শনিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

প্রার্থীদের ব্যয়সীমা দিল ইসি নজরদারিতে কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক

গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন ভোটে প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয়ের ওপর নজরদারি করতে কমিটি গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মেয়র ও কাউন্সিলর পদপ্রার্থীরা বিধি মেনে ব্যয় করছেন কি করছেন না, সে সম্পর্কে এই কমিটি দুই দিন পর পর কমিশনের কাছে প্রতিবেদন পাঠাবে। রিটার্নিং কর্মকর্তার নেতৃত্বে ওয়ার্ডভিত্তিক সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি, পুলিশ কমিশনারের প্রতিনিধি ও বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রকের প্রতিনিধি এ কমিটিতে থাকছেন সদস্য হিসেবে। একজন থানা নির্বাচন কর্মকর্তা থাকবেন কমিটির সদস্যসচিব। ইসির কর্মকর্তারা বলেছেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদপ্রার্থীরা ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত নির্বাচনী ব্যয় করতে পারবেন; ব্যক্তিগত খরচ দেড় লাখ টাকা। ভোটের প্রচারের সময় প্রার্থীর নিজের খাবার বা জ্বালানি খরচের বিষয়গুলো ব্যক্তিগত খরচ হিসেবে দেখানো যাবে। খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদপ্রার্থীরা ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত নির্বাচনী ব্যয় করতে পারবেন; ব্যক্তিগত খরচ ৭৫ হাজার টাকা। আর দুই সিটিতে দলীয় প্রার্থীর জন্য দল ব্যয় করতে পারবে ৫ লাখ টাকা। ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয় শাখার উপসচিব (চলতি দায়িত্ব) ফরহাদ হোসেন বলেন, ব্যয়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া রয়েছে। ইতিমধ্যে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় প্রার্থীরা সম্ভাব্য ব্যয়ের হিসাব বিবরণীও জমা দিয়েছেন। যথাযথভাবে ব্যয় হচ্ছে কিনা এবং সীমা পার করছে কিনা তা দেখতেই কমিটি করা হয়েছে।

প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় পার হলে প্রচার থেকে ভোট পর্যন্ত ব্যয় তদারকি করা হবে এ কমিটির মাধ্যমে। কমিটি তাদের প্রতিবেদনের অনুলিপি সিইসি, নির্বাচন কমিশনার, সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের কাছেও পাঠাবে। ভোটার অনুপাতে সিটি করপোরেশনে মেয়র, সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের ব্যক্তিগত খরচ, নির্বাচনী ব্যয় এবং দলীয় প্রার্থীর জন্য দলের ব্যয়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া আছে নির্বাচনী বিধিমালায়।

অভিযোগ রয়েছে, কমিশন ব্যয়সীমা নির্ধারণ করে দিয়ে নিশ্চুপ থাকে, সঠিকভাবে তা তদারকি করে না। প্রতিটি নির্বাচনে প্রার্থীরা যেভাবে প্রচার চালান, বেঁধে দেওয়া ব্যয়সীমায় তা সম্ভব কিনা সে প্রশ্ন রয়েছে বহুদিন ধরেই। ২০১৫ সালে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ভোটের পর টিআইবি বলেছিল, ব্যয়সীমা নির্ধারিত থাকলেও তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কোনো কোনো প্রার্থী এর বহুগুণ বেশি অর্থ খরচ করেছেন। ইসির সমালোচনায় টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে অনুমোদিত নির্বাচনী ব্যয়ের তুলনায় ৭ গুণ, ১১ গুণ বা ২১ গুণ বেশি অর্থ ব্যয় করেছেন প্রার্থীরা। অথচ ব্যয় পরিবীক্ষণের কোনো ব্যবস্থা ইসির নেই। ১৫ মে ভোটের দিন রেখে দুই সিটির নির্বাচনের যে তফসিল কমিশন দিয়েছে, সে অনুযায়ী মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৩ এপ্রিল।

 এবার এ দুই সিটিতে ভোট হচ্ছে দলীয় প্রতীকে। ৫৭ সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত গাজীপুর সিটি করপোরেশনে ভোটার আছেন ১১ লাখ ৬৪ হাজার ৪২৫ জন। আর খুলনা সিটির ৩১ সাধারণ ও ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৪৫৪ জন।

ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা রকিবউদ্দিন মণ্ডল গাজীপুর সিটি করপোরেশনে এবং খুলনার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুস আলী খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বে আছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর