রাজনৈতিক দল থেকে পদত্যাগ বা দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার কারণে সংসদে আসন শূন্য হওয়া সংক্রান্ত সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটে বিভক্ত আদেশ দিয়েছে হাই কোর্ট বেঞ্চ। গতকাল বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী এবং বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। আইনজীবীরা জানান, সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ৭০ অনুচ্ছেদের বৈধতা প্রশ্নে রুল জারি করলেও কনিষ্ঠ বিচারপতি রিট খারিজ করেন। এখন বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে যাবে। তিনি অন্য একটি বেঞ্চে রিট আবেদনটি পাঠাবেন, সেই বেঞ্চে এ রিটের নিষ্পত্তি হবে। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু। রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. ইউনুস আলী আকন্দ। গত বছরের ১৭ এপ্রিল সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে এই রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ। রিটের পক্ষে তার যুক্তি, একজন সংসদ সদস্য জনগণের প্রতিনিধি। কিন্তু সংসদে দলের বাইরে তার নিজস্ব মত দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হচ্ছে ৭০ অনুচ্ছেদ। কারণ দলের সিদ্ধান্তের বাইলে গেলে তার সংসদ সদস্য পদ থাকছে না এবং পরবর্তী নির্বাচনের জন্য অযোগ্য ঘোষিত হবেন। রিট আবেদনে বলা হয়, এটি অগণতান্ত্রিক এবং সংবিধানের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সংসদ সচিবালয়ের সচিব ও আইন সচিবকে বিবাদী করা হয়। উল্লেখ্য, ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ের পর্যবেক্ষণে ৭০ অনুচ্ছেদের বিষয়টি এসেছে। সেখানে বলা হয়, এই অনুচ্ছেদ সংসদ সদস্যদের বেদনাহত এবং অসঙ্গতভাবে তাদের অধিকারকে শৃঙ্খলিত করেছে। তাই সংসদের কোনো ইস্যুতেই তারা দলীয় অবস্থানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারেন না। এই অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্যের চেতনা হলো সংসদের নির্বাচিত সদস্যরা তাদের মনোনীত করা দলের প্রতি আনুগত্য বজায় রাখবেন। আসলে তারা তাদের দলের উচ্চপর্যায়ের হাতে জিম্মি।
