শুক্রবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
উপকমিটি বিড়ম্বনায় দুই দল

আওয়ামী লীগে ঝুলে আছে বছর ধরে

রফিকুল ইসলাম রনি

গত এক বছরেও ঘোষণা করা হয়নি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটি। কবে হবে এমন কোনো তথ্যও নেই কারও কাছে। ঝুলেই গেল এ কমিটি গঠন প্রক্রিয়া।

আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ২৫ অনুচ্ছেদের ‘চ’ ধারায় (বিভাগীয় উপকমিটি গঠন) বলা হয়েছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রত্যেক সম্পাদকীয় বিভাগের কার্যক্রম অধিকতর গতিশীল ও সমন্বিত করার লক্ষ্যে প্রতিটি সম্পাদকীয় বিভাগে একটি করে উপকমিটি গঠন করবে। উক্ত উপকমিটি একজন চেয়ারম্যান, একজন সম্পাদক, অনূর্ধ্ব পাঁচজন সহসম্পাদক, প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিশেষজ্ঞ সদস্য, সংশ্লিষ্ট সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং নির্দিষ্টসংখ্যক সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হবে। সূত্রমতে, আওয়ামী লীগের গত কেন্দ্রীয় কমিটি ছিল ৭৩ সদস্যের। কিন্তু ওই কমিটির বিভিন্ন উপকমিটিতে সহসম্পাদকের সংখ্যা ছিল হাজারেরও বেশি। বিশাল সংখ্যক সহসম্পাদক নিয়ে দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামের অনেকের সমালোচনা ছিল। এই পদধারীদের নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে ছিল অসন্তোষও। এবার সহসম্পাদকদের সংখ্যায় লাগাম টানা হবে। এ সংখ্যা ৩০ থেকে ৫০ জনের ওপরেও হতে পারে। উপকমিটির সহসম্পাদক ও সাধারণ সদস্য পদ প্রত্যাশীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া শেষ করতে সময় নেওয়া হচ্ছে বলে দলের নীতিনির্ধারকরা জানিয়েছেন। ফলে পদপ্রত্যাশীদের আরও অপেক্ষা করতে হবে।

দলের শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, এবার কেন্দ্রীয় উপকমিটিকে সুশৃঙ্খল করে সাজানো হচ্ছে। বিগত সময়ে দায়িত্বে থাকা নেতাদের যাদের বিরুদ্ধে সামান্য অভিযোগও পাওয়া গেছে, তাদের কমিটিতে রাখা হবে না। এবার সহসম্পাদক পদে বিষয়ভিত্তিক কর্মী খোঁজা হচ্ছে। কারণ প্রত্যেকটি উপকমিটি আওয়ামী লীগের গবেষণা সেল।

২০১২ সালের কাউন্সিলের পর ৭৩ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে উপ-কমিটির সহসম্পাদক হিসেবে ৬৬ জনের নাম ঘোষণা হয়েছিল। এরপর কয়েক ধাপে এই সংখ্যা বেড়ে কততে পৌঁছেছিল তার কোনো হিসাব ছিল না দলের কাছে। ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে যারাই যাতায়াত করতেন তারা প্রায় সবাই নিজেদেরকে সহসম্পাদক দাবি করতেন। এবার নতুন কমিটি হওয়ার পর এখনো নবীন নেতাদের কাঙ্ক্ষিত সেই সহসম্পাদকের নাম ঘোষণা হয়নি। তবে বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সম্পাদকরা কমিটির খসড়া তালিকা করে দলীয় সভানেত্রী ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে জমা দিয়েছেন। গত ২৮ অক্টোবর নতুন প্রেসিডিয়াম ও সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকের পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, সহসম্পাদকের পদে সংখ্যা এবার ১০০-তে সীমিত রাখা হবে। সহসম্পাদক ১০০-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও সদস্য সংখা অনেক হবে বলে জানা গেছে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে কমিটি ঘোষণার একটি গুঞ্জন শুরু হওয়ায় পদপ্রত্যাশীরা ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে যাওয়া-আসা বাড়িয়ে দিয়েছেন।  আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, উপকমিটি গঠন করা হবে সম্পাদকীয় বিভাগ ভিত্তিক। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা তালিকা করে দফতরে জমা দিয়েছেন। আমরা দলীয় সভানেত্রী ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে তা জমা দিয়েছি। যাচাই-বাছাই শেষে সভানেত্রী ও সাধারণ সম্পাদক অনুমোদন দিলেই ঘোষণা করা হবে। দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, উপকমিটি গঠনের কাজ প্রায় শেষের দিকে। পদপ্রত্যাশী বেশি থাকায় যাচাই-বাছাই করতে কিছুটা সময় লাগছে। সে কারণে বিলম্ব হচ্ছে। তবে খুব শিগগিরই ঘোষণা দেওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করি।

সর্বশেষ খবর