সোমবার, ৭ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা
দুই আইনজীবীর ভাষ্য

সিনহা বাড়ি বিক্রির ৪ কোটি টাকা নিয়েছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে তার বাড়ি বিক্রির ৪ কোটি টাকা পে-অর্ডারের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়েছে। গতকাল দুদকের প্রধান কার্যালয়ে ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহার সঙ্গে আসা তাদের দুই আইনজীবী সাংবাদিকদের কাছে এ দাবি করেন।

এই দুই আইনজীবী হলেন আফাজ মাহমুদ রুবেল এবং নাজমুল আলম। তারা বলেন, এস কে সিনহার উত্তরার ছয়তলা বাড়িটি ৫ কাঠা জমির ওপর ছিল। এ বাড়িটি ২০১৬ সালের শুরুর দিকে  টাঙ্গাইলের বাসিন্দা শান্ত্রি রায় ৬ কোটি টাকায় ক্রয় করেন। এ সময় বায়না দলিলকালে তিনি ২ কোটি টাকা পরিশোধ করেছিলেন। বাকি টাকা পরিশোধের জন্য নিরঞ্জন ও শাহজাহানের সহযোগিতা নেন। নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা শান্ত্রি রায়ের স্বামী রনজিতের চাচা। আর শাহজাহান রনজিতের বন্ধু। নিরঞ্জন ও শাহজাহান দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে বলেন, উত্তরা এলাকায় বাড়ি কিনতে বাকি ৪ কোটি টাকা রাজধানী ঢাকার ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে আমরা দুজন (নিরঞ্জন ও শাহজাহান) ২ কোটি টাকা করে মোট ৪ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছি। ঋণ পরিশোধে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে শান্ত্রি রায় আমাদের জামিনদার হন। জামিনদার হিসেবে তিনি টাঙ্গাইল ও ঢাকার আশেপাশের বেশকিছু জমি বন্ধক রাখেন। নিরঞ্জন ও শাহজাহানের তথ্যানুযায়ী, ২০১৬ সালের মে মাসে জমির বায়না দলিল সম্পন্ন হয় এবং ওই বছরের ৮ নভেম্বর দুটি পে-অর্ডারের মাধ্যমে এস কে সিনহা সোনালী ব্যাংক সুপ্রিম কোর্ট শাখার মাধ্যমে ৪ কোটি টাকা গ্রহণ করেন। পে-অর্ডারের পরে ২৪ নভেম্বর হস্তান্তর দলিলের মাধ্যমে বাড়িটি শান্ত্রি রায়কে বুঝিয়ে দেন। দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ফারমার্স ব্যাংক থেকে ঋণের নামে আত্মসাৎ ও পে-অর্ডারে এক ‘গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির’ ব্যাংক হিসেবে ৪ কোটি টাকা জমা দেওয়ার অভিযোগে ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহার জিজ্ঞাসাবাদ গতকাল বিকালে শেষ হয়। দুই ব্যবসায়ীকে অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত টানা সাড়ে সাত ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। এর আগে গত ২৫ এপ্রিল ওই দুই ব্যবসায়ীর ঢাকার উত্তরায় তাদের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান এবং টাঙ্গাইলের স্থায়ী ঠিকানায় নোটিস পাঠানো হয়। দুদকের তলবি নোটিসে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ ব্যক্তির নাম উল্লেখ ছিল না। তবে বিভিন্ন সংবাদপত্র ও টেলিভিশনে  পদত্যাগী প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নাম উল্লেখ করা হয়। দুদক সূত্র জানায়, ২০১৬ সালে ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে ২ কোটি টাকা করে মোট ৪ কোটি টাকা শাহজাহান ও নিরঞ্জন ঋণ নেন।

এরপর একই বছরের ১৬ নভেম্বর সেই অর্থ পে-অর্ডারের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ওই ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করেন। ওই বিষয়ে সম্প্রতি দুদকে আসা এক ব্যক্তির লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক তা যাচাই-বাছাই  শেষে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়।

সর্বশেষ খবর