শনিবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

চলে গেলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলে গেলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাস

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাস (৯৩) ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গতকাল সন্ধ্যার পর বনানীর বাসভবনে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। আবদুর রহমান বিশ্বাসের মৃত্যুতে     গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আবদুর রহমান বিশ্বাসের ছেলে মিজানুর রহমান এ হাসান মনু বিশ্বাস বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, রাত ৮টা ২৭ মিনিটে বাবাকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তার আগেই বাবার মৃত্যু হয়। আজ সকাল সাড়ে ১০টায় বরিশাল জেলা স্কুল মাঠে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। আবদুর রহমান বিশ্বাসের চার ছেলে। তারা হলেন—শামসুদ্দোজা কালাম বিশ্বাস, এহসানুল কবির জামাল বিশ্বাস, মিজানুর রহমান এ হাসান মনু বিশ্বাস ও জামিরুল রহমান শিবলী বিশ্বাস। তার দুই মেয়ে আঁখি বিশ্বাস ও রোমেন বিশ্বাস রুবেল। এহসানুল কবির জামাল বিশ্বাস বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। তিনি দেশে ফিরলেই আবদুর রহমান বিশ্বাসের দাফন হবে। সে পর্যন্ত মৃতদেহ ইউনাইটেড হাসপাতালের হিমঘরে থাকবে। আবদুর রহমান বিশ্বাস ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেননের ফুফাতো বোনের স্বামী। ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব শেষ হওয়ার পর আবদুর রহমান বিশ্বাস রাজনীতি থেকেও অবসর নেন। তার আগেই তার নির্বাচনী আসন থেকে ছেলে এহতেশামুল হক নাসিম বিশ্বাস ১৯৯৬ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৮ সালের ১২ মার্চ এক বিয়ের দাওয়াতে খাবারের বিষক্রিয়ায় নাসিমের মৃত্যু হয়। বরিশাল জেলার শায়েস্তাবাদে ১৯২৬ সালের ১  সেপ্টেম্বর আবদুর রহমান বিশ্বাসের জন্ম। বরিশাল শহরেই তিনি স্কুল ও কলেজজীবন শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে ইতিহাসে স্নাতক (সম্মান) ও এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫০-এর দশকে আইন পেশায় যোগদান করেন। ১৯৬২ এবং ১৯৬৫ সালে পূর্ব পাকিস্তান আইন সভার সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করলে ওই সংসদ আবদুর রহমান বিশ্বাসকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করে। ১৯৬৫ থেকে ১৯৬৯ পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের সংসদীয় সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

 ১৯৬৭ সালে তিনি পাকিস্তান প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে জাতিসংঘের ২২তম অধিবেশনে যোগদান করেন। ১৯৭৭ সালে তিনি বরিশাল পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৯-৮০ সালে তিনি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় পাটমন্ত্রী এবং ১৯৮১-৮২ সালে বিচারপতি আবদুস সাত্তারের মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন। রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার আগে আবদুর রহমান বিশ্বাস ১৯৯১ সালের  ফেব্রুয়ারিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালের ৪ এপ্রিল তিনি জাতীয় সংসদের স্পিকার নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন এবং ১৯৯৬ সালের ৮ অক্টোবর তার  মেয়াদ শেষ হয়।

সর্বশেষ খবর