বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি পিছিয়ে আগামী ৪ মার্চ ঠিক করেছে আদালত। গতকাল দুই আসামির পক্ষে হাই কোর্টের স্থগিতাদেশ থাকায় ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন নতুন দিন ঠিক করে দেন। এর আগে গত ৪ জানুয়ারি গ্যাটকো দুর্নীতি মামলাসহ ১৪টি মামলা বিচার কাজ পরিচালনার জন্য পুরান ঢাকার বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী এজলাসে স্থানান্তর করে গেজেট প্রকাশ করে আইন মন্ত্রণালয়। এই এজলাসেই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচার চলছে। ব্যক্তিগত হাজিরা মওকুফ হওয়ায় গতকাল খালেদা জিয়ার পক্ষে হাজিরা দেন তার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া। আদেশের পর আসামি পক্ষের আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ সাংবাদিকদের জানান, আসামি তানভীর আহমেদ এবং গালিব হোসেনের পক্ষে হাই কোর্টের স্থগিতাদেশ থাকায় শুনানি করা যাচ্ছে না। ইতিমধ্যে সাবেক নৌমন্ত্রী কর্নেল আকবর হোসেনের ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মনের স্থগিতাদেশ খারিজ করেছে উচ্চ আদালত। হাই কোর্ট থেকে এ আদালতে আসার পর মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন পড়ে ২০১৬ সালের ২৩ অক্টোবর, গত বছরের ৮ জানুয়ারি, ৫ ফেব্রুয়ারি, ৫ মার্চ, ৯ এপ্রিল, ১৮ জুন, ২৩ জুলাই, ২০ আগস্ট, ২৪ সেপ্টেম্বর, ৫ নভেম্বর এবং সবশেষ ১৭ ডিসেম্বর। কিন্তু সব তারিখেই শুনানি পিছিয়ে যায়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর তেজগাঁও থানায় গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা দায়ের করেন দুদকের উপপরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী। এই মামলা হওয়ার পরদিনই খালেদা ও কোকোকে গ্রেফতার করা হয়। ওই বছর ১৮ সেপ্টেম্বর মামলাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয় জরুরি ক্ষমতা আইনে। পরের বছর ১৩ মে খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। মামলায় অভিযোগ করা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোকে ঢাকার কমলাপুর আইসিডি ও চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পাইয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার ক্ষতি করেছেন। এ মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে খালেদার রিট আবেদনে সাত বছর আগে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। সে সময় জারি করা রুল খারিজ করে গতবছর ৫ আগস্ট রায় দেয় বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ও বিচারপতি আবদুর রবের বেঞ্চ। মামলার স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়ার পাশাপাশি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয় ওই রায়ে। সে অনুযায়ী গত ৫ এপ্রিল ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান খালেদা জিয়া।