শনিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা
ঘটনাস্থল সেই নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দর

গভীর রাতে ১৩৯ যাত্রী নিয়ে ছিটকে পড়ল বিমান

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

গভীর রাতে ১৩৯ যাত্রী নিয়ে ছিটকে পড়ল বিমান

ইউএস বাংলার বিমান দুর্ঘটনায় অর্ধশতাধিক প্রাণহানির কারণ উদ্ঘাটনের আগেই নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়েছে আরেকটি বিমান। গভীর রাতে মালয়েশিয়াগামী মালিন্দো এয়ারের একটি বিমান দুর্ঘটনায় পড়েছে এই বিমানবন্দরে। ১৩৯ যাত্রী ও ক্রু নিয়ে বিমানটি রানওয়ের বাইরে ঘাসের ওপর আছড়ে পড়ে। সৌভাগ্যবশত হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। অল্পের জন্য আরেকটি ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে গেছেন যাত্রীরা। তবে দীর্ঘ সময় বন্ধ থেকেছে বিশ্বের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ বিমানবন্দর হিসেবে চিহ্নিত ত্রিভুবন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট। ঘুরিয়ে দিতে হয়েছে এভারেস্টের দেশ নেপালমুখী বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফ্লাইট।

নেপালের গণমাধ্যমগুলোর তথ্যানুসারে, বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় কাঠমান্ডু থেকে কুয়ালালামপুরের উদ্দেশে যাত্রার জন্য রানওয়ে থেকে রওনা দেয় মালিন্দো এয়ারলাইনসের ওডি-১৮১ ফ্লাইটটি। বোয়িং ৭৩৭-৯০০ এয়ারক্রাফটিতে ৭ ক্রুসহ মোট আরোহী ছিলেন ১৩৯ জন। কিন্তু রানওয়ে থেকে আকাশে ওড়ার জন্য যাত্রার পরপরই পাইলট ককপিটের মনিটরে যান্ত্রিক ত্রুটির সিগন্যাল পান। এয়ারক্রাফটের চাকায় সমস্যা দেখতে পেয়ে তত্ক্ষণাৎ টেকঅফ না করার সিদ্ধান্ত নেন পাইলট। ভয়াবহ কোনো দুর্ঘটনার শঙ্কায় তিনি থামিয়ে দেন বিমানের ইঞ্জিন। কিন্তু এয়ারক্রাফটের টেকঅফের চূড়ান্ত গতি এবং ওজনের কারণে থামানো যায়নি বিমানটি। ফলে রানওয়ে-০২ থেকে প্রায় এক হাজার মিটার দূরে ছিটকে পড়ে বিমানটি। সৌভাগ্যবশত ঘাসের মধ্যে বিমানের সামনের চাকা ঢুকে আটকে যায় বিমানটি। ফলে প্রায় অক্ষতই থেকে যায় এয়ারক্রাফট। বিশেষ ব্যবস্থায় বের করে আনা হয় যাত্রী ও ক্রুদের। বের করে আনা হয় বিমানে থাকা সব জ্বালানি। পরে গাড়ি দিয়ে টেনে তোলা হয় রানওয়েতে। রাত ১০টা ৮ মিনিটের এ দুর্ঘটনার পর থেকেই বন্ধ ছিল ত্রিভুবন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণ। রানওয়েতে টেনে তুলে মালিন্দোর এয়ারক্রাফট সরানো সম্ভব হয় গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে। এরপর শুরু হয় বিমানবন্দরের কার্যক্রম। কিন্তু এর আগে নেপাল পৌঁছানো জেট এয়ারওয়েজ, মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনস, চায়না সাউদার্নের ফ্লাইট ঘুরিয়ে দেওয়া হয় ভারতের বিমানবন্দরগুলোয়। যাত্রা বাতিল করে নেপাল এয়ারলাইনস ও হিমালায়া এয়ারলাইনসের বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট।

পাহাড়ঘেরা নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ১২ মার্চ ইউএস-বাংলার একটি বিমান বিধ্বস্ত হলে ৭১ আরোহীর মধ্যে ৫১ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে ৪ ক্রুসহ ২৭ জন ছিলেন বাংলাদেশি। কোনো ধরনের যান্ত্রিক ত্রুটি না থাকার পরও দুর্ঘটনায় পড়ে বিধ্বস্ত হয় বিমানটি। যদিও এখনো তদন্ত শেষ হয়নি ওই দুর্ঘটনার। তবে ধারণা করা হয়, ত্রিভুবন বিমানবন্দরের অব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের এভিয়েশনের ইতিহাসে বড় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। শুধু এটাই নয়, প্রায় নিয়মিতই দুর্ঘটনা ঘটে ত্রিভুবন বিমানবন্দরে। ২০১৫ সালে টার্কিশ এয়ারলাইনসের একটি এয়ারবাস রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়লে সপ্তাহব্যাপী বন্ধ থাকে নানান অব্যবস্থাপনায় জর্জরিত নেপালের একমাত্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর