সোমবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

মানুষের অস্তিত্বই আজ বিপদগ্রস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

মানুষের অস্তিত্বই আজ বিপদগ্রস্ত

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী মনে করেন সমাজতন্ত্রের পতন হয়নি বরং পুঁজিবাদী ব্যবস্থাই এখন চরম বর্বরতা ও নৃশংসতায় গিয়ে পৌঁছেছে। তার দৌরাত্ম্যে মানব সভ্যতার সব অর্জন ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ধরিত্রী বিপন্ন হয়েছে। এমনকি মানুষের অস্তিত্বই আজ বিপদগ্রস্ত। পুঁজিবাদ মুনাফা ছাড়া অন্য কিছু বোঝে না। মুনাফার লোলুপতায় মানুষ ও প্রকৃতি উভয়কে ধ্বংস করে দিতে তার এতটুকু আটকায় না। এই ব্যবস্থাকে তাই বিদায় করা চাই এবং বিদায় হবেও। যেমন করে অতীতের দাসব্যবস্থা ও সামন্তব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে। পুঁজিবাদও তেমনিভাবেই ধ্বংস হবে। তার ধ্বংস হওয়াটা অপরিহার্য ও অনিবার্য। গতকাল পুরানা পল্টনের কমরেড মণিসিংহ সড়কের মুক্তি ভবনে ‘অক্টোবর বিপ্লব শতবর্ষ উদ্যাপন জাতীয় কমিটি’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ সব কথা বলেন সংগঠনটির আহ্বায়ক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, অক্টোবর বিপ্লব শতবর্ষ উদ্যাপনের ভিতর দিয়ে বাংলাদেশের সমাজতন্ত্রীরা একত্র হয়েছেন। সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলনরত শ্রেণি ও পেশার সংগঠনগুলোও ঐক্যবদ্ধভাবে কর্মসূচি পালন করেছে। সমাজতন্ত্রের পক্ষে একটি নবজাগরণের আভাস পাওয়া গেছে। আমরা আশা করব সমাজতন্ত্রীদের এই নৈকট্য স্থায়ী ঐক্যে পরিণত হবে। পুঁজিবাদবিরোধী সংগ্রাম নতুন বেগ ও গভীরতা পাবে। বিশ্বের সর্বত্র অক্টোবর বিপ্লবের শতবর্ষ উদ্যাপিত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর মূল তাৎপর্যটা হচ্ছে পুঁজিবাদী ব্যবস্থাকে বিদায় করে দিয়ে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে বেগবান করা। আমাদের লক্ষ্যও সেটাই। এই উদ্যাপনে আমরা যে আওয়াজটি তুলতে চাই সেটা হলো, ‘ব্যক্তিমালিকানার পৃথিবীকে বদলে সামাজিক মালিকানার বিশ্ব গড়ে তুলুন।’ সেই সঙ্গে আরেকটি আওয়াজ হবে, ‘সমাজবিপ্লবীদের ঐক্য চাই’। অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ১৯১৭ সালে অক্টোবর বিপ্লব, আগের সব অভিজ্ঞতার সারমর্ম গ্রহণ এবং বাস্তবিক জ্ঞানকে প্রয়োগ করে, একটি সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিল, সেটি টিকে ছিল ৭২ বছর। বলা হয়ে থাকে, সমাজতন্ত্রের পতন হয়েছে, আসলে যা ঘটেছে তা হলো সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা থেকে অনেকগুলো রাষ্ট্রের সরে-যাওয়া। এর কারণ বাইরে থেকে পুঁজিবাদের আক্রমণ এবং ভিতর থেকে আমলাতান্ত্রিক অন্তর্ঘাত।

ওই সংবাদ সম্মেলনে দেশবরেণ্য এই শিক্ষাবিদ আগামী ৭ নভেম্বর মহাসমাবেশ ও লাল পতাকা মিছিল কর্মসূচির কথা ঘোষণা করে বলেন, এদিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাজধানীসহ দেশের প্রায় সব এলাকা থেকেই সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসীরা যোগ দেবেন। সমাবেশ শুরু হবে বেলা আড়াইটায়। পরে বিকাল সাড়ে চারটায় লাল পতাকা মিছিল শহীদ মিনার থেকে বের হয়ে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করবে। অক্টোবর বিপ্লব শতবর্ষ উদ্যাপন জাতীয় কমিটির এই সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সমন্বয়ক হায়দার আকবর খান রনো, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় গণফ্রন্টের সমন্বয়কারী টিপু বিশ্বাস, বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, বাসদ কেন্দ্রীয় নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর