বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের সম্মেলনে ককটেল ভাঙচুর

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের সম্মেলনে ককটেল ভাঙচুর

চট্টগ্রামে গতকাল ছাত্রলীগের সম্মেলনে দুই পক্ষ চেয়ার ছোড়াছুড়ি করে —বাংলাদেশ প্রতিদিন

পছন্দের নেতার নামে স্লোগান, কাউন্সিলর নির্ধারণ ও সিনিয়রদের সম্মান না দেওয়াকে কেন্দ্র করে চেয়ার ছোড়াছুড়ি ও ককটেল বিস্ফোরণের কারণে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগ সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন পণ্ড হয়। সম্মেলন চলছিল নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে। উত্তপ্ত ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন এমপি। মন্ত্রী নিজেই মঞ্চ থেকে নেমে কর্মীদের থামানোর চেষ্টায় হাতজোড় করে অনুনয়-বিনয় করেন। তাতেও কোনো কাজ হয়নি। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ড. হাসান মাহমুদ এমপি, এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি, কেন্দ ীয় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন প্রমুখ। ভিডিওি ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার সময় আতঙ্কিত নেতা-কর্মী ও সাংবাদিকরা দ্রুত মিলনায়তন থেকে বের হওয়ার সময় তাদের কয়েকজন আহত হয়েছেন। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে তাত্ক্ষণিক সম্মেলন মূলতবি করা হয়। এর আগে গত সোমবার লালদীঘির ময়দানে মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্মরণ সভায়ও চেয়ার ছোড়াছুড়ি হয়েছিল। একই রকম দুটি ঘটনার নেপথ্যে কারা তাদের চিহ্নিত করার দাবিও জানান তৃণমূলের নেতারা। সর্বশেষ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো ধরনের পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়নি। সম্মেলন পণ্ড হওয়ার ১০ মিনিট পরে মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন বলেন, ছাত্রলীগ সম্মেলনে ঢুকে বহিরাগতরাই এ হামলা চালায়। হামলাকারীদের চিহ্নিত করা হবে। তিনি বলেন, ছাত্রলীগের কর্মীরা বিশৃঙ্খলা করে না। তারা শৃঙ্খলায় বিশ্বাসী। হট্টগোল শুরু হলে নেতারা বের হয়ে যান এবং জেলা পরিষদের অফিসে বৈঠক করেন। হট্টগোলের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল আলম চৌধুরী, এমএ সালাম, কেন্দ ীয় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বখতেয়ার সাঈদ ইরান ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবু তৈয়বসহ প্রমুখ। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আলাউদ্দিন তালুকদার বলেন, ছাত্রলীগের সম্মেলনে চেয়ার ছোড়াছুড়ি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় ৫ জন আহত হয়ে চমেক হাসপাতালে এসেছেন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে চেয়ার ছোড়াছুড়ির বিষয়ে জেলার সাধারণ সম্পাদক মো. আবু তৈয়ব বলেন, সম্মেলন মঞ্চে যখন জামায়াত শিবিরের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার বক্তব্য রাখছিলেন কেন্দ ীয় নেতারা। তখনই বহিরাগতরা শান্তিপূর্ণ সম্মেলনে বিশৃঙ্খলা করেছে। জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা সম্মেলনে ঢুকে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে নতুন নেতৃত্বের বিষয়ে কেন্দ ীয় কমিটি যেটা সিদ্ধান্ত নিবেন সেই নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করবেন বলেও জানান তিনি। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রাজিবুল হাসান সুমন বলেন, সম্মেলনে কাউন্সিলর নির্ধারণ, সিনিয়রদের যথাযথ সম্মান ও পছন্দের নেতাদের নামে স্লোগান দেওয়ার বিষয়ে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। তবে কারা, কিভাবে নেপথ্যে থেকে এমন সুন্দর একটা সম্মেলনকে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টির ইন্ধন দিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করতে হবে বলেও জানান তিনি।

রোকেয়ায় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া : ক্যাম্পাসে মোটরসাইকেল চালানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার রাতে ঘণ্টাব্যাপী  ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ছাত্রলীগ কর্মী রাসেল মিয়া আহত হন। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী আদনান আলী প্রধান ফটক দিয়ে দ্রুতগতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় একই দলের আরেক কর্মী ইতিহাস ও প্রত্নতত্ব বিভাগের রাসেল মিয়া বাধা দেন। এনিয়ে কথাকাটির এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ছাত্রলীগের দুটি পক্ষ লাঠিসোঁটা নিয়ে বেরিয়ে পড়লে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ছাত্রলীগ কর্মী রাসেল মিয়া  আহত হন। বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বে নিয়োজিত উপপরিদর্শক (এসআই) মহিব্বুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রাতেই পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আবু কালাম মো. ফরিদ উল ইসলাম বলেন, ছাত্রলীগের দুইপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়।

সর্বশেষ খবর