সোমবার, ২ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা
সেমিনারে বিশিষ্টজনরা

প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজদের শাস্তি নিশ্চিত করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক

আমলারা যদি চেয়ারের মায়া ত্যাগ করে আইনানুগভাবে তাদের সব দায়িত্ব পালন করেন তাহলে কারও পক্ষেই দুর্নীতি করা সম্ভব নয়। রাজনীতিবিদ এবং প্রশাসনিক কর্তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনের নিয়োগ বাণিজ্য, পদায়ন ও বদলি বাণিজ্যের লাগাম টেনে ধরতে হবে। দুদকের উচিত চিহ্নিত ও প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজদের ডেকে না এনে, তাদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা। সম্মিলিতভাবে কাজ করতে না পারলে দুর্নীতি দমন সম্ভব নয়। দুর্নীতি প্রতিরোধ সপ্তাহ-২০১৮ এর শেষ দিনে গতকাল দুদক প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে এসব পরামর্শ দেন বিশিষ্টজনরা।

‘জবাবদিহিমূলক প্রশাসন ব্যবস্থাপনা দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধের প্রধান নিয়ামক’ শীর্ষক এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। প্রধান অতিথি ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিপিএটিসির সাবেক রেক্টর এ জেড এম শফিকুল আলম। বিএফইউজের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুলের সঞ্চালনায় সেমিনারে বক্তব্য দেন দুদক কমিশনার ড. নাসির উদ্দীন আহমেদ ও এ এফ এম আমিনুল ইসলাম, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হাফিজ উদ্দিন খান, সাবেক মন্ত্রী ড. মিজানুর রহমান শেলী, সাবেক মন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার আমীর উল ইসলাম, এ কে এম রহমত উল্লাহ এমপি, সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর  খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, ব্যারিস্টার তানিয়া আমির, সাংবাদিক জাহিদুজ্জামান ফারুক, সোহরাব হাসান ও মোজাম্মেল বাবু প্রমুখ।

সাবেক উপদেষ্টা হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, দুর্নীতি দমন করতে হলে জবাবদিহিতামূলক প্রশাসন থাকতেই হবে। কিন্তু দেশের বিদ্যমান প্রশাসনিক ব্যবস্থায় জবাবদিহিতা অনুপস্থিত। জবাবদিহিতামূলক প্রশাসন গড়তে হলে সরকারি নিয়োগ, প্রশিক্ষণ, বদলি, পদায়নে, শৃঙ্খলা এবং পদোন্নতির স্বচ্ছ এবং বৈষম্যহীন নীতিমালা প্রয়োজন। সাবেক মন্ত্রী ড. মিজানুর রহমান শেলী বলেন, রাষ্ট্রের প্রাণভোমরা হচ্ছে রাজনীতি। রাজনীতিকে কলুষমুক্ত করতে না পারলে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠন অসম্ভব।

সভাপতির বক্তব্যে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, আমলারা যদি চেয়ারের মায়া ত্যাগ করে আইনানুগভাবে তাদের সব দায়িত্ব পালন করেন, তাহলে কারও পক্ষেই দুর্নীতি করা সম্ভব নয়। অনৈতিক যোগসাজশ ছাড়া কোনো দুর্নীতি সংঘটিত হতে পারে না।  তিনি বলেন, পদ্ধতিগত সংস্কার ছাড়া আমলাতন্ত্রের দুর্নীতি নির্মূল করার খুব বেশি একটা সহজ পথ নেই। মানি লন্ডারিং আইন ও দুদক আইন সংশোধনের মাধ্যমে বেসরকারি ব্যক্তিদের জাল-জালিয়াতি, প্রতারণা, অর্থ-পাচার সংক্রান্ত অপরাধসমূহ দুদক আইনের তফসিলবহির্ভূত করা হয়েছে। ফলে পানামা পেপারস কিংবা প্যারাডাইস পেপারস দুর্নীতিতে যেসব বেসরকারি ব্যক্তির নাম এসেছে তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান করা কমিশনের জন্য কিছুটা জটিল বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারপরও কমিশন দেশের স্বার্থে এবং জনগণের প্রত্যাশাকে সামনে রেখে অবৈধ সম্পদ খোঁজার মাধ্যমে তাদের অবৈধ সম্পদ পাচারের বিষয়টি অনুসন্ধান করছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর