মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

অচলাবস্থা কাটেনি বিপাকে ট্রাম্প

অচলাবস্থা কাটেনি বিপাকে ট্রাম্প

অভিবাসন ইস্যুতে ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান ও বিরোধী ডেমোক্র্যাটদের মাঝে সমঝোতা না হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের অচলাবস্থা তিন দিনে গড়িয়েছে। ফেডারেল সরকারের ব্যয়সংক্রান্ত একটি বিল পাসের লক্ষ্যে দল দুটি রবিবার গভীর রাত পর্যন্ত আলোচনা চালিয়েও কোনো ধরনের সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি। এতে করে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে ব্যয়সংক্রান্ত ওই বিলের ওপর ভোটদানও পিছিয়ে যায়। স্থানীয় সময় সোমবার দুপুরে (বাংলাদেশ সময় আজ ভোর) সিনেটে এ ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বাজেট বরাদ্দ বিষয়ে সিনেটে অচলাবস্থা না কাটায় ফেডারেল সরকারের লাখ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস সোমবার (বাংলাদেশ সময় আজ) কর্মস্থলে যোগ দিতে পারছেন না। বাজেট ঘিরে সৃষ্ট ওই অচলাবস্থা সত্ত্বেও ফেডারেল সরকারের কয়েকটি সেবা চালু রয়েছে। তবে বাজেট পাস না হলেও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটা অংশ বেতন প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হবেন। ফলে সরকারি কর্মকর্তাদের মাঝেও এ নিয়ে কর্মস্থলে যোগ দেওয়া-না দেওয়া নিয়ে এক ধরনের দ্বিধাদ্বন্দ্ব চলছে। ফেডারেল সরকারের সেবা কার্যক্রমে অচলাবস্থার প্রভাব পড়েছে  জনপ্রিয় ‘স্ট্যাচু অব লিবার্টি’তেও। বাজেট বরাদ্দ না হওয়ায় রবিবারও দর্শনার্থীদের জন্য এর সেবা বন্ধ ছিল। তবে নিউইয়র্ক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো এটি পুনরায় চালুর লক্ষ্যে স্টাফদের বেতন প্রদানের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে রাষ্ট্রীয় তহবিল ব্যবহার করা হবে বলেও প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের অচলাবস্থা স্থানীয় সময় শুক্রবার মধ্যরাতের পর অর্থাৎ শনিবার থেকে শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে গতকাল এ অচলাবস্থার দুই দিন কেটে গেছে। অচলাবস্থা কাটাতে রবিবার দেশটির পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে এক অধিবেশন ডাকা হয়। ‘বিরল’ এ অধিবেশনও অভিবাসনসহ অন্যান্য বিবদমান ইস্যুতে রিপাবরিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মাঝে কোনো ধরনের সমঝোতা তৈরি করতে পারেনি। ফলে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস সোমবারও ফেডারেল সরকারের কয়েকটি সেবা বন্ধ থাকবে।

ফেডারেল সরকারের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হলে সাময়িক ব্যয়সংক্রান্ত ওই বিলটি স্থানীয় সময় শুক্রবার মধ্যরাতের মধ্যেই পাস করানোর সময়সীমা ছিল। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের প্রস্তাবিত অভিবাসন সংক্রান্ত ইস্যুতে ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হয় রিপাবলিকানরা। ফলে সরকারের বাজেট বরাদ্দের ওপর ওইদিন সিনেটে অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে পক্ষে-বিপক্ষে ৫০-৪৯টি ভোট পড়ে। আইনানুযায়ী, সিনেটে কোনো প্রস্তাব বা বিল পাস করাতে হলে ন্যূনতম ৬০ সিনেটরের ভোট লাগে। রিপাবলিকানদলীয় একজন সিনেটরও বিলের বিপক্ষে ভোট দেন। ফলে ওই বিল পাস না হওয়ায় অনেক সরকারি সেবাই স্থগিত রয়েছে। গতকাল তা তৃতীয় দিনে পড়েছে। পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেট ও নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ উভয়কক্ষেই রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। তা সত্ত্বেও দেশটির ফেডারেল সরকারে অচলাবস্থা সৃষ্টির ঘটনা এই প্রথম। উল্লেখ্য, ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন কড়াকড়ির অংশ হিসেবে দেশটিতে অবস্থানকারী কাগজবিহীন প্রায় সাত লাখ অভিবাসীকে নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। তবে বিরোধী ডেমোক্র্যাটরা শুরু থেকেই সরকারের এমন পরিকল্পনার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। আর ফেডারেল সরকারের জন্য বাজেট বরাদ্দ বিল ঘিরে অভিবাসন সংস্কার ইস্যুতে ডেমোক্র্যাটরা এক্ষেত্রে রিপাবলিকানদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ছাড় আদায়ের চেষ্টা করছে। রিপাবলিকানদের বক্তব্য হলো, ফেডারেল সরকারের সেবা বন্ধ করে এসব ইস্যুতে বিরোধীদের সঙ্গে কোনো ধরনের সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব নয় তাদের। বিবিসি।

সর্বশেষ খবর