বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বর্তমান প্রশাসনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

বর্তমান প্রশাসনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়

বর্তমান প্রশাসন ও সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক মন্ত্রী ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. মীজানুর রহমান শেলী। তিনি বলেন, বর্তমান প্রশাসনের সব জায়গায় দলীয়করণ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সরকার ও সামরিক শাসনামলেও এত দলীয়করণ প্রশাসনে ছিল না। তাই সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দলীয় প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ প্রশাসন দরকার। গতকাল বিকালে ধানমন্ডিতে সেন্টার  ফর ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ, বাংলাদেশের (সিডিআরবি) কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। সিডিআরবি চেয়ারম্যান ড. শেলী বলেন, গণতান্ত্রিক বিরোধী দলগুলোকে তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করার সুযোগ না দিলে দেশে একদিন মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ঘটতে পারে। এজন্য দেশের দুই বৃহৎ রাজনৈতিক দলের মধ্যে সমঝোতা খুবই প্রয়োজন। তিনি বলেন, যদিও বর্তমান সময়ে সমঝোতা অসম্ভব মনে হচ্ছে কিন্তু আসলে অসম্ভব নয়। আর যদি সমঝোতা না হয়, হিংসা-হানাহানি চলতে থাকে তাহলে ভবিষ্যতে বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপ ঘটতে পারে। তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে কেউ ক্ষমতায় একবার এলে সে আর ক্ষমতা ছাড়তে চায় না। কারণ, ক্ষমতায় থেকে তারা এমন সব অপকর্ম করে পরে মনে করে ক্ষমতা ছাড়লে তারা জনগণের রোষের মধ্যে পড়বে। তাই এ বিষয়েও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা প্রয়োজন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে ছদ্মবেশী একদলীয় শাসন চলছে। আমাদের দুর্ভাগ্য, বিএনপি একদলীয় শাসনের বিরুদ্ধে শক্তভাবে প্রতিবাদ করতে পারছে না। সরকারের অত্যাচার, নির্যাতন, গুমের বিরুদ্ধে বিএনপি প্রতিবাদ করছে কিন্তু সমাজে সেই প্রতিবাদের প্রভাব পড়ছে না। এটাই বিএনপির ব্যর্থতা। এক প্রশ্নের জবাবে ড. শেলী বলেন, গণতন্ত্র আনতে গিয়ে আমরা বার বার গণতন্ত্রকে বিকৃত ও কলুষিত করেছি। দেশে গণতন্ত্রের নামে স্বৈরতন্ত্র, কেন্দ্রীভূত ও ব্যক্তিগত শাসন চলছে। আমরা নেত্রীকেন্দ্রিক রাজনীতি করছি। এ অভিজ্ঞতাই আমাদের এখানে ২৭ বছর যাবৎ চলছে। আমরা যে কারণে প্রেসিডেনশিয়াল পদ্ধতিকে বিসর্জন দিলাম এখন কিন্তু সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে প্রাইম মিনিস্ট্রারিয়াল গণতন্ত্র চলছে। কারণ, আমাদের প্রধানমন্ত্রী একই সঙ্গে দলের প্রধান, সংসদেরও নেতা আবার ক্যাবিনেটেরও প্রধান। মানে, একের মধ্যে তিন। তিনি বলেন, মানুষ নানা ধরনের প্রতিবাদ দেখতে দেখতে এখন ভয় পায়। পরিবর্তনের নাম শুনলেই ভয় পেয়ে যায়। মানুষ ভাবে বাংলাদেশ তো আবার ইরাক, সিরিয়া হবে না? স্বাভাবিক পরিবর্তন হলে তো ভালো কিন্তু অস্বাভাবিক পরিবর্তনের প্রভাব অত্যন্ত ভয়ঙ্কর হতে পারে। ক্ষমতা ছাড়ার কোনো সম্ভাবনা সহসাই সরকারের নেই। এজন্য জাতীয় সংলাপ প্রয়োজন। কেউ যাতে ক্ষমতা ছাড়ার পর সরকারের প্রতি প্রতিশোধ না নেয় এজন্যই এ সংলাপ প্রয়োজন। এজন্য একটা প্রতিরোধব্যবস্থা করা দরকার। এজন্যই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা প্রয়োজন।

সর্বশেষ খবর