কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে কারা কর্তৃপক্ষ তার সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের দেখা করতে দেয়নি বলে জানিয়েছে দলটি। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাদের চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য গতকাল বিকালে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন সড়কে কেন্দ্রীয় কারাগারে যান তার বোন সেলিনা ইসলাম, ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারের ছেলে অভি, বড় ছেলে তারেক রহমানের শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানু ও তার মেয়ে শাহিনা খান জামান বিন্দুসহ কয়েকজন। কারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে গেলেও তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, পরিবারের সদস্যদের তারা বলেছেন, ‘ম্যাডাম’ ওপর থেকে নিচে নামতে পারছেন না। তার শারীরিক অবস্থা প্রচণ্ড খারাপ হয়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে। আমাদেরও দেখা করতে দেওয়া হয়নি। প্রায় আড়াই মাস কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে নানা আলোচনার মধ্যে বৃহস্পতিবার বিকালেও তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বিফল হয়েছেন মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির তিন নেতা। ওই সময় বিএনপিপ্রধানের সঙ্গে দেখা হওয়া ‘সম্ভব নয়’ জানিয়ে তাদের ফিরিয়ে দেয় কারা কর্তৃপক্ষ। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কারা কর্তৃপক্ষের কাছে ‘ম্যাডামের’ এ অবস্থার কথা শুনে পরিবারের সদস্যরা খুবই উদ্বিগ্ন বলে আমাকে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে আমরাও উদ্বিগ্ন।’
খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ— রিজভী : গতকাল সন্ধ্যায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজ (শুক্রবার) বিকালে বিএনপি চেয়ারপারসনের পরিবারের সদস্যরা তাঁর সঙ্গে কারাগারে দেখা করতে গেলে ‘গুরুতর অসুস্থ’ বলে তাঁর সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের দেখা করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। চেয়ারপারসনের অসুস্থতার বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও গড়িমসি নিয়েও আমরা বারবার বলছি। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো সাড়া দেয়নি। বরং কারা কর্তৃপক্ষ খালেদা জিয়াকে নিয়ে সরকারের অশুভ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার সহযোগী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের পা, হাঁটুসহ সারা শরীরে ব্যথা এতটাই তীব্র হয়েছে যে, তিনি তাঁর জেল কক্ষ থেকে ওয়েটিং রুম পর্যন্তও আসতে পারেননি। বিকালে তাঁর পরিবারের সদস্যদের প্রায় দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, বেগম জিয়া অসুস্থতার কারণে দেখা করতে পারবেন না। তারাও স্বীকার করল বেগম জিয়া গুরুতর অসুস্থ।রিজভী আহমেদ বলেন, বারবার আবেদন করা সত্ত্বেও সরকারের সংকীর্ণ নীতির অংশীদার জেল কর্তৃপক্ষ ব্যক্তিগত চিকিৎসকদেরও কারাগারে শারীরিকভাবে অসুস্থ খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দিচ্ছে না। এমনকি সরকারের নির্দেশিত মেডিকেল বোর্ডও বেগম জিয়াকে অর্থপেডিক বেড দেওয়ার জন্য যে সুপারিশ করেছিল সেটিও কারা কর্তৃপক্ষ সরবরাহ করেনি। এ ঘটনায় সরকারপ্রধানের এক সর্বব্যাপী প্রতিহিংসা ও বিদ্বেষের প্রতিফলন ফুটে উঠছে। অন্যায়ভাবে কারাবন্দী করে বেগম খালেদা জিয়াকে নির্যাতন করা ক্ষমতাসীনদের নীচ রাজনৈতিক চরিত্রেরই বহিঃপ্রকাশ। এদের মধ্যে কোনো মনুষ্যত্বই জেগে ওঠেনি।