বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেছেন, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক দুর্বৃত্তরা এখন ব্যাংকিং খাতে ঢুকে পড়েছে। এরাই নিয়ন্ত্রণ করছে দেশের আর্থিক খাত। এটা দেশের অর্থনীতির জন্য সংকট সৃষ্টি করছে। গতকাল রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত লোন টেকওভার ইন বাংলাদেশ: ইজ ইট এ হেলথদি প্র্যাকটিসেস শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ সোহেল মোস্তফা। চার সদস্যের গবেষক দলে আরও ছিলেন বিআইবিএমের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. মহব্বত হোসেন, বিআইবিএমের প্রভাষক তোফায়েল আহমেদ এবং রাহাত বানু। ইব্রাহিম খালেদ বলেন, পুরো ব্যাংকিং খাত দুর্বৃত্তরা নিয়ন্ত্রণ করছে। এখানে একজন ভালো ব্যাংকার টিকে থাকতে পারছেন না। একটি ব্যাংকে গত তিন বছরে তিনজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। গত নয় মাস যাবৎ ওই ব্যাংকে কোনো ব্যবস্থাপনা পরিচালক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন, দুই থেকে চার লাখ টাকা দিলে এমডি পাওয়া যাবে। কিন্তু ব্যাংক চালানোর মতো যোগ্য লোক পাবেন না। ব্যাংকার ভালো হলে নীতিমালার দরকার নেই।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের ৯০ শতাংশ ব্যাংকারের অভিমত, হস্তান্তরিত ঋণ (কেনাবেচা) ব্যাংকিং খাতে ঝুঁকি বাড়াবে। ৪০ শতাংশ ব্যাংকার মনে করেন, হস্তান্তরিত ঋণ ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাতে ঝুঁকি তৈরি করেছে। আর ৫০ শতাংশ ব্যাংকারের অভিমত হলো, হস্তান্তরিত ঋণ নিকট-ভবিষ্যতে ব্যাংকিং খাতে ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এতে আরও বলা হয়, এক ব্যাংকের গ্রাহকের ঋণ অন্য ব্যাংক ক্রয় বা টেকওভার (ঋণ হস্তান্তর) হচ্ছে। ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত চার হাজার ৩৩৯ কোটি টাকার ঋণ হস্তান্তরের ঘটনা ঘটছে। এটিকে কেন্দ্র করে ব্যাংকগুলোর মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে। অনেকাংশে গ্রাহকের সব ধরনের তথ্য সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই না করে ঋণ দেওয়া হয়, যা পরবর্তীতে খেলাপি হয়ে পড়ছে।