বুধবার, ২৩ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

খালেদার জামিন শুনানি মুলতবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কুমিল্লায় নাশকতা ও নড়াইলে মানহানির ঘটনায় দায়ের করা দুই মামলায় জামিন আবেদনের শুনানি আজ পর্যন্ত মুলতবি করেছে হাই কোর্ট। গতকাল বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চে কুমিল্লার মামলার আংশিক শুনানি হয়। পরে শুনানি মুলতবি করা হয়।

এদিকে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে স্বাধীনতাবিরোধীদের মন্ত্রী করে জাতির মানহানি এবং মিথ্যা তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালনের দুই মামলায় জামিনের জন্য হাই কোর্টে আবেদন করেছেন তার আইনজীবীরা। সোমবার এ দুই আবেদনের ওপরে শুনানি হতে পারে বলে বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবীরা জানিয়েছেন। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আপিল বিভাগ থেকে খালেদা জিয়ার জামিন বহাল রাখা হলেও তার কারামুক্তিতে অন্তত আরও ছয় মামলায় জামিন পেতে হবে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা। এর মধ্যে চলতি সপ্তাহেই পাঁচ মামলায় হাই কোর্টে জামিনের আবেদন করা হলো। কুমিল্লার মামলায় খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। এ ছাড়া খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের মধ্যে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জমির উদ্দিন সরকার, এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন, মাহবুব উদ্দিন খোকন, রাগিব রউফ চৌধুরী ও এহসানুর রহমান এবং রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন। জানা গেছে, আদালতে খন্দকার মাহবুব হোসেন শুনানিতে বলেন, এ মামলার এফআইআরে খালেদা জিয়ার নাম নেই। চার্জশিটে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অথচ ১৬৪ ধারায় আসামিদের যে জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে, তাতে কোনো আসামির মুখ থেকেই খালেদা জিয়ার নাম আসেনি। আমরা কুমিল্লার আদালতে শুনানি করতে চাই, কিন্তু ওই আদালত শুনানি না করে তারিখ ধার্য করছে। এ মামলার শুনানির তারিখ এগিয়ে আনতে আবেদন করলেও আদালত থেকে সে বিষয়ে কোনো আদেশ পাওয়া যাচ্ছে না। এর আগে গত রবিবার হাই কোর্টের অনুমতি নিয়ে কুমিল্লা ও নড়াইলের তিন মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনের জামিনের আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। এর মধ্যে চৌদ্দগ্রামের একটি মামলা বিশেষ আইনে হওয়ায় ওই মামলায় ফৌজদারি আপিল করা হয়। তার সঙ্গেই খালেদার জামিন চাওয়া হয়। ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগমোহনপুর এলাকায় নৈশকোচে পেট্রলবোমা হামলায় আট যাত্রী নিহত হন। চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশ পরদিন খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে মামলা করে। এ মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়ার পর আদালত খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। এর মধ্যে খালেদা ঢাকার দুর্নীতি মামলায় কারাগারে যাওয়ায় কুমিল্লার মামলাতেও তাকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। আর নড়াইলের আদালতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মানহানির মামলাটি দায়ের করা হয় শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করার অভিযোগে। নড়াইল জেলা পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও নড়াগাতি থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রায়হান ফারুকী ২০১৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর এ মামলা করেন। আদালতের তলবে হাজির না হওয়ায় ২০১৬ সালের আগস্টে এ মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

নতুন দুই জামিন আবেদন : ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে স্বাধীনতাবিরোধীদের মন্ত্রী করায় জাতির মানহানি এবং মিথ্যা তথ্য দিয়ে জাতীয় শোক দিবস ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালনের অভিযোগে ২০১৬ সালে ঢাকায় দুটি মামলা হয় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে। গতকাল সকালে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. সহিদুল করিমের হাই কোর্ট বেঞ্চের অনুমতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তার জামিনের জন্য আবেদন জমা দেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।

সর্বশেষ খবর