মঙ্গলবার, ৩ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

খেলাপি ঋণ কমাতে টাস্কফোর্স গঠনের দাবি এফবিসিসিআইর

সিঙ্গেল ডিজিটে ঋণের সুদহার দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঋণের সুদ এক অঙ্কে নামানোর প্রধান বাধা নন-পারফরমিং লোন (এনপিএল) বা খেলাপি ঋণ। এ সমস্যা সমাধানে ব্যাংকিং খাতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি টাস্কফোর্স গঠনের দাবি জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী, ঋণের সুদহার সিঙ্গেল ডিজিট দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। গতকাল রাজধানীর মতিঝিলে ফেডারেশন ভবনে ব্যাংকের সুদের হার সম্পর্কিত বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান এফবিসিসিআই সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। সংবাদ সম্মেলনে এফবিসিসিআইর ভাইস প্রেসিডেন্ট মুনতাকিম আশরাফ, পরিচালক শাহেদ রেজা, হাসিনা নেওয়াজ, ইরতেজা হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে দেশে প্রচুর পরিমাণ বিনিয়োগ প্রয়োজন। বিশ্বব্যাংকে ট্রিলিয়নস মার্কিন ডলার বিনিয়োগের অপেক্ষায় পড়ে আছে। এ অর্থ বিনিয়োগের জন্য বিশ্বব্যাংক বিভিন্ন দেশে সুযোগ খুঁজছে। স্বল্প সুদে ও সহজ শর্তে দরকষাকষির মাধ্যমে বিশ্বব্যাংক থেকে অর্থায়ন গ্রহণের ব্যবস্থা নেওয়া হলে তা দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যবহার করা সম্ভব। বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে বেসরকারি খাতও এ অর্থ ব্যবহার করার সুযোগ পেলে তা দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে এফবিসিসিআই মনে করে। তিনি বলেন, ‘একক অঙ্কে ঋণের সুদহার ব্যবসা পরিচালনা ব্যয় যেমন কমায়, তেমনি পার্শ্ববর্তী প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সহায়তা করে। প্রধানমন্ত্রী আমাদের আস্থার জায়গা। তিনি দেশের উন্নয়নের জন্যই সব ব্যাংককে সিঙ্গেল ডিজিটে ঋণের সুদহার নিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। কিছু ব্যাংক এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে সুদহার ইতিমধ্যে কমিয়েছে। যেসব ব্যাংক এখনো তাদের সুদহার কমায়নি, আমরা আহ্বান জানাই তারা দ্রুত সিঙ্গেল ডিজিটে সুদহার নামিয়ে আনবে।’ এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ একটি সংবেদনশীল ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দীর্ঘদিন এ দুর্বিষহ বোঝা সুদের হার এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অন্তরায় হিসেবে কাজ করছে। চলতি বছরের মার্চে প্রান্তিক শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় ৮৮ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে আরও দক্ষ ও বিনিয়োগবান্ধব করতে এই খেলাপি ঋণ না কমানোর কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোর ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাকে আরও জোরদার করা প্রয়োজন। বিশেষ করে বড় অঙ্কের ঋণগুলো কমিয়ে আনার বিষয়ে কাঠামোবদ্ধ ব্যবস্থা নেওয়া একান্ত জরুরি। খেলাপি-সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন একটি টাস্কফোর্স গঠন করতে হবে, যে টাস্কফোর্স নন-পারফরমিং লোনজনিত সমস্যার মূল কারণ চিহ্নিত করে তা সমাধানে সুপারিশ সংবলিত প্রতিবেদন প্রণয়ন করবে। এ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জাতীয় স্বার্থে এ সমস্যার সমাধানে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। শফিউল ইসলাম বলেন, ‘ঋণ খেলাপি দুই ধরনের হয়ে থাকে। এর মধ্যে কেউ ব্যবসায় মন্দার কারণে খেলাপি হন। তাদের সহযোগিতা করতে হবে। আবার অনেকে ইচ্ছাকৃতভাবে খেলাপি হন। এই দুষ্টুচক্রের কারণে ব্যাংকিং খাতে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এ চক্রকে আমরা নৈতিকভাবে বয়কট করি। তাদের চিহ্নিত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে ব্যাংক ও আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে একটি স্বাধীন ব্যাংক কমিশন গঠনের বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়াধীন। আমাদের প্রত্যাশা, অর্থমন্ত্রী অতি দ্রুত একটি স্বাধীন ব্যাংক কমিশন গঠন করবেন।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর