মঙ্গলবার, ২০ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

আরও ছয় বছর ক্ষমতায় পুতিন

প্রতিদিন ডেস্ক

আরও ছয় বছর ক্ষমতায় পুতিন

মঞ্চ প্রস্তুতই ছিল। শুধু বাকি ছিল আনুষ্ঠানিক ঘোষণার। অর্থাৎ রাশিয়ার ‘লৌহমানব’ ভ্লাদিমির পুতিন যে আবারও ছয় বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন তা জানাই ছিল। তবে ভোট যে এত বেশি পাবেন তা ধারণা করা হয়নি। ভোটফেরত জরিপে বলা হয়েছিল, তিনি ৬৩ শতাংশ ভোট পাবেন। তবে গতকাল দেশটির নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ৭৬ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। আর এই জয়ে তিনি আন্তর্জাতিক মঞ্চে যে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন তা বলাই বাহুল্য। রবিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনের প্রায় সব ভোট গণনা শেষে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, তিনি ৭৬ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। বিবিসি জানিয়েছে, নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফল ঘোষিত হওয়ার পর রাজধানী মস্কোয় এক সমাবেশে ভাষণ দিয়েছেন পুতিন। ভাষণে তিনি বলেছেন, ‘গত কয়েক বছরের অর্জনকে স্বীকৃতি দিয়েছেন ভোটাররা।’ তিনি রাশিয়া শাসন করবেন ২০২৪ সাল পর্যন্ত। সে সময় তার বয়স হবে ৭১। জয়ের খবরের পর রেড স্কয়ারের কাছে পুতিন তার ভাষণে বলেন, কঠিন অবস্থার মধ্যেও তিনি যে সাফল্য অর্জন করতে পেরেছেন, জনগণের রায়ের মধ্যে সেই সাফল্যের প্রতি আস্থার প্রতিফলন দেখছেন। তার মতে, এই পরিস্থিতিতে দেশে ঐক্য বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। কঠিন সময় সত্ত্বেও মাতৃভূমির উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখছেন তিনি। নির্বাচনে ১১ শতাংশের সামান্য বেশি ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছেন কমিউনিস্ট পার্টির পাভেল গ্রুনডিন এবং প্রায় ৫ শতাংশ ভোট নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন উগ্র জাতীয়তাবাদী নেতা ভ্লাদিমির জিরিনভিস্ক। সাবেক টেলিভিশন উপস্থাপক কেসেনিয়া সোবচাক ২ শতাংশেরও কম ভোট পেয়েছেন। রাশিয়ার প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা অ্যালেক্সি নাভালিন জালিয়াতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। ইউক্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাশিয়ার অংশ করে নেওয়া ক্রিমিয়াবাসী প্রথমবারের মতো রাশিয়ার এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। এদিন রাশিয়ার প্রায় ১০ কোটি ৯ লাখ ভোটারের মধ্যে প্রায় ৬৭ শতাংশ ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। পুতিনের জয়ের ফলে চীনের মতো রাশিয়ায়ও একনায়কতন্ত্র কার্যত আরও জোরালো হলো বলে মনে করছেন অনেক পর্যবেক্ষক। আইন করে একটানা ক্ষমতায় থাকার সুযোগ না থাকলেও পুতিন এতকাল প্রেসিডেন্ট হিসেবে দুটি কার্যকালের পর প্রধানমন্ত্রী পদ গ্রহণ করে সেই নিয়ম এড়িয়ে আবার প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। ২০৩০ সালেও প্রার্থী হবেন কিনা, এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ১০০ বছর বয়স পর্যন্ত কাজ করে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা তার নেই। পুতিন এমন একসময়ে আবার নির্বাচিত হলেন, যখন আন্তর্জাতিক মঞ্চে নানা ধরনের অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। ব্রেক্সিটসহ একাধিক কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নে অস্থিরতার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প প্রশাসনে অরাজকতার ছাপ দেখা যাচ্ছে। পশ্চিমা জগতের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের অবনতির ফলে নতুন করে শীতল যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ছে। তবে এই সংঘাতের ফলে রাশিয়ায় পুতিন আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। এ অবস্থায় আগামী ছয় বছরে তিনি আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজের ক্ষমতা আরও জাহির করবেন বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। সেইসঙ্গে পুতিন অন্যান্য দেশের ওপর আরও প্রভাব বিস্তার করার প্রচেষ্টাও চালিয়ে যাবেন বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এএফপি, বিবিসি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর