বৃহস্পতিবার, ২৬ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা
তিন সিটিতে চাপা আতঙ্ক

বিএনপির অভিযোগ ইসি বারবি ডল

রাজশাহী

জুলকার নাইন, রাজশাহী থেকে

নির্বাচনী প্রচারণার শুরুর পর থেকেই পুলিশি হয়রানি ও গ্রেফতারে নাজেহাল রাজশাহী সিটি করপোরেশনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের কর্মী-সমর্থকরা। দলীয় প্রার্থীর পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা থেকে শুরু করে নির্বাচনী ক্যাম্প ভেঙে ফেলার মতো ঘটনাও ঘটছে। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরের জনপ্রতিনিধিদের নির্বাচনী এলাকায় উপস্থিতি ও প্রভাব বিস্তার। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না উল্লেখ করে বিএনপি প্রার্থী ইসি ‘বারবি ডল’-এ পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন। জানা যায়, গ্রেফতার আতঙ্ক এতটাই পেয়ে বসেছে যে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে ছাড়া আর কোথাও নগরীতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের দল বেঁধে প্রচারণা চালাতে দেখা যাচ্ছে না। বুলবুলের অনুপস্থিতিতে নগরীর কোথাও মিছিল-পথসভাও হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় দুই একজন নেতার বাইরে রাজশাহীর আশপাশের জেলার নেতারাও আসছেন না বুলবুলের পক্ষে প্রচারণা চালাতে। কারণ হিসেবে বিএনপি নেতারা বলছেন, রাজশাহীতে নির্বাচন শুরুর পর ইতিমধ্যেই ৪৩ জন গ্রেফতার হয়েছেন। আর পুরনো মামলা থাকায় এমনিতেই বিএনপির অনেক নেতা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। নির্বাচনে প্রচারণা চালাতে এসে নতুন করে গ্রেফতার হতে চাইছেন না কেউ কেউ। এরই মধ্যে বুলবুলের পথসভায় ককটেল হামলার ঘটনায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু এবং সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন সওকতসহ একাধিক নেতা। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে এ চিত্র সম্পূর্ণই ভিন্ন। তাদের মেয়র প্রার্থীর পক্ষে অন্তত ডজন খানেক কেন্দ্রীয় নেতা রাজশাহী ঘুরে গেছেন। এখনো অনেকেই আসছেন বা অনেকেই প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি এমপিরাও লিটনের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। ওয়ার্ড পর্যায়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারাও প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। গতকাল পর্যন্ত প্রচারণা চালিয়ে গেছেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এসএম কামাল হোসেন ও নূরুল ইসলাম ঠাণ্ডু, ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুস সাত্তার মাসুদ ও আনোয়ারুল ইসলাম আনোয়ার প্রমুখ। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেও লিটনের প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন রাজশাহী-১ আসনের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী, রাজশাহী-৩ আসনের এমপি আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী-৫ আসনের এমপি কাজী আবদুল ওয়াদুদ দারা এবং নাটোর সদর আসনের এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুল।

এমন পরিস্থিতিতে গতকাল নিজের নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়ে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে পুলিশের ভূমিকা পালন করছে। পুলিশের সামনে প্রকাশ্যে অবৈধ অস্ত্র উঁচিয়ে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের মারধর করছে এবং পুলিশকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিচ্ছে। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে কাজ করছে। আমরা বার বার অভিযোগ দিলেও তা তারা হিসেবে নিচ্ছে না। তারা বারবি ডলে পরিণত হয়েছে। অন্যদিকে, নৌাকার মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটনের মতে, নৌকার জোয়ার দেখে ভীত বিএনপি প্রার্থী তাই এসব অভিযোগ করছেন। তিনি নিজের পরাজয়ের জন্য এসব অজুহাত দেখাতে চাইছেন। খায়রুজ্জামান লিটনকে সমর্থন দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন সম্মিলিত ইসলামী জোটের সভাপতি হাফেজ মওলানা জিয়াউল হাসান। গতকাল মাইক্রোবাসে মাইক লাগিয়ে নৌকা প্রতীকের পক্ষে প্রচারণা চালান নগরীর শাহেদ বাজার, বর্ণালি মোড়, উপশহর লক্ষ্মীপুর, রেলস্টেশন, রাজশাহী ইউনিভার্সিটি, হেতেম খাঁ, পদ্মা আবাসিক এলাকাসহ বিভিন্ন জায়গায়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর