মঙ্গলবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সরকারকেই করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সরকারকেই করতে হবে

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, দেশে ‘জবলেস গ্রোথ’ হচ্ছে। তরুণদের বেকারত্বের হার বাড়ছেই। প্রশ্নফাঁস মহামারী আকার ধারণ করেছে। গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বেড়েছে। সরকারের কুক্ষিগত হয়ে গেছে বিচারব্যবস্থা। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। নাগরিক ঐক্য ‘সরকারের চার বছর ও নির্বাচনের বছর’ শীর্ষক এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, প্রধানমন্ত্রী যদি সত্যিই চান নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত সব দলের অংশগ্রহণে আগামী নির্বাচন হোক, তাহলে সব দলের জন্য ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি করার মূল দায়িত্ব তাঁকেই নিতে হবে। তিনি বলেন, দেশে সংসদ বলবৎ রেখে কোনোভাবেই আরেকটা সংসদ নির্বাচন হতে পারে না। বিদ্যমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক এবং গ্রহণযোগ্য হবে না। তাই এসব ব্যাপারে স্পষ্ট রূপরেখা প্রধানমন্ত্রীকেই দিতে হবে। সরকারের চার বছর পূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বিভিন্ন অংশের সমালোচনা করে নাগরিক ঐক্য নেতা বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে সব সময়ই দেশের জিডিপি গ্রোথ-কে খুব জোর দিয়ে সামনে আনার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এই গ্রোথের পেছনে সরকারের কোনো ভূমিকা নেই। দেশের কৃষক, পোশাক শ্রমিক আর প্রবাসী শ্রমিকের শ্রমে-ঘামে এই দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি হচ্ছে। বরং সরকার এত দুর্নীতিপরায়ণ না হলে এবং ন্যূনতম সুশাসন নিশ্চিত করতে পারলে এই গ্রোথ ডাবল ডিজিটে যেত। তিনি বলেন, দেশে দারিদ্র্য হ্রাসের হার এই সরকারের আমলে কমেছে। দেশের সাধারণ মানুষের শ্রমে-ঘামে দেশের যে উন্নয়ন হয়েছে, সেটাও দেশে থাকছে না। প্রতি বছর গড়ে ৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি পাচার হচ্ছে দেশ থেকে। কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নামে মানুষের পকেট কাটা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের ৯ বছরে আট দফায় বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই দেশে ইতিপূর্বে চর-ভূমি দখলের কথা আমরা শুনেছি, কিন্তু ব্যাংক দখলের কথা আমরা জানতে পারি গত চার বছরে। ব্যাংকে পরিবারতন্ত্র কায়েম হচ্ছে। গত চার বছরে শিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারের ‘বড়’ অর্জন হলো প্রশ্নফাঁসের রেকর্ড। ২০০৯ সালে এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই প্রশ্নফাঁস রোগের শুরু হয়। গত বছর প্রথম-দ্বিতীয় শ্রেণির প্রশ্নফাঁস হওয়ার মতো অবিশ্বাস্য ঘটনা আমরা দেখেছি। সরকারের গত চার বছর প্রায় সব ধর্ষণের সঙ্গেই সরকারি দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা কোনো না কোনোভাবে জড়িত। এ সরকারের আমলে গুম হওয়া ব্যক্তিদের প্রায় প্রত্যেকেই বিরোধী দলের সদস্য কিংবা কোনো না কোনোভাবে সরকারের সমালোচক। মান্না বলেন, চালের মূল্যবৃদ্ধির কারণে পাঁচ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে। মেগা প্রকল্পের নামে মেগা লুটপাট হচ্ছে। জনগণ এখন জানে, এই দেশে রাজপথ, রেলপথ, ফ্লাইওভার তৈরিতে কিলোমিটার প্রতি ব্যয় পৃথিবীতে সর্বোচ্চ এবং আমাদের আশপাশের দেশের তুলনায় তিন থেকে চার গুণ।

সর্বশেষ খবর