শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

খালেদাকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা সম্ভব নয় : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

খালেদাকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা সম্ভব নয় : ফখরুল

দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতেই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, রাজনৈতিক মামলায় এ রায় অবৈধ, বেআইনি ও আইনের লঙ্ঘন। নির্বাচন থেকে খালেদা জিয়া ও বিএনপিকে দূরে রাখা সম্ভব হবে না। গতকাল বিকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিদেশি গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের নিয়ে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। এ সময় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নওশাদ জমির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবীর খান জানান, বিএনপি চেয়ারপারসনের রায়-পরবর্তী পরিস্থিতি জানাতেই বিদেশি গণমাধ্যমকে ডাকা হয়। মতবিনিময়কালে বিদেশি গণমাধ্যমের প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেন ভয়েস অব আমেরিকার আমীর খসরু, বিবিসির সিনিয়র রিপোর্টার কাদির কল্লোল, ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির ব্যুরো চিফ শফিকুল আলম, জার্মান গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলের ব্যুরো চিফ হারুন উর রশীদ, মার্কিন বার্তা সংস্থা এপির ব্যুরোপ্রধান জুলহাস আলম, ভারতীয় গণমাধ্যম জি মিডিয়ার ব্যুরো চিফ রাজীব খান, কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরার তানভীর চৌধুরী, পাকিস্তানি গণমাধ্যম জিও নিউজের সেলিম রেজা, ভারতের একটি সংবাদ সংস্থার ব্যুরো চিফ সাদ মাহদী প্রমুখ। বিদেশি গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ব্রিফিংয়ে বিদেশি গণমাধ্যমকর্মীদের জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ের আইনি ও রাজনৈতিক দিকগুলো অবহিত করেছেন বিএনপি নেতারা। এ সময় রায় ঘিরে সারা দেশে আটক বিএনপি নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিও জানান তারা। ব্রিফিংয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এ রায় দেওয়া হয়েছে খালেদা জিয়াকে আগামী নির্বাচন থেকে সরিয়ে রাখার জন্য। তাকে যে ধারায় দণ্ড দেওয়া হয়েছে, তা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ধারা নয়। তাই দুর্নীতির দায়ে খালেদা জিয়াকে অভিযুক্ত করা যায়নি বলে দাবি করেন তিনি। রায়ের আইনি দিকগুলো তুলে ধরে ব্যারিস্টার মওদুদ ও খন্দকার মোশাররফ বলেন, দুর্নীতির সঙ্গে খালেদা জিয়ার কোনো সংযোগ নেই। এ মামলার বাকি পাঁচ আসামির ক্ষেত্রে দুর্নীতির সংযোগের কথা বলা হলেও রায়ে খালেদা জিয়ার দুর্নীতির সংযোগের কথা বলা নেই। বিএনপি নেতারা বিদেশি গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, সরকারি তহবিলে এতিমদের জন্য কোনো তহবিল ছিল না। কুয়েত থেকে আসা টাকা লেনদেন করেছেন তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান। টাকা ছাড় করার জন্য তিনি সরকারকে ব্যবহার করেছেন। সেই টাকার কিছুটা খরচ হলেও বাকিটা ব্যাংকে আছে, যা এখন সুদে-মূলে তিন গুণ হয়েছে। ফলে তহবিল তছরুপের কোনো বিষয় এ মামলায় নেই। বিএনপি নেতারা বলেন, এই তহবিলে তো গ্র্যাফটিংও (অবৈধ উপায়ে সুবিধা নেওয়া) হয়নি। তাহলে খালেদা জিয়াকে কেন দণ্ড দেওয়া হলো— এ প্রশ্ন তুলে বিএনপি নেতারা রায়কে অবৈধ, বেআইনি ও আইনের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেন। মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, এ রায়ের মূল লক্ষ্য খালেদা জিয়া ও বিএনপিকে আগামী নির্বাচন থেকে দূরে রাখা। কিন্তু তা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আমরা উচ্চ আদালতে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব। সরকার বাধা না দিলে তিনি প্রচলিত আইনেই বেরিয়ে আসবেন। এ সময় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় ঘিরে সারা দেশে বিএনপির সাড়ে ৩ হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে দাবি করে মির্জা ফখরুল খালেদা জিয়াসহ সব নেতা-কর্মীর মুক্তি দাবি করেন। তারেক রহমানকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার বিষয়ে বিএনপি নেতারা বলেন, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ীই তিনি (তারেক রহমান) এ দায়িত্ব পেয়েছেন। তার ও দলের স্থায়ী কমিটির নেতৃত্বেই দল চলবে।

সর্বশেষ খবর