মঙ্গলবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

হাসান ও মঞ্জুর হাতে ধানের শীষ

গাজীপুর ও খুলনা সিটি নির্বাচন

নিজস্ব প্রতিবেদক

হাসান ও মঞ্জুর হাতে ধানের শীষ

অবশেষে গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে দলের নতুন দুই প্রার্থী ঘোষণা করল বিএনপি। গাজীপুরে জেলা বিএনপির সহসভাপতি বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান সরকারের হাতেই ধানের শীষ প্রতীক তুলে দেওয়া হয়েছে। বর্তমান মেয়র এম এ মান্নান শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় দলটি এ সিদ্ধান্ত নেয়। অন্যদিকে খুলনায় ধানের শীষের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে। সেখানে বর্তমান মেয়র মনিরুজ্জামান মনি ছিলেন নেতা-কর্মী থেকে বিচ্ছিন্ন প্রায়। সার্বিক দিক বিচার-বিশ্লেষণ করে দলের মনোনয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল রাতে এ ঘোষণা দেন। এর আগে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন কার্যালয়ে বিএনপির মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠক চলে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ছাড়াও মনোনয়ন বোর্ডে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন বৈঠকে অংশ নেন। এদিকে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বৈঠক চলাকালে রাতে গুলশান কার্যালয়ে ছুটে যান গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র এম এ মান্নান। সেখানে তাকে কাঁদতেও দেখা যায়। বোঝানোর চেষ্টা করেন দলের নেতারা। প্রার্থী ঘোষণাকালে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা আশা করি, জনগণের সমর্থন পাব। অতীতেও আমরা পেয়েছি। গত নির্বাচনে গাজীপুরে লক্ষাধিক ভোটে এবং খুলনায় ৬০-৭০ হাজার ভোটে আমাদের প্রার্থী জয়লাভ করেছিলেন। এবারও আমরা আশা করি সেই ফলাফলই আসবে।’ এই দুই সিটিতে বর্তমান মেয়রদের কেনো মনোনয়ন দেওয়া হলো না কেন প্রশ্ন করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এগুলো দলের ইন্টারনাল ব্যাপার। আপনাদের জানার জন্য বলি, আমরা সবার সঙ্গে কথা বলেছি, সংগঠনের স্বার্থে। মান্নান সাহেবের সঙ্গেও কথা বলেছি। আমরা যেটা করি আরকি-সব প্রার্থীর কাছে জানতে চাই, কী সুবিধা-অসুবিধা আছে। সবকিছু বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত হয়।’ দুই সিটি নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে নির্বাচন নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা নেবেন এবং প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকবেন। মানুষ যেন ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে— এটাই আমরা চাই। নির্বাচন কমিশন যেন নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে পারে।’

এর আগে রবিবার দুই সিটি নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেয় বিএনপির মনোনয়ন বোর্ড। দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটিই মনোনয়ন বোর্ড। ওই দিন বিকাল ৫টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে শুরুতেই খুলনার সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। তিনজন নেতা এতে সাক্ষাৎকার দেন। তারা হলেন, বর্তমান মেয়র  মনিরুজ্জামান মনি, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু ও খুলনা জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা।

এরপর নেওয়া হয় গাজীপুরের সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার।  সেখানে সাত নেতা সাক্ষাৎকার দেন। তারা হলেন গাজীপুর সিটির বর্তমান মেয়র এম এ মান্নান, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান উদ্দিন সরকার, শ্রমিক দলের কার্যকরী সভাপতি সালাউদ্দিন সরকার, মেয়র এম এ মান্নানের ছেলে এম মনজুরুল করীম, গাজীপুর জেলা বিএনপি নেতা শওকত হোসেন সরকার, আবদুস সালাম ও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শরাফত হোসেন।

সর্বশেষ খবর