রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
আজ দ্বিতীয় টি-২০

সিলেটে অভিষেকের অপেক্ষায় টাইগাররা

রাশেদুর রহমান, সিলেট থেকে

দুপুরের কড়া রোদ সকালের শিশির শুষে নিতেই খুলে গেল উইকেটের ঘোমটা। পিচ কিউরেটরকে সঙ্গে নিয়ে নববধূর মুখ দেখার মতোই উইকেটের সৌন্দর্য অবলোকন করলেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, টেকনিক্যাল ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন এবং তামিম ইকবাল। অন্যরাও নজর বুলিয়ে নিলেন পরীক্ষাকেন্দ্রের উপরিভাগে। আজ টি-২০ সিরিজের শেষ ম্যাচে নিজেদের সেরাটা বের করার মন্ত্র খুঁজলেন যেন টাইগাররা। হাতুরাসিংহে উইকেটের চেহারা দেখার সুযোগ পাননি। তাকে অপেক্ষা করতে হবে আজ বিকাল পর্যন্ত।

সাবেক গুরু হাতুরাসিংহের দল শ্রীলঙ্কার কাছে টানা পাঁচ ম্যাচে ব্যর্থ। চারটিতে পরাজয়, একটিতে ড্র। টাইগারদের এমন ফল নিয়ে হতাশ হাতুরাসিংহে নিজেও। ভাবটা এমন—আমার শিষ্যদের এহেন পতন! মাহমুদুল্লাহরা ভালো করুক, এটা অন্তর থেকেই চান হাতুরা। কিন্তু সেই ভালোটা যেন আবার শ্রীলঙ্কার সঙ্গেই না হয়, তাও বললেন। হাতুরাসিংহে কী চান সে নিয়ে বসে নেই টাইগাররা। ব্যর্থতার বৃত্ত ভেঙে বিজয়ের পথে ছুটতে মরিয়া তারা। গতকাল অনুশীলনে দেখা গেল অন্য এক দল। খালেদ মাহমুদ ছুটছেন মাঠজুড়ে। শিষ্যদের অনুশীলন দেখছেন মনোযোগ দিয়ে। ভুল হলে শুধরে দিচ্ছেন। টাইগাররাও সুবোধ বালকের মতো মেনে নিচ্ছে গুরুর নির্দেশ। তাদের শরীরী ভাষায় না আছে পরাজয়ের কোনো গ্লানি, না আছে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তা। চনমনে ভাব পুরো দলটাতে। এর একটা কারণ হতে পারে, তামিম ইকবালরের সুস্থতা। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের সবুজ গালিচা যেন তামিমকে পুরোপুরিই সুস্থ করে তুলেছে। এনে দিয়েছে ফুরফুরে ভাব। তামিমকে পেয়ে খুশি অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহও। তিনি জানিয়েছেন, তামিম এখন পূর্ণ ফিট। দলে যে একটা পরিবর্তন আসছে তারও ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন মাহমুদুল্লাহ। তামিম এলে জাকিরকে হয়ত দলের বাইরে থাকতে হবে। তাছাড়া আবু জায়েদ রাহিও দলে আসতে পারেন।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামছে টাইগাররা। এর আগে দেশের মধ্যে সাতটা স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ দল। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই টাইগারদের প্রথম প্রতিপক্ষ ছিল শ্রীলঙ্কা! কাকতালীয়ই বলতে হবে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম থেকে শুরু। ১৯৮৮ সালের নভেম্বরে শ্রীলঙ্কার কাছে ৯ উইকেটের পরাজয় দিয়েই এই মাঠে অভিষেক হয়েছিল টাইগারদের। বগুড়ার শহীদ চান্দু ও চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামেও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পরাজয় দিয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা শুরু করেছে টাইগাররা। ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওয়ানডেতে ৫ উইকেটে হেরেছিল বাংলাদেশ বগুড়ায়। অবশ্য পরের ম্যাচেই ৪ উইকেটের জয়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন টাইগাররা। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তিন ফরম্যাটেই বাংলাদেশের প্রথম প্রতিপক্ষ ছিল শ্রীলঙ্কা। তিনটাতেই পরাজয়। এমএ আজিজ স্টেডিয়ামেও নিজেদের প্রথম ম্যাচে হেরেছিল বাংলাদেশ (ভারতের কাছে ১৯৮৮ সালে)। তবে বাকি তিনটিতে স্টেডিয়ামে নিজেদের প্রথম ম্যাচ জিতেছে টাইগাররা। ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে ২০০৬ সালের মার্চে কেনিয়াকে ওয়ানডেতে ২০ রানে শুরু করে বাংলাদেশ। একই বছরের মার্চে কেনিয়াকে হারিয়ে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামেও শুভ সূচনা করে টাইগাররা। ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে নিজেদের প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডেতে ৮ উইকেটে জয় পায় বাংলাদেশ। এবার সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের পালা। সেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কী রেকর্ডটা বদলে দিতে পারবেন মাহমুদুল্লাহরা!

সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে এর আগেও আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছে। ২০১৪ সালে এই মাঠে টি-২০ বিশ্বকাপের ৬টি ম্যাচ আয়োজন করেছিল বিসিবি।

 তবে বাংলাদেশ এই প্রথম খেলছে এখানে। নতুন স্টেডিয়ামে নিজেদের প্রথম ম্যাচটাকে স্মরণীয় করে রাখতে বদ্ধপরিকর মাহমুদুল্লাহরা।

সর্বশেষ খবর