বৃহস্পতিবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা
বাংলাদেশ প্রতিদিনকে নভি মুম্বাইয়ের মেয়র জয়ন্ত সুতার

বাংলাদেশ দেখার ইচ্ছা আমার বহুদিনের

জয়শ্রী ভাদুড়ী, মুম্বাই, ভারত থেকে ফিরে

বাংলাদেশ দেখার ইচ্ছা আমার বহুদিনের

‘এর আগে বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে যাওয়ার নিমন্ত্রণ পেয়েছি। কিন্তু যাওয়া হয়ে ওঠেনি। বাংলাদেশ দেখার ইচ্ছা আমার বহুদিনের। এবার চেষ্টা করব ঘুরে আসার। আমার কল্পনা-বাস্তব সবই নভি মুম্বাইকে স্বপ্নের শহর হিসেবে গড়ে তোলা। সেই লক্ষ্য পূরণে ‘ক্লিন নভি মুম্বাই, হেলথ নভি মুম্বাই’ এই স্লোগান নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। একসময় ভারতের পরিচ্ছন্ন এবং নাগরিক সুবিধাসম্পন্ন এক নম্বর শহর হবে এটা। এই শহরে বাংলাদেশ থেকে আগত ১০০ তরুণ অতিথিকে অভিনন্দন।’ এভাবেই বাংলাদেশি ইয়ুথ ডেলিগেশনের সঙ্গে সাক্ষাতে নিজের স্বপ্নের কথা তুলে ধরেন নভি মুম্বাই মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন মেয়র জয়ন্ত দত্তাত্রে সুতার। পরে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় নভি মুম্বাইকে নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নের চিত্র তুলে ধরেন তিনি।  নভি মুম্বাইয়ের পরিকল্পনা বিষয়ে মেয়র জয়ন্ত দত্তাত্রে সুতার বলেন, নভি মুম্বাই একবিংশ শতাব্দীর শহর হিসেবে পরিচিত। ২৫ বছর ধরে পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়ন করে শহরকে ঢেলে সাজাতে কাজ করছে নভি মুম্বাই মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন। এই শহরে প্রশস্ত সড়ক, পার্ক, খেলার মাঠ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিবহন, আবাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তাসহ সব নাগরিক সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সব ধরনের নাগরিক চাহিদা এবং প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে বাসযোগ্য দেশে এক নম্বর শহরের তালিকায় আসতে কাজ করছি আমরা। ‘ক্লিন নভি মুম্বাই, হেলথ নভি মুম্বাই’ এই স্লোগান নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা এক নম্বর শহরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছি। কৃষিজ উৎপাদনের বিষয়ে তিনি বলেন, এই শহরে ২৫ বছর পরে কৃষিজ উৎপাদনের পরিমাণ আরও বাড়বে। শহরের ডান পাশে বিমানবন্দর স্থাপন হলে আবাদি জমির পরিমাণ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। শহরের পরিবহন সুবিধা বাড়াতে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। ব্রিজ কিছু কম আছে তবে নতুন করে বেশকিছু কাজ আমরা হাতে নিয়েছি। ২৯টি গ্রাম মিলে এ শহর তৈরি হয়েছে। এই গ্রামের সাধারণ মানুষ এবং কৃষকদের সংস্কৃতি ধরে রাখতে আমরা কাজ করছি। নভি মুম্বাই শহরের জীবনযাত্রার বিষয়ে মেয়র বলেন, পূর্বদিকে পাহাড়, পশ্চিমে সাগর মাঝখানে গড়ে উঠেছে এই নভি মুম্বাই শহর। ১৯৯৬ সালে যখন বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের বিকাশ ঘটল তখন জীবন নির্বাহের তাগিদে ব্যবসা, চাকরির খোঁজে মানুষ বসতি গড়ে তুলল এই শহরে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সঙ্গে এই শহরে নানা ধর্ম-বর্ণের মানুষ বাস করে। এটা কসমোপলিটন শহর। মন্দির, মসজিদ, গুরু দুয়ারা, চার্চ, গির্জা রয়েছে এই শহরে বসবাসকারী মানুষের জন্য। নভি মুম্বাই শহরে মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন সবচেয়ে কোন বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছে জানতে চাইলে জয়ন্ত দত্তাত্রে সুতার বলেন, এই শহরে প্রথমে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ছিল পানির চাহিদা পূরণ করা। পানযোগ্য এবং কৃষি খেতের প্রয়োজনীয় পানির চাহিদা আমরা পূরণ করেছি। ভারতের বিভিন্ন শহরে পানির সংকট থাকলেও ড্যাম তৈরি করে আমরা ২৪ ঘণ্টা পানি সুবিধার নিশ্চয়তা দিয়েছি। এখন এই শহর পরিচ্ছন্ন কীভাবে রাখা যায় সে বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। শহরে যেন আর বস্তি না থাকে এ জন্য আমরা কাজ করছি। বস্তিবাসীদের পুনর্বাসনে হাউজিং সোসাইটি করার পরিকল্পনা আছে। আগামী পাঁচ বছর পর আপনারা দেখবেন নভি মুম্বাইয়ের নির্মল দৃশ্য। শুধু নাগরিকের কাছ থেকে ট্যাক্স নিলে হবে না নগরবাসীর জন্য কাজ করতে হবে। নারী, শিশু, শিক্ষার্থীদের জন্য আমরা কাজ করছি। বিভিন্ন দেশের অতিথিরা আমাদের কাজ দেখে উৎসাহিত করে। এখান থেকে আমরা এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা পাই।

সর্বশেষ খবর