শনিবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাংলাদেশে আরও জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় অস্ট্রেলিয়া

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

বাংলাদেশে ফের জঙ্গি হামলার আশঙ্কা করছে অস্ট্রেলিয়া। ‘নির্ভরযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে’ পশ্চিমা দুনিয়ার স্বার্থসংশ্লিষ্ট যে কোনো স্থাপনার ওপর হামলার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে দেশটি। বড় ধরনের হামলার টার্গেটে রয়েছে সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা, আদালত ও বিদেশি দূতাবাস। উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশে তাদের নাগরিকদের চলাফেরায়ও সতর্কতা জারি করেছে অস্ট্রেলীয় সরকার।

গতকাল অস্ট্রেলিয়ার ডিপার্টমেন্ট অব ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ট্রেডের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হামলার ‘বড় ধরনের হুমকি’ রয়েছে। ফলে দেশটিতে থাকা অস্ট্রেলীয় নাগরিকদের নিজেদের নিরাপত্তার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। যেসব শপিং মলে বিদেশিরা নিয়মিত যাতায়াত করেন, সেগুলো যেন তারা এড়িয়ে চলেন। এ ছাড়া যারা বাংলাদেশ সফরের পরিকল্পনা করছেন, তারাও যেন বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করেন। ওয়েবসাইটে ২০১৬ সালের ১ জুলাই ঢাকার হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলা এবং চলতি বছরের মার্চে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে চেকপোস্টে আত্মঘাতী বিস্ফোরণের বিষয়টিও উল্লেখ করা  হয়েছে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে প্রায়ই গ্রেফতারের ঘটনা ঘটছে। নতুন আক্রমণে হামলাকারীদের সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তু হতে পারে সরকারি বা বাণিজ্যিক স্থাপনা, উন্মুক্ত স্থান, আদালত, বিদেশি সরকার ও তাদের বাণিজ্যিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট স্থাপনা, সামরিক বাহিনী ও পুলিশ, বিভিন্ন দেশের দূতাবাস,  হোটেল, ক্লাব, রেস্টুরেন্ট, বার, স্কুল, মার্কেট, ব্যাংক, ধর্মীয় স্থান, রাজনৈতিক সমাবেশ, সিনেমা হল, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, গণপরিবহন, বাস টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশন, পর্যটন এলাকা ও ঐতিহাসিক স্থাপনা। এরপরও যদি অস্ট্রেলিয়ার কোনো নাগরিক বাংলাদেশ সফরে আগ্রহী হন তাহলে তারা যেন নিরাপত্তার ব্যাপারে বাড়তি পদক্ষেপ নেন।

বিদেশিদের চলাচল সীমিত : নিরাপত্তার স্বার্থে গত এক সপ্তাহ ধরে ঢাকায় বিদেশিদের চলাচল সীমিত করা হয়েছে। পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, গুলশান-বারিধারার বাইরে না যাওয়ার। দূতাবাস ও হাইকমিশনের প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঢাকার জাতিসংঘ কার্যালয় সূত্রের খবর, গুলশান-১ এবং গুলশান-২ এলাকায় দুটি রেস্টুরেন্টের বাইরে অন্য কোথাও খাবার খেতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, কূটনৈতিক এলাকায় যেসব রেস্তোরাঁ জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে তারও সবখানে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নেই। রেস্তোরাঁগুলোর নিরাপত্তার বিষয়ে সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে। নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত প্রহরী, ব্যাগ স্ক্যানিং, মেটাল ডিটেক্টরের ব্যবহার, শক্তিশালী দরজা ও জরুরি বহির্গমনের পথের বিষয়টি সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। হোটেলে যেখানেই কর্মকর্তা-কর্মচারী বা পরিবারের সদস্যরা বসেন না কেন, তাদের গাড়ি পার্কিং করতে হবে যতটা সম্ভব কাছাকাছি। সর্বোচ্চ নিরাপত্তার জন্য সেখানে সশস্ত্র পুলিশের উপস্থিতির বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে জনবহুল স্থানে নৈশভোজে অংশ না নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পূর্ব ঘোষিত সময় ও তারিখে নিয়মিত কোনো স্থানে জমায়েত এড়িয়ে চলতে হবে। কোনো জমায়েতেই বেশি রাত পর্যন্ত থাকা যাবে না। রাত ১০টার মধ্যেই ঘরে ফিরতে হবে। সার্বিকভাবে নজরদারি ও সচেতনতা অবলম্বন করতেও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ওই নিরাপত্তা বার্তায়।

সর্বশেষ খবর