গত তিন বছরে ওয়ানডে ক্রিকেটে এমন হতচ্ছাড়া পারফরম্যান্স দেখা যায়নি বাংলাদেশের। বিশেষ করে মাশরাফি বিন মর্তুজা অধিনায়ক হওয়ার পর থেকেই সাফল্যের গ্রাফ উপরে উঠতে থাকে টাইগারদের। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কোয়ার্টার ফাইনাল, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনাল, পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজেও জয় পায় বাংলাদেশ। শুধু দেশের মাটিতে নয়, বাইরেও টাইগারদের পারফরম্যান্স নজরকাড়া। কিছুদিন আগে ঘরের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট জেতায় ক্রিকেটপ্রেমীরার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ভালো কিছুর। কিন্তু স্বপ্ন আর বাস্তবতার জমিনের ব্যবধান যে অনেক, সেটা হাড়ে হাড়ে টের পায় বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। টেস্ট সিরিজে বিপর্যস্ত হয়ে হোয়াইটওয়াশ হয়। সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকে ওয়ানডে সিরিজে। হোয়াইটওয়াশ হয়েছে ইস্ট লন্ডনের বাফেলো পার্কে ২০০ রানের পাহাড়সম ব্যবধানে হেরে। সিরিজের শেষ ওয়ানডেটি ছিল মাশরাফি বিন মর্তুজার জন্য বিশেষ কিছু। ১৮২ ওয়ানডে খেলা মাশরাফি অধিনায়ক হিসেবে গতকাল হাফসেঞ্চুরি করেছেন দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার। হাবিবুল বাশার ও সাকিব আল হাসানের পর তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে ৫০টি ওয়ানডেতে অধিনায়কত্ব করার রেকর্ড গড়েন। বাশার দেশকে নেতৃত্ব দেন ৬৯ ম্যাচে এবং সাকিব ৫০ ম্যাচে। মাশরাফি গতকাল ৫০ ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়ার ল্যান্ডমার্ক গড়েন। মাশরাফির বিশেষ ম্যাচে টাইগার বোলার ও ব্যাটসম্যানদের পারফরম্যান্স ছিল যাচ্ছেতাই। প্রথমে ব্যাট করে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৩৬৯ রান। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রোটিয়াদের সর্বোচ্চ দলগত স্কোর। ২০০৮ সালে বেনোনিতে ৩৫৮ রান ছিল এতদিন দলগত সর্বোচ্চ। আগের দুই ওয়ানডেতে ছিল ৬ উইকেট এবং সব মিলিয়ে উইকেট ১২টি। হতচ্ছাড়া পারফরম্যান্স। মাশরাফি, তাসকিন আহমেদ, রুবেল হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, সাকিব আল হাসানদের নাভিশ্বাস তুলে ছাড়েন ফাফ ডু প্লেসিস, কুইন্টন ডি কক, অ্যাডেন মারক্রামরা। ৩৭০ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে কাগিসো রাবাদা, ডেল পিটারসেনদের সাঁড়াশি আক্রমণে ছন্নছাড়া ব্যাটিং করে মাশরাফি বাহিনী। অথচ পার্লে প্রথম ওয়ানডেতে ২৭৮ এবং ব্লুমফন্টেইনে ২৪৯ রান করেছিল। গতকাল তামিম ইকবালবিহীন সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদদের কেউই দুই অংকের রান করতে পারেননি। একমাত্র লড়াই করেছেন সাকিব। সাকিবের লড়াইয়ে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ১৬৯ রান করে। সাকিব করেন ৬৩ রান। টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ শেষ। সফরে এখন বাকি টি-২০ সিরিজ। ২৬ ও ২৯ অক্টোবর দুই টি-২০ ম্যাচ। এখন ম্যাচ দুটির অপেক্ষায় বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা।