বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

আলোচনায় নতুন পরীক্ষা পদ্ধতি

প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে বিকল্প উপায়ের খোঁজ, এমসিকিউ, কাগজে প্রশ্নপত্র বাদ ও প্রশ্নব্যাংক গড়াসহ নানা চিন্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক

পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের পেছনে বিভিন্ন কারণ শনাক্ত করার পর ফাঁস ঠেকাতে বিকল্প উপায় খুঁজছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এমসিকিউ পদ্ধতি বাদ দিয়ে সম্পূর্ণ সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণ, প্রশ্নব্যাংক প্রণয়ন, ডিজিটাল ডিভাইসে পরীক্ষা নেওয়াসহ নানা ভাবনা রয়েছে মন্ত্রণালয়ের। সব মিলে আগামী বছর থেকে নতুন পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা। মঙ্গলবার বিকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে প্রশ্ন ফাঁসের নানা কারণ ও প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন সরকারের শিক্ষাসংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকরা। এতে অন্য মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন মন্ত্রী ও কর্মকর্তাও যোগ দেন।

বৈঠকসূত্র জানায়, আগামী বছর পাবলিক পরীক্ষায় এমসিকিউ তুলে দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি ?টিক মার্ক (এমসিকিউ) তুলে দেওয়ার পক্ষে মত দেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাঁর এ মতকে নির্দেশ হিসেবেই দেখছেন। কারণ, পরীক্ষাগুলোয় লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নের চেয়ে এমসিকিউ প্রশ্নই বেশি ফাঁস হয়েছে।

একটি টিক মার্কের জন্য ১ নম্বর নির্ধারিত থাকায় এতেই প্রশ্ন ফাঁস চক্রের আগ্রহ বেশি থাকে। প্রশ্নপত্র প্রণয়ন থেকে শুরু করে বিতরণ পর্যন্ত বর্তমানে প্রায় ১০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত থাকে। এ প্রক্রিয়ায় প্রশ্ন ফাঁস বন্ধ করা অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। তাই এবার কাগুজে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন থেকেই সরে যেতে চাইছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। জানা গেছে, পরীক্ষা গ্রহণের পদ্ধতিই আমূল বদলে ফেলা হবে। পরীক্ষা গ্রহণ প্রক্রিয়ায় জড়িত লোকজনের সংখ্যা কমিয়ে ফেলতে পুরো পদ্ধতিকে ডিজিটালাইজড করা হবে। পাবলিক পরীক্ষার জন্য আগামীতে আর প্রশ্নপত্র ছাপানো হবে না। ডিজিটাল ‘প্রশ্নব্যাংক’-এর মাধ্যমে যন্ত্রের সাহায্যে পরীক্ষার দিন সকালে অটোমেটিক প্রশ্নপত্র তৈরি করা হবে। বিশেষ একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে র‌্যানডম সিলেকশনের মাধ্যমে পরীক্ষার দিন সকালে চূড়ান্ত প্রশ্নপত্র তৈরি করা হবে। এরপর পরীক্ষা শুরুর আধঘণ্টা আগে সকাল সাড়ে ৯টার আগে ওই ডিভাইস ব্যবহার করে কেন্দ্র সচিবদের প্রশ্ন জানিয়ে দেওয়া হবে। পরীক্ষা শুরুর আগে কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রশ্ন সেট ও পাসওয়ার্ড জানিয়ে দেবেন। পরীক্ষার হলে কেন্দ্র সচিবদের একটি করে ডিজিটাল ডিভাইস দেওয়া হবে। সকাল সাড়ে ৯টার পর তাতে পাসওয়ার্ড প্রবেশ করানো হলে প্রশ্নপত্র ভেসে উঠবে। তা দেখেই পরীক্ষার হলে দায়িত্বরত শিক্ষকরা বোর্ডে প্রশ্ন লিখে দেবেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন সাংবাদিকদের বলেন, অনলাইন প্রশ্নব্যাংকের মাধ্যমে আগামীতে পরীক্ষা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে সভায় সবাই একমত হয়েছেন। তিনি বলেন, সভায় অনেকে কেন্দ্রে কেন্দ্রে প্রশ্ন ছাপিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার সুপারিশ করেছেন।

সর্বশেষ খবর