সোমবার, ২২ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

ন্যাম ভবনে এমপি পুত্রের ঝুলন্ত লাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ন্যাম ভবনে এমপি পুত্রের ঝুলন্ত লাশ

রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ের সংসদ সদস্য ভবন (ন্যাম ভবন) থেকে সাতক্ষীরা-১ আসনের এমপি মুস্তফা লুত্ফুল্লাহের ছেলে অনিক আজিজ স্বাক্ষরের (২৭) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সকালে ৫ নম্বর ন্যাম ভবনের ৬০৪ নম্বর          ফ্ল্যাট থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য তার লাশ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। অনিক আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ, ময়নাতদন্তকারী চিকিত্সক ও স্বজনরা। তবে কেউ আত্মহত্যার কারণ জানাতে পারেনি। শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গণেশ গোপাল বিশ্বাস বলেন, খবর পেয়ে সকাল ৭টার দিকে ন্যাম ভবনের বাসা থেকে অনিকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের তার গলায় পেঁচানো অবস্থায় অনিকের দেহ শোবার ঘরের ফ্যানে ঝুলছিল। পরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে তার ময়নাতদন্ত করা হয়। অনিকের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক এ এম সেলিম রেজা বলেন, মৃতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তে আত্মহত্যার লক্ষণ পাওয়া গেছে। অনিকের চাচা আলী আহম্মদ মর্তুজা বলেন, এমপি মুস্তফা লুত্ফুল্লাহ, তার স্ত্রী নাসরিন খান লিপি এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তা গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরায় ছিলেন। বাসায় অনিক ও তার ছোট বোন অদিতি আদৃতা সৃষ্টি ছিলেন। শনিবার থেকে কাজের লোকটি ছুটিতে ছিলেন। রাতে ছোট বোনের সঙ্গে একত্রে খাবার শেষ করে ঘুমাতে যায় অনিক। গতকাল ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সাতক্ষীরা থেকে এমপি, তার স্ত্রী এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ন্যাম ভবনে ফেরেন। বাসায় ঢোকার সময় এমপির মেয়ে দরজা খুলে দেয়। এরপর এমপি এবং তার স্ত্রী নিজেদের শোবার ঘরে চলে যান। এমপির ব্যক্তিগত কর্মকর্তা বাসায় অনিকের সঙ্গে একই কক্ষে ঘুমাতেন। তিনি অনিকের ঘরের দরজা খোলার জন্য নক করেন। দীর্ঘক্ষণ না খোলায় অতিরিক্ত চাবি দিয়ে দরজা খোলা হয়। ঘরে ঢুকে অনিককে ফ্যানের সঙ্গে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের তার দিয়ে গলায় ফাঁস অবস্থায় পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। পুলিশ বাসা থেকে অনিকের ব্যবহূত ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে। তবে কী কারণে অনিকের মৃত্যু ঘটেছে সে ব্যাপারে পরিবার নিশ্চিত হতে পারেনি। অনিক খুলনার সিটি পলিটেকনিক থেকে ডিপ্লোমা শেষ করেন। তিনি বিদেশে পড়তে যাওয়ার জন্য আইএলটিএস সম্পন্ন করছিলেন। জানা গেছে, মুস্তফা লুত্ফুল্লাহ ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য। সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসন থেকে এবারই প্রথম তিনি এমপি হয়েছেন। স্ত্রী লিপি, ছেলে অনিক ও মেয়ে সৃষ্টিকে নিয়ে এমপির সংসার। ময়নাতদন্ত শেষে অনিকের মরদেহ হেলিকপ্টারে করে সাতক্ষীরা সদরের পলাশপোলে নিয়ে যাওয়া হয়। গতকাল বাদ মাগরিব সাতক্ষীরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনিকের জানাজার পর তাকে সাতক্ষীরা রসুলপুর সরকারি কবরস্থানে দাফন করা হয়।

সর্বশেষ খবর