইফ ইয়ামিনের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে রবিবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতে রোজিফা আকতার সাথী আত্মহত্যা করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। পরে সাথীর বাবার অভিযোগের পরিপ্র্রেক্ষিতে রাতেই হেরুঞ্জা গ্রামে অভিযান চালিয়ে ইয়ামিন ও তার বাবাকে আটকের চেষ্টা করে পুলিশ। এ সময় গ্রামবাসী পুলিশের কাজে বাধা দেয় এবং তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে পুলিশের ৩ কর্মকর্তা আহত হন এবং ওয়্যারলেস সেট খোয়া যায়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে রাতে আবারও অভিযান চালিয়ে ২৬ জনকে আটক করা হয়।

রোজিফা আকতার সাথী উপজেলার জিয়ানগর গ্রামের গোলাম রব্বানীর মেয়ে। স্থানীয় জিয়ানগর হাইস্কুলের নবম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ছিল সে।

সর্বশেষ খবর