শুক্রবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর অব্যবহৃত গাড়িতেও ব্যয়

অব্যবহৃত ২৫ দামি গাড়ির বিপরীতে জ্বালানি বরাদ্দ যাচ্ছে ব্যাংক হিসাবে

নিজামুল হক বিপুল

সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের জন্য কেনা কোটি টাকা মূল্যের সেই গাড়ির অর্ধেকেরও বেশি এখন অব্যবহৃত পড়ে আছে। সচিবালয় লিঙ্ক রোডের সরকারি পরিবহন পুলে প্রায় দেড় বছর কাভারে বন্দী হয়ে আছে।

চলতি বছরের মে মাসে ‘পড়ে আছে মন্ত্রীদের ৪০ গাড়ি’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনের পর কয়েকটি গাড়ি ব্যবহৃত হলেও এখন পর্যন্ত অন্তত ২৫ গাড়ি অব্যবহৃতই আছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এলে পুরনো গাড়ির বদলে নতুন গাড়ি দেওয়ার জন্য মন্ত্রিসভার সদস্যরা দাবি জানান। মন্ত্রিসভার সদস্যদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাইব্রিড সিডান কার কেনার অনুমোদন দেন। এরপর সরকার ২০১৬ সালে জুন মাসে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে জাপান থেকে ৫০টি হাইব্রিড ক্যামরি সিডন কার কেনে। বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ক্রয় করা গাড়ি জুলাই মাসেই দেশে আসে। এরপর গাড়িগুলোর রেজিস্ট্রেশন হয়। নম্বর পড়ে ঢাকা মেট্রো ভ-১১-১৮০১ থেকে ১৮৫০ পর্যন্ত। রেজিস্ট্রেশন হলেও গাড়িগুলোর অন্তত ৪০টি পরিবহন পুলেই পড়ে থাকে। মে মাসে এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশের পর বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী গাড়ি ব্যবহার শুরু করেন। কিন্তু এ সংখ্যা ২৫ জনের বেশি নয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। সূত্র জানায়, এখনো অন্তত ২৫টির মতো গাড়ি পারিবহন পুলে স্থির বসে আছে। এগুলো শুধু ধোয়ামোছা করা হয় মাঝেমধ্যে। গত প্রায় দেড় বছরেও এই গাড়িগুলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা ব্যবহার করেননি। ফলে এগুলোর যন্ত্রপাতি ধীরে ধীরে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা এসব গাড়ি ব্যবহার না করলেও গাড়ির বিপরীতে বরাদ্দ জ্বালানির টাকা চলে যাচ্ছে তাদের বেতনের সঙ্গে। তারা ব্যবহার করছেন বিভিন্ন দফতর, অধিদফতর ও প্রকল্পের গাড়ি। নতুন এসব গাড়ি আসার পর শুরু থেকেই সরকারের হাতে গোনা কয়েকজন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী তাদের নামে বরাদ্দ গাড়ি নিয়মিত ব্যবহার করছেন। আর বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর আরও কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী তাদের নামে বরাদ্দ গাড়ি নিয়মিত ব্যবহার করছেন। সূত্র জানায়, প্রতিটি গাড়ির জন্য দৈনিক ১৮ লিটার জ্বালানি বা অকটেন বরাদ্দ। সেই হিসাবে প্রতিটি গাড়ি বাবদ ৪৮ হাজার ৬০ টাকা (লিটার ৮৯ টাকা ী ১৮ ী ৩০) মাস শেষে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বেতনের সঙ্গেই তাদের ব্যাংক হিসাবে জমা হচ্ছে। তবে এ টাকায় আর তেল কেনা হয় না। প্রকল্পের গাড়ি ব্যবহারের কারণে তেল তো প্রকল্পই কিনে দিচ্ছে। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশেই এত দামি ও বিলাসবহুল গাড়ি মন্ত্রীদের জন্য দেওয়া হয় না।

সর্বশেষ খবর