শনিবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

রোগীর মৃত্যু ডাক্তার নার্সের মারপিটে

জয়পুরহাট প্রতিনিধি

জয়পুরহাটের অসুস্থ মাহিলা বেওয়াকে (৮০) ভর্তি করা হয়েছিল বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। নাতিসহ তার অপরাধ— তিনি তার শরীরে রক্ত দেওয়া বন্ধ হয়ে গেলে নিডলটি খুলে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। আর এতে ক্রুদ্ধ হয়ে কর্তব্যরত ইন্টার্নি ডাক্তার, নার্সসহ তাদের সহযোগীরা তাদের বেধড়ক মারপিট করে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়। এরপর মাহিলার মৃত্যু ঘটে। এ ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে। জানা গেছে, ইন্টার্নি ডাক্তার ও নার্সদের মারপিটে শুধু রোগীই মারা যাননি, তার সঙ্গে আসা নাতি ও ছেলে রক্তাক্ত জখম হয়ে জয়পুরহাটের হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। মারপিটের শিকার হওয়া জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে গুরুতর আহত নাতি রুম্মান রহমান শান্ত (২০) জানান, জয়পুরহাট সদর উপজেলার পুরানাপৈল ইউনিয়নের তুলাট গ্রামের গাজিউর হক তার মা মাহিলা বেওয়াকে অসুস্থ অবস্থায় জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করেন। ২৩ অক্টোবর তাকে বগুড়ার শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার চিকিৎসা চলছিল। বৃহস্পতিবার রাতে চিকিৎসাধীন মাহিলা বেওয়াকে রক্ত দেওয়া হচ্ছিল। রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে রোগীর দেহে রক্ত দেওয়া শেষ হলে রোগী এবং তার নাতি কর্তব্যরত নার্সকে রক্তের সঞ্চালন লাইনটি বন্ধ করে দিতে বলেন। ২০-২৫ মিনিট পার হয়ে গেলেও নিডলটি না খোলায় ওই লাইনে শরীর থেকে রক্ত বের হতে শুরু করলে শান্ত দৌড়ে গিয়ে কর্তব্যরত ডাক্তার ও নার্সকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন। তখন ডাক্তার-নার্সরা শান্তকে কলার ধরে টানতে টানতে একটি ঘরে নিয়ে বেদম মারপিট করতে থাকেন। এ সময় রুম্মানের পিতা গাজিউল হক সেখানে গেলে তাকেও তারা একটি ঘরে আটকে মারপিট করেন। এতে তারা দুজনই রক্তাক্ত জখম হন। একইভাবে রোগীকেও মারপিট করা হয়। এ সময় ডাক্তারদের ডাকে বাইরে থেকে তাদের লোকজন এসেও মারপিটে অংশ নেয়। পরে পুলিশ খবর পেয়ে সেখানে আসে, তবে তারা কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে ফিরে যায়। রাত আনুমানিক ২টার দিকে ডাক্তাররা রক্তাক্ত রুম্মান ও তার পিতাকে হাসপাতাল থেকে বের করে একটি সিএনজি ভাড়া করে তাদের জয়পুরহাট পাঠিয়ে দেয়। পাশপাশি রুম্মানের দাদি মাহিলা বেওয়াকে ছাড়পত্র দিয়ে বের করে দেওয়া হয়। এরপর জয়পুরহাটে ফেরার পথেই তিনি মারা যান।

সর্বশেষ খবর