শুক্রবার, ৯ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

ভোটের পূর্ণ প্রস্তুতি পাঁচ সিটিতে

স্থানীয় সরকার বিভাগে নির্বাচন কমিশনের চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভোটের পূর্ণ প্রস্তুতি পাঁচ সিটিতে

ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন আটকে যাওয়ার পর সময়মতো পাঁচ সিটির নির্বাচন অনুষ্ঠানে পূর্ণ প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেই সঙ্গে পাঁচ সিটি নির্বাচনের বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে মতামত চেয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল থেকে গাজীপুর সিটির নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে ঈদুল ফিতরের আগে ও পরে দুই ভাগে পাঁচ সিটিতে ভোট গ্রহণ করতে চায় নির্বাচন কমিশন। ইসির যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘গাজীপুর সিটি করপোরেশনসহ রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, সিলেট সিটির সীমানা, ওয়ার্ড বিভক্তিকরণ, নির্বাচন, আদালতের আদেশ প্রতিপালন ও অন্যান্য বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে সর্বশেষ অবস্থাসহ মতামত জানানোর জন্য নির্দেশিত হয়ে অনুরোধ করা হলো।’

ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নির্বাচনের প্রধান উপকরণ ব্যালট পেপার। এ জন্য বিভিন্ন ধরনের কাগজের প্রয়োজন হয়, তা ভোটের আগেই সংগ্রহ না করলে সংকট দেখা দিতে পারে। আর নির্বাচন কমিশন কাগজ কেনার জন্য একটি সময়সীমা বেঁধে দিয়ে থাকে। তারা বলেন, এপ্রিলের মধ্যে কেনা হবে পাঁচ সিটির ব্যালট পেপারের কাগজ। সূত্র জানিয়েছে, পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য ৮৫২ রিম গোলাপি মুদ্রণ কাগজের প্রয়োজন হবে। এর মধ্যে ৩৩৩ রিম কাগজ মজুদ রয়েছে, বাকি ৫১৯ রিম সংগ্রহ করতে হবে। এক্ষেত্রে গাজীপুর, খুলনা, রাজশাহী,  সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাব্য সময় ৮ মার্চ থেকে ২৩ অক্টোবর। এক্ষেত্রে এপ্রিল মাসের মধ্যে কাগজ সংগ্রহ করতে হবে বলে জানিয়েছে মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধিদফতর। ইসির কর্মকর্তারা বলেছেন, গতকাল থেকে গাজীপুর সিটির নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হয়েছে। আর ৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। খুলনা সিটি ৩০ মার্চ থেকে নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হবে। আর ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। তাই এই দুই নির্বাচন আগামী ঈদের আগে মে মাসের প্রথম দিকে করতে চায় ইসি। এ ছাড়া এককভাবে শুধু গাজীপুর সিটিতেও ভোট করতে পারে ইসি।

অন্যদিকে ঈদের পর চার সিটি তথা মে-জুনের মধ্যে রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, সিলেট সিটিতে ভোটের প্রাথমিক পরিকল্পনা রয়েছে কমিশনের। তবে গাজীপুরসহ পাঁচ সিটিতে একসঙ্গে ভোট করার কথাও ভাবছে কমিশন। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, নির্বাচন কমিশন সংসদের আগে পাঁচ সিটিতে নির্বাচন করে রাজনৈতিক দল ও জনগণের আস্থা অর্জন করতে চায়। তারাও সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। নভেম্বরের মাঝামাঝিতে একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ডিসেম্বরের শেষে অথবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভোট গ্রহণের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন তারা। তবে তার আগে পাঁচ সিটি ও আটকে থাকা পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচনও শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সাংবিধানিক এই সংস্থাটি। এক্ষেত্রে চলতি বছরের জুনের মধ্যে পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচন শেষ করার পরিকল্পনা নিয়ে পূর্ণ প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।  আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে লড়াই হবে পাঁচ সিটির ভোটের মাঠে। জনপ্রিয়তা যাচাইয়ে নির্বাচনী মাঠে থাকবে প্রধান দল আওয়ামী লীগ-বিএনপি। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় সবার নজর থাকছে সিটির ভোটের দিকে।

সম্প্রতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, বিএনপি ছাড়া অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে না। অবশ্যই রাজনৈতিক অঙ্গনে বিএনপির একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান আছে। আমরা সব সময় বলছি নিরপেক্ষ থাকব। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব দল একই সুযোগ-সুবিধা পাবে।  জানা গেছে, দলভিত্তিক সিটি নির্বাচনে মে-জুন মাসের মধ্যে ভোট গ্রহণের লক্ষ্য ধরে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা প্রয়োজনীয় কর্মপরিকল্পনা তৈরি করছেন। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের পর ভোটার তালিকার সিডি তৈরির কাজ চলছে। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান, জাতীয় নির্বাচনের আগে এসব নির্বাচন শেষ করার লক্ষ্যে কাজ চলছে।

সর্বশেষ খবর