রবিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

ইসির একার পক্ষে সুষ্ঠু ভোট সম্ভব নয়

মাহমুদ আজহার

ইসির একার পক্ষে সুষ্ঠু ভোট সম্ভব নয়

এম সাখাওয়াত হোসেন

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) একার পক্ষে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন (অব.)। তিনি বলেন, ‘যেকোনো নির্বাচনে ওই সময়ের সরকারকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকেও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। এখন এই দুটি নির্বাচন যদি সুষ্ঠু না হয় তাহলে ভবিষ্যৎ  নির্বাচন নিয়েও শঙ্কার সৃষ্টি হবে। এ জন্য নির্বাচন কমিশনকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়।’ গতকাল বিকালে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনায় এ কথা বলেন সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার। সেনাবাহিনী নামানো ছাড়াও আসন্ন দুই সিটি করপোরেশননের ভোট সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, ‘গাজীপুর ও খুলনা সিটিতে সেনা মোতায়েন না করেও অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব। নির্বাচন কমিশন যদি সত্যিকারার্থেই মনে করে যে, সেনা মোতায়েনের কোনো প্রয়োজন নেই, তাহলে না হলে কোনো সমস্যা হবে না। তবে নির্বাচন কমিশন (ইসি) পরিবেশ কতটুকু নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে সেটাই দেখার বিষয়।’

সেনাবাহিনীর এই সাবেক কর্মকর্তা বলেন, ‘আসন্ন দুই সিটি ভোটের ওপরও জাতীয় নির্বাচনের অনেক কিছুই নির্ভর করছে। বিশেষ করে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন কী ধরনের হতে পারে— তা অনেকটাই আন্দাজ করা যাবে। সরকার নির্বাচন কমিশনকে কতটুকু সহায়তা করে সেটাও পরিলক্ষিত হবে।’  এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘দেশের একটি বড় দল এখন দাবি করছে নির্বাচনের সময় দুই সিটিতে সেনা মোতায়েনের। এটা তারা বিরোধী দলে থাকার পর থেকে সব নির্বাচনে দাবি করে আসছে। আবার তারা যখন ক্ষমতায় ছিল তখনকার বিরোধী দলও একই দাবি করেছে। এটা দীর্ঘদিন ধরেই হয়ে আসছে। সুতরাং কে দাবি করল না করল তার চেয়ে নির্বাচন কমিশনকে বুঝতে হবে, মাঠের বাস্তবতা কী? নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে। তাদের সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নির্বাচনে কোনো অঘটন ঘটলে ব্যর্থতার দায়দায়িত্ব পড়বে নির্বাচন কমিশনের ওপর। আমি মনে করি, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবিসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়েও সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু করা সম্ভব। কিন্তু এসব বাহিনী যদি সরকারের পক্ষে কাজ করে তাহলে তো কিছু করার নেই। সেটাই নির্বাচন কমিশনকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’ সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘প্রধান দুই রাজনৈতিক দলসহ ছোট বড় দলই এখন নির্বাচনের মাঠে। এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। সামনের দিনগুলো আশা করি, এমনটাই হবে। সবাই সহযোগিতা করলে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব। তবে সরকার যদি হস্তক্ষেপ করে তা আন্তর্জাতিক পর্যায়েও নেতিবাচক বার্তা যাবে। সেটা জাতীয় নির্বাচনেও প্রভাব পড়তে পারে।’ তিনি বলেন, ‘এই দুই সিটি নির্বাচনেও জাতীয় ইস্যুগুলো প্রাধান্য পাচ্ছে। দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছে মেয়র প্রার্থীরা। এতেই বোঝা যায়, সিটি নির্বাচনে জাতীয় নির্বাচনের আবহ তৈরি হয়েছে। এখন সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকেও তার আচরণবিধি মেনে চলতে হবে।’

সর্বশেষ খবর