নির্বাচন জমে উঠতে শুরু করেছে গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশনে।
অনানুষ্ঠানিকভাবে বাড়ি বাড়ি যেতে শুরু করেছেন প্রার্থীরা। দূরত্ব কমাতে বসছেন নিজ দল ও জোটের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে। যে কোনো মূল্যে জয় চান তারা। এর মধ্যে সারা দেশে আলোচনা চলছে গাজীপুর সিটি নিয়ে। একদিকে তারুণ্য বিকশিত নেতা জাহাঙ্গীর আলম, অন্যদিকে প্রবীণের প্রজ্ঞা নিয়ে হাসান উদ্দিন সরকার মাঠে নেমেছেন। দুজনই চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন এ নির্বাচন। দুই দলের মধ্যেই রয়েছে গ্রুপিং। সবকিছু জয় করে এগিয়ে যেতে চান তারা। বসে নেই কেন্দ্রও। তারাও পর্যবেক্ষণ করছে পরিবর্তিত পরিস্থিতি। গাজীপুর ও খুলনা নিয়ে দুই দলের কেন্দ্রীয় কমিটি এরই মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক সেরেছে। কেন্দ্র থেকে কারা দায়িত্ব পালন করবেন সেই তালিকাও ঘোষণা করা হয়েছে। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দলের শীর্ষ মহলও নিয়মিত খোঁজখবর রাখছে দুই সিটিতে।
আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই লড়াই আরও জমে উঠবে খুলনা ও গাজীপুরে। খুলনায় আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেক দলের ভিতরে গ্রহণযোগ্য। তাকে কেন্দ্র থেকে অনেকটা ডেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে একই অবস্থান নজরুল ইসলাম মঞ্জুর ক্ষেত্রেও। তাকেও দল চাপিয়ে দিয়েছে ধানের শীষ। মনোনয়ন না দিতে তিনি কেন্দ্রের কাছে হাতজোড়ও করেছেন। তবে দলের ভিতরে মঞ্জুর কিছু বিপক্ষ লোকজনও রয়েছেন। কেন্দ্র তাদের কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছে একসঙ্গে কাজ করার। নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু না হলেও দেশবাসীর দৃষ্টি এখন দুই সিটিতে— কোন দুজন হবেন নগর পিতা। গাজীপুরে কেন্দ্রীয়ভাবে আওয়ামী লীগের প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দলটির যুগ্মসাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানককে। অন্যদিকে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের নির্বাচনী কর্মকাণ্ড পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছর আগে দলের পরাজিত প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে। তিনি ‘প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট’ মনোনীত হয়েছেন। ইতিমধ্যে গাজীপুর ও খুলনা সিটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সমর্থন জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ১৪-দলীয় জোট।কেন্দ্রীয়ভাবে গাজীপুর সিটিতে আওয়ামী লীগের মনিটরিং টিমের অন্য সদস্যরা হলেন— যুগ্মসাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক ডাকসু ভিপি আখতারুজ্জামান, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীমকুমার উকিল, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, শিক্ষা সম্পাদক শামসুননাহার চাঁপাসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। এ ছাড়া ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান শীর্ষ নেতাদেরও কাজে লাগানো হবে গাজীপুরে। খুলনা সিটিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে মনিটরিং করবেন যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এনামুল হক শামীম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য এস এম কামাল হোসেনসহ কেন্দ্রীয় ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতারা। অন্যদিকে দুই সিটিতে জয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে বিএনপি ও ২০-দলীয় জোটের পক্ষ থেকে সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। গাজীপুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক করা হয়েছে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে। সেখানে জোটের পক্ষ থেকে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবেন জাতীয় পার্টির মোস্তফা জামাল হায়দার ও সদস্যসচিব এলডিপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম। খুলনায় বিএনপির কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক করা হয়েছে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায়কে। সেখানে জোটের সমন্বয়ক এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ ও সদস্যসচিব এনডিপির মঞ্জুর হোসেন মূসা। তবে দুই সিটিতেই মেয়র পদে জামায়াতের প্রার্থী থাকায় এ নিয়ে বিএনপির সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে দলটির। বিএনপি আশা করছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই জামায়াত তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেবে। প্রয়োজনে কয়েকটি ওয়ার্ডে জামায়াতের প্রার্থী দেওয়া হতে পারে।