শনিবার, ৬ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
প র্য বে ক্ষ ণ

মাননীয় মন্ত্রী, রক্ত দেওয়ার দরকার নেই পারলে কাজ করুন

নঈম নিজাম

মাননীয় মন্ত্রী, রক্ত দেওয়ার দরকার নেই পারলে কাজ করুন

মাননীয় বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসকে লাভজনক করে তোলার জন্য আপনার রক্ত দেওয়ার দরকার নেই। কোনো প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক করে তুলতে এবং এগিয়ে নিতে রক্তের দরকার হয় না। দরকার দক্ষ ব্যবস্থাপনার; দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার। রাজপথে বিরোধী দল রক্ত দিয়ে থাকে। সরকারি দল দেশের উন্নয়নে কাজ করে। একজন মাঠের নেতা হিসেবে তেজস্বিতা, সংকল্পদৃঢ়তা ও কর্তব্যনিষ্ঠার জন্য আপনার সুনাম আছে। এখন সরকারের মন্ত্রী হিসেবে দক্ষতা দেখানোর সময়। তাই অযথা বেশি কথা বলা কাম্য নয়। বেশি কথা বলা বন্ধ করুন। বাংলাদেশ বিমান ও বিমানবন্দরের সমস্যা বোঝার জন্য পাহাড়সম উচ্চতার তথ্য-জ্ঞানের প্রয়োজন হয় না। পত্রপত্রিকা পড়লেই ওসব আপনার জানা হয়ে যাবে। বাংলাদেশ বিমান আমাদের ঐতিহ্যবাহী একটি প্রতিষ্ঠান। অথচ মাত্রাধিক লোকবলের ভার, সিবিএর নামে বাড়াবাড়ি, দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও কর্মীর অভাব, অভ্যন্তরীণ লুটপাট ও অনিয়ম প্রতিষ্ঠানটিকে ডুবিয়েছে। দিল্লিতে বিমানের এয়ারক্রাফট ওঠা-নামা না করলেও ওই রুটের জন্য লোকবল কাজ করে চলেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিমানকর্মীরা কী কাজ করছেন, কেন করছেন কেউ জানে না। বিমানের সময়সূচি নির্ভুল রাখার জন্য কাউকে বিশেষজ্ঞ না হলেও চলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ উত্তীর্ণ দুজনকে এনে বসিয়ে দিন। তাদের বলুন, তোমরা ‘রিজেন্ট এয়ার’ ও ‘ইউএস বাংলা’ কীভাবে সময়সূচি রক্ষা করে আকাশে উড়ছে আর মাটিতে নামছে তা দেখে এসে কাজ কর। তাদের কাজে কেউ বাধা দিতে পারবে না। বাধা দিলে ব্যবস্থা নিন। অকারণে যারা অখ্যাত-অজ্ঞাত কোম্পানি থেকে উড়োজাহাজ লিজ এনে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থের ক্ষতি করেছে তাদের বিচার করুন। বন্ধ করুন টিকিট নিয়ে অনিয়ম। বিমান স্টাফদের ফ্রি টিকিট প্রথা বাতিল করে দিন। অদক্ষ, অপদার্থ, কর্মবিমুখ ও বেদরকারি লোকজনকে বিশেষ গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে বিদায় করুন।শাহজালাল বিমানবন্দরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতেই হবে। দ্রুত শুরু করুন থার্ড টার্মিনালের কাজ। বিমানবন্দর থেকে প্রাইভেট হেলিকপ্টার রাখার জায়গা সরিয়ে নিন। মশা-মাছি ও ইঁদুর-বিড়াল নির্মূল করুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে। সেখানে মানুষকে যারা হয়রান করছে তাদের শায়েস্তা করুন। লাগেজ দ্রুত পাওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করুন। প্রয়োজনে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্ব বিমানের হাত থেকে নিয়ে বিদেশি কোনো দক্ষ প্রতিষ্ঠানকে দিন। একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর যেভাবে নিষ্কলুষ, শৃঙ্খলপূর্ণ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে সেভাবে থাকার জন্য কড়া পদক্ষেপ নিন। শাহজালাল বিমানবন্দরের প্রবেশ ও প্রস্থানের সড়ক নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। খুব বেশি খরচ পড়বে না। আলাদা ওভারব্রিজ করে গাড়ি ঢোকার ও বের হওয়ার ব্যবস্থা করে দিন। দেখবেন দীর্ঘদিনের যানজট শেষ। এ কাজ সম্পন্ন করতে সময়ও বেশি লাগবে না। দরকার সিদ্ধান্ত। কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাজ শেষ করতে হবে। পর্যটননগরী গড়তে হলে প্রথমেই দরকার বিমানবন্দর। অন্য বিমানবন্দরগুলোর বিষয়েও ভাবনার সময় এসেছে। দক্ষতা, ক্ষিপ্রতা ও বাস্তবতার নিরিখে সিদ্ধান্ত নিলেই প্রতিষ্ঠান এগিয়ে যায়। তাই বলি, অযথা মাঠের রাজনীতির বক্তৃতা দেওয়ার দরকার কী! প্রয়োজন তো সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও তার প্রতিকার।

সর্বশেষ খবর