তরুণ বয়সেই ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী হলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিপ্লব কুমার দেব। এই আনন্দের মাঝেই সাবেক মুখ্যমন্ত্রীর পা ছুঁয়ে আশীর্বাদ নিতে ভুল করেননি বিপ্লব। ঘটনাটি ঘটল রাজ্যের সাবেক মন্ত্রী খগেন্দ্র জমাতিয়ার শেষকৃত্যানুষ্ঠানে। সেখানেই গিয়েছিলেন সদ্য সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার ও নতুন মুখ্যমন্ত্রী (এখনো শপথ নেননি) বিপ্লব। সেখানেই মানিক সরকারের পা ছুঁয়ে আশীর্বাদ নেন তিনি। পূর্বসূরির কাছ থেকে সম্ভাব্য উত্তরসূরির আশীর্বাদ নেওয়ার উজ্জ্বল মুহূর্তটা তৈরি হয়েছে গত পরশুই। এরপর সবাইকে নমস্কার জানিয়ে দ্রুত পায়ে মানিক সরকার চলে যান। এদিকে আনন্দবাজার জানিয়েছে, বাইরে কেউ টেরও পেল না, ইস্তফা দেওয়ার পর বাড়ি ফিরেই জিনিসপত্র গুছাতে শুরু করেছেন সস্ত্রীক মানিক। শুধু মুখ্যমন্ত্রীর আসনই নয়, আপাতত মাথার ওপরে ছাদও তো হারিয়েছেন তিনি! কোনোকালে মায়ের নামে বাড়ি ছিল, সেসব পার্টির কাজে দান করে দিয়েছেন। স্ত্রী পাঞ্চালীর বাপের বাড়ির সূত্রে জমি আছে। তবে সেখানে বাড়ি তৈরির কাজ শেষ হয়নি। ধনপুর আসনের জনপ্রতিনিধি হিসেবে বিধায়ক হয়ে বাসাঘর চাইবেন না, জানিয়ে দিয়েছেন। তাহলে যাবেন কোথায়? সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গৌতম দাশ বলছিলেন, ‘যত দিন না কোনো ব্যবস্থা হচ্ছে, পার্টি অফিসের ওপরের ঘর আছে। সেখানেই থাকবেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘মানিক বাবুর তো তেমন কিছুই নেই। আছে শুধু কিছু বই আর সিডি।’ থাকার ঠিকানা ঠিক না হলেও এইটুকু স্পষ্ট হয়ে গেছে, নির্বাচনে ধাক্কা খেয়ে পশ্চিমবঙ্গের বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মতো প্রায় সন্ন্যাসের পথে যাচ্ছেন না ত্রিপুরার মানিক। একে তো নিজে জিতেছেন। এবার বিরোধী দলনেতার দায়িত্ব তাঁকেই দেওয়া হবে, নাকি বাদল চৌধুরীর মতো বর্ষীয়ান অন্য কেউ সোমবার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে— সেই প্রশ্ন উঠবে। ক্ষমতা হারালেও ৪৫% ভোট পাওয়া যে নেহাত খারাপ নয়, সেই অঙ্ক সামনে রেখেই বিরোধী আসনে বসার প্রস্তুতি চলছে সিপিএমে। মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী বিপ্লবও বিরোধী বামেদের সহযোগিতা চেয়েছেন। বলেছেন, ‘সুস্থ গণতন্ত্রে ভালো বিরোধীর প্রয়োজন। আর উনি চারবারের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিজ্ঞতার মূল্য আছে।’