মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

আদালতে আবার অনুপস্থিত এমপি রানা পেছাল সাক্ষ্য

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানাকে আদালতে হাজির না করায় গতকাল মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এমপি রানা ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত নন, তাই তাকে আদালতে আনা যায়নি। বিচারক সাক্ষ্য গ্রহণের নতুন তারিখ দিয়েছেন ১১ ফেব্রুয়ারি।

এ নিয়ে অসুস্থতার কারণে আদালতে হাজির না করায় চারবার এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ পেছাল।

টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবুল মনসুর মিয়ার আদালতে বিচারাধীন এ মামলায় গতকাল সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য ছিল। অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি মনিরুল ইসলাম খান জানান, রাষ্ট্রপক্ষ থেকে গতকাল সাক্ষ্যের জন্য মামলার বাদী নাহার আহমেদ (নিহত ফারুকের স্ত্রী), ছেলে আহমেদ মজিদ সুমন ও মেয়ে ফারজানা আহমেদ মিথুনের হাজিরা দেওয়া হয়। কারাগারে আটক আসামি আনিসুল ইসলাম রাজা, মোহাম্মদ আলী, মো. সমিরকে আদালতে হাজির করা হয় এবং জামিনে থাকা আসামি মাসুদুর রহমান, ফরিদ আহম্মেদ ও নাসির উদ্দিন নুরু হাজির হন। কাশিমপুর কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার মো. জাহাঙ্গীর কবির স্বাক্ষরিত এক পত্রে আদালতকে জানানো হয়. এমপি রানা ফিস্টুলা, হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিস, প্রোস্টেট স্ফীতি, কোমর ব্যথা নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি ভ্রমণের অনুপযুক্ত। তাই তাকে আদালতে হাজির করা সম্ভব নয়। এমপি রানাকে হাজির না করাকে বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার কৌশল বলে মনে করছে বাদীপক্ষ। তাদের মতে, এর আগে অসুস্থতার নানা অজুহাতে রানাকে আটবার আদালতে হাজির করা হয়নি। তাই মামলাটি অভিযোগ গঠন করতেই প্রায় ১০ মাস নষ্ট হয়েছে। মামলার তারিখ এলেই রানা অসুস্থ হয়ে পড়তেন। এখন সাক্ষ্য-গ্রহণের সময়ও চারবার একই অজুহাতে হাজির করা হলো না। এতে সাক্ষ্য গ্রহণ প্রক্রিয়া পিছিয়ে যাচ্ছে। বাদী নাহার আহমেদ এমপি রানা যাতে তার প্রভাব বিস্তার করে নানা অজুহাতে বিচার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করতে না পারেন সেদিকে দৃষ্টি রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ তার কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ টাঙ্গাইল সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। ২০১৪ সালের আগস্টে গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তে এ হত্যায় এমপি রানা ও তার ভাইদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। গোয়েন্দা পুলিশ ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র পেশ করে। এ মামলায় এমপি রানা ছাড়াও তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাঁকন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পাসহ ১৪ জন আসামি। গত ৬ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে আদালত।

সর্বশেষ খবর