মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

টেক্সাসে গির্জায় সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ২৬

প্রতিদিন ডেস্ক

টেক্সাসে গির্জায় সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ২৬

সন্ত্রাসী হামলায় আবার কেঁপে উঠল যুক্তরাষ্ট্র। গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে ট্রাকচাপা দিয়ে আটজনকে হত্যা ও পরের দিন কলোরাডোতে ওয়ালমার্টের স্টোরে গুলি চালিয়ে তিনজন হত্যার রেশ না কাটতেই টেক্সাসে গুলির ঘটনা ঘটেছে। রবিবার টেক্সাসে একটি গির্জায় প্রার্থনারত মানুষের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি চালায় এক দুর্বৃত্ত। এতে ২৬ জন নিহত হন। টেক্সাসের উইলসন কাউন্টির সাদারল্যান্ড স্প্রিংস এলাকার ফার্স্ট ব্যাপটিস্ট চার্চে স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টায় এ হামলা হয়। পরে ওই হামলাকারীকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তিনি আত্মহত্যা করেছেন নাকি পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, টেক্সাসের ইতিহাসে গুলি চালিয়ে হত্যার সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা এটি।

নিহতদের মধ্যে পাঁচ বছরের শিশু যেমন রয়েছে, তেমনি ৭২ বছর বয়সী বৃদ্ধও রয়েছে। আহত আরও অন্তত ২০ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। টেক্সাসের জননিরাপত্তা বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক ফ্রিম্যান মার্টিন জানান, হামলাকারী শ্বেতাঙ্গ তরুণের বয়স আনুমানিক ২৬। তার নাম ডেভিন পি কেলি। অ্যাসল্ট রাইফেল হাতে নিয়ে সে গির্জার বাইরে থেকেই গুলি শুরু করে। পরে গির্জায় ঢুকে নির্বিচারে গুলি শুরু করে বলে জানান মার্টিন।

এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, কেলিকে বেলা ১১টা ২০ মিনিটে স্থানীয় গ্যাস স্টেশনে দেখা যায়। রাস্তা পার হয়ে গাড়ি থেকে বের হয়ে চার্চের দিকে গুলি ছুড়তে শুরু করে। পরে চার্চে ঢুকেও গুলি চালিয়ে যায়। চার্চে এ সময় প্রায় ৫০ জন মানুষ ছিলেন। অন্তত ২০টি গুলির শব্দ শুনেছেন বলে দাবি করেছেন চার্চের উল্টো দিকের গ্যাস স্টেশনের ক্যাশিয়ার।

ফ্রিম্যান মার্টিন জানান, একপর্যায়ে স্থানীয় এক বাসিন্দা তার নিজের রাইফেল থেকে ওই হামলাকারীকে গুলি করেন। এর ফলে হামলাকারীর হাত থেকে অস্ত্র পড়ে যায় এবং নিজের গাড়ি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। পরে পাশের গুয়াদালুপে কাউন্টির সীমান্তে ওই হামলাকারীর গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ে এবং গাড়ির ভিতরে তাকে মৃত অবস্থায় পায় পুলিশ।

পুলিশ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসি লিখেছে, গির্জার ভিতরেই মোট ২৩ জনের লাশ পাওয়া যায়। দুজন নিহত হন গির্জার বাইরে। আর হাসপাতালে আরেকজনের মৃত্যু হয়। ফার্স্ট ব্যাপটিস্ট চার্চের যাজক ফ্রাঙ্ক পোমেরয় এবিসি নিউজকে বলেছেন, গুলিতে নিহতদের মধ্যে তার ১৪ বছর বয়সী মেয়ে অ্যানাবেলও রয়েছে।

টেক্সাসে যখন এই হত্যাকাণ্ড ঘটল তখন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১২ দিনের এশিয়া সফরে জাপানে অবস্থান করছেন। এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে এক টুইটে তিনি লিখেছেন, এমন এক সময়ে এই অশুভ ঘটনা ঘটানো হয়েছে, যখন মানুষ পবিত্র স্থানে উপাসনায় রত।

মাসখানেক আগে লাস ভেগাসের একটি সংগীত উৎসবে গুলি চালিয়ে ৫৮ জনকে হত্যা করে এক অস্ত্রধারী। ওই ঘটনাকে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড বলা হচ্ছে। বিবিসি, সিএনএন।

সর্বশেষ খবর