বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
সৌদি নাগরিক খালাফ হত্যা

একজনের ফাঁসি যাবজ্জীবন বহাল তিনজনের

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকায় সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তা খালাফ আল আলী হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড ও তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে হাই কোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। গতকাল রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের আপিল খারিজ করে দায়িত্বরত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের  তিন বিচারপতির বেঞ্চ এ রায় দেয়। ফলে হাই কোর্টে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সাইফুল ইসলাম মামুনের সঙ্গে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আল আমীন, আকবর আলী ও মো. রফিকুল ইসলামের পাশাপাশি সেলিম চৌধুরীর খালাসও বহাল রয়েছে। বাগেরহাট জেলার শরণখোলার মধ্য খোন্তাকাটা গ্রামের মৃত আবদুল মোতালেব হাওলাদারের ছেলে সাইফুল ইসলাম মামুন। ফারুক ঘরামীর ছেলে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আল আমীনের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার হাজিখালী গ্রামে। আকবর আলীর বাড়ি শরীয়তপুর জেলার ডামুড্যা উপজেলার গোয়ালকোয়া গ্রামে। রফিকুল ইসলামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার কোতোয়ালি থানার নাটকঘর বাইলেন। তার বাবার নাম আবদুস সালাম। আসামিরা কারাগারে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও আসামি পক্ষে আইনজীবী সিকদার মকবুল হক শুনানি করেন। মঙ্গলবার এ মামলায় আপিলের পুনঃশুনানি শেষে রায়ের দিন ধার্য হয়। আপিল বিভাগের গতকালের কার্যতালিকায় মামলাটি রায়ের জন্য এক নম্বর ক্রমিকে ছিল। এর আগে ২০ আগস্ট শুনানি শেষে ১০ অক্টোবর এ মামলায় রায়ের জন্য দিন ধার্য করে আপিল বিভাগের একটি বেঞ্চ। কিন্তু ১০ অক্টোবর আদালত এ মামলায় আসামি পক্ষের আপিলের ওপর পুনরায় শুনানির কথা জানান। একই সঙ্গে পুনঃশুনানির জন্য ১৭ অক্টোবর দিন ধার্য করে আপিল বিভাগ। পরে ২৪ অক্টোবর শুনানি পিছিয়ে ৩১ অক্টোবর নতুন দিন ধার্য করা হয়। সে অনুযায়ী মঙ্গলবার এ মামলায় শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

২০১২ সালের ৫ মার্চ মধ্যরাতে রাজধানীর গুলশান কূটনৈতিক এলাকার বাসার সামনে গুলিবিদ্ধ হন খালাফ আল আলী। ৬ মার্চ ভোরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় গুলশান থানা পুলিশ একটি মামলা করে। ওই বছরের ৪ জুন দক্ষিণখান থানার গাওয়াইর এলাকা থেকে সাইফুল ইসলাম মামুন, আকবর আলী ও আল আমীন নামে তিনজনকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশের একটি টিম। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি রিভলবার জব্দ করা হয়। অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে ওই দিনই তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা করা হয়। পরে আসামি মামুন ও আল আমীন আদালতে স্বীকার করেন, ২০১২ সালের ৫ মার্চ দিবাগত রাতে ছিনতাই করতে বাধা দেওয়ায় তারা খালাফ আল আলীকে এ অস্ত্র দিয়ে গুলি করে হত্যা করেন। এরপর আসামি মামুন, আল আমীন, আকবর আলী ও রফিকুল ইসলামকে খালাফ হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। তদন্ত শেষে গোয়েন্দা পুলিশ ২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। সেখানে গ্রেফতার ওই চারজনের সঙ্গে সেলিম চৌধুরী নামে পলাতক আরেকজনকে আসামি করা হয়। ৩১ অক্টোবর পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে ঢাকার ৪ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। ওই বছরের ৩০ ডিসেম্বর পাঁচ আসামিকেই ফাঁসির আদেশ দেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মোতাহার হোসেন। আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি করে ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর হাই কোর্ট সাইফুলের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে। আল আমীন, আকবর আলী ও রফিকুল ইসলামকে সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন এবং পলাতক সেলিম চৌধুরীকে খালাস দেয় হাই কোর্ট। হাই কোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।

সর্বশেষ খবর