তিন মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে হাই কোর্টে আবেদন করেছেন তার আইনজীবীরা। এর মধ্যে কুমিল্লার দুই মামলায় বাস পুড়িয়ে মানুষ হত্যা এবং বিস্ফোরক দ্রব্যের অবৈধ ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। আর নড়াইলের মামলাটি হয়েছে মানহানির অভিযোগে। গতকাল হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনের পর খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জানান, দুই-এক দিনের মধ্যে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হতে পারে। খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার এহসানুর রহমান জানান, হাই কোর্টের ওই বেঞ্চের অনুমতি নিয়েই রবিবার এ জামিনের আবেদন করা হয়। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজা মাথায় নিয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে খালেদা জিয়া কারাগারে রয়েছেন। ওই মামলায় আপিল করে সুপ্রিম কোর্ট থেকে চার মাসের জামিন পেলেও কয়েকটি মামলায় গ্রেফতার থাকায় তার মুক্তি আটকে আছে।
২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি বিএনপি-জামায়াত জোটের অবরোধের মধ্যে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগমোহনপুর এলাকায় একটি নৈশকোচে পেট্রল বোমা হামলায় আট যাত্রী নিহত হন। ওই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি পৃথক মামলা হয়। পুলিশ এ দুই মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়ার পর আদালত খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। এর মধ্যে খালেদা ঢাকার দুর্নীতি মামলায় কারাগারে যাওয়ায় কুমিল্লার মামলাতেও তাকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে কুমিল্লার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালত গত ২৮ মার্চ খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেয়। তবে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে খালেদা জিয়াকে এখনো কুমিল্লার আদালতে হাজির করা হয়নি। এই অবস্থায় খালেদার আইনজীবীরা গত ২৩ এপ্রিল কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে দুই মামলায় তার জামিনের আবেদন করলে বিচারক শুনানির জন্য ৭ জুন তারিখ রাখেন। শুনানির তারিখ এগিয়ে আনার জন্য আবেদন করা হলে তা খারিজ করেন বিচারক। খালেদার আইনজীবী মাসুদ রানা জানান, তারা কুমিল্লার আদালতের ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আবেদন করেছেন। সেখানেই জামিনের আবেদন করা হয়েছে। শহীদদের সংখ্যা নিয়ে ‘বিরূপ মন্তব্য’ করার অভিযোগে নড়াইলের আদালতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মানহানির মামলাটি দায়ের করা হয়। নড়াইল জেলা পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও নড়াগাতি থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রায়হান ফারুকী ২০১৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর এ মামলা দায়ের করেন। আদালতের তলবে হাজির না হওয়ায় ২০১৬ সালের আগস্টে এ মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন বিচারক। আইনজীবীরা এ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদন করলে চলতি মাসের শুরুতে নড়াইলের আদালত তা নাকচ করে দেয়। এর বিরুদ্ধেই এবার হাই কোর্টে এসেছেন বলে আইনজীবী মাসুদ রানা জানান।