আগামী সম্মেলনে ছাত্রলীগকে নতুন মডেলে নিয়ে আসা হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ছাত্রলীগ নিয়ে আমরা নতুন করে ভাবছি। সামনে তাদের কনফারেন্স (সম্মেলন) আছে। সেখানে ছাত্রলীগের স্ট্রাকচারাল লিডারশিপ ও ছাত্রলীগকে নতুন মডেলে বিকাশ করার নির্দেশনা আমাদের নেত্রীর (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) রয়েছে। আমরা সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। একটু ধৈর্য ধরুন, অপেক্ষা করুন।
গতকাল দুপুরে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের প্রচার উপকমিটির উদ্যোগে ‘দেশরত্ন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ’ শীর্ষক এক সেমিনারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। অপরাধ করে কেউ পার পাবে না উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, কিছু এমব্যারেসিং (বিব্রতকর) ব্যাপার ঘটে। এ ব্যাপারে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। ছাত্রলীগ হোক বা আওয়ামী লীগ আমাদের যে কোনো সংগঠনের কেউ অপরাধ করে পার পায়নি। এ ব্যাপারে আমাদের নেত্রীর জিরো টলারেন্স অবস্থান। কোন অপরাধের শাস্তি হয় না? আমাকে বলুন, প্রমাণ করুন। আমাদের অনেক কর্মী কারাগারে। অপরাধ করে পার পেয়ে যাবে এমন কালচার আওয়ামী লীগে নেই, বিএনপির থাকতে পারে।
কাদের বলেন, এখন আমি এ ধরনের সেমিনারের পক্ষপাতী নই। কারণ, আগামী নির্বাচন কাছে চলে এসেছে। এখন আমাদের অ্যাকশন প্রোগ্রাম নিতে হবে। বসে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমরা সেমিনার করব, প্রচার সেল তা করেও আসছে, কিন্তু এ মুহূর্তে এটার আর প্রয়োজন নেই। এখন অনেক কাজ রয়েছে।তিনি বলেন, আমাদের কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। কোন সময়ে কোন কাজ করব তা আমাদের ঠিক করতে হবে। যখন যেটা অগ্রাধিকার, সেখানেই আমাদের মনোযোগ দিতে হবে। এয়ারকন্ডিশনার রুমে সেমিনার না করে তাপদগ্ধ মাঠে বেরিয়ে পড়তে হবে। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসে পরামর্শ করা যেতে পারে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ছয় মাস পরই নির্বাচনের শিডিউল। এখন পর্যন্ত আমাদের থিম স্লোগান ঠিক হয়নি। গতবার ছিল ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, ‘ভিশন ২০২১’। কিন্তু এবারকার স্লোগান এখনো ঠিক হয়নি। আমরা ফ্রিস্টাইলে একেকজন একেকটা বলে যাচ্ছি। আমার মনে হয় এটা নিয়ে কাজ হওয়া উচিত। স্লোগান হতে পারে ‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’, ‘বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশ’ কিংবা ‘সবার জন্য সোনার বাংলা’। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনগুলোর দুর্বলতা চোখে পড়ে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, রজনীগন্ধার গান গেয়ে লাভ নেই, যেখানে মেশিনগানের গর্জন। এয়ারকন্ডিশন ঘরে বসে সেমিনার করার সময় আর নেই, সময় এসেছে নির্বাচনী প্রচারণার কৌশল পরিবর্তনের। দলের প্রচার কৌশলে ভিন্নতা আনার তাগিদ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের নেত্রীর রাজনীতির লক্ষ্য তরুণ অর্থাৎ পরবর্তী প্রজন্ম এবং নির্বাচন। তরুণদের আমাদের কাছে টানতে হলে প্রথাগত প্রচার কৌশলে তেমন সাফল্য আসবে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমাদের বিরুদ্ধে যে অপপ্রচারটা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে আমরা শক্ত কোনো জবাব দিতে পারছি না। সব বদলে যাচ্ছে, আমাদেরও বদলাতে হবে, সময়ের সঙ্গে প্রচারণার কৌশল নির্ধারণ করতে হবে।
প্রচার ও প্রকাশনা উপপরিষদের চেয়ারম্যান এইচ টি ইমামের সভাপতিত্বে সেমিনারে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফরাস উদ্দিন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সেমিনার সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান শফিক উজ জামান।