ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় নিহত শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিমের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল তাদের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ডেকে নেন। বেশকিছু সময় তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং সান্ত্বনা দেন। পাশাপাশি দুই পরিবারকে ২০ লাখ টাকা করে পারিবারিক সঞ্চয়পত্র অনুদান দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে নিহত শিক্ষার্থীর পবিবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে কয়েকটি দাবি করেছিলেন, সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সে দাবি মেনে নিয়েছেন। তাদের দাবির মধ্যে অন্যতম ছিল, ১. শিক্ষার্থীদের জন্য শহীদ রমিজ উদ্দিন স্কুলকে পাঁচটি বাস প্রদান, ২. রমিজ উদ্দিন স্কুলসংলগ্ন বিমানবন্দর সড়কে আন্ডারপাস নির্মাণ। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দেন দেশের প্রতিটি স্কুলসংলগ্ন রাস্তায় স্পিডব্রেকার এবং শুধু স্কুলের জন্য প্লাকার্ডসংবলিত বিশেষ ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগ করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানিয়েছেন, ‘গতকাল দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন কুর্মিটোলায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুই শিক্ষার্থীর পরিবার। প্রধানমন্ত্রী শোকাহত দুই পরিবারকে সান্ত্বনা ও প্রতি পরিবারকে ২০ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র অনুদান দিয়েছেন।’ দুই শিক্ষার্থীর পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা আমার নেই। আপনাদের কষ্টটা আমি বুঝি। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব জানান, নিহত ছাত্রী দিয়ার বাবা পরিবহন খাতের কিছু সমস্যা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন। চালকদের লম্বা সময় গাড়ি চালাতে হয়, ক্লান্ত হয়ে দুর্ঘটনা ঘটে— এসব বিষয়েও বলেন। এ সময় দুই পরিবারের সদস্যরাই প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তারা বলেন, আমরা চাই, ছাত্রছাত্রীরা ঘরে ফিরে যাক। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন দিয়ার বাবা জাহাঙ্গীর ফকির, মা, ভাই-বোন এবং নিহত ছাত্র আবদুল করিমের মা মহিমা বেগম, বোন ও পরিবারের সদস্যরা। এ ছাড়া ছিলেন রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের প্রিন্সিপাল নূর নাহার ইয়াসমিন। পরে দিয়ার বাবা জাহাঙ্গীর ফকির সাংবাদিকদের বলেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের সান্ত্বনা দিয়েছেন; আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের কঠোর শাস্তি হবে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে জাহাঙ্গীর বলেন, বাবারা তোমরা যারা কষ্ট করছ, তোমরা ঘরে ফিরে যাও। সাক্ষাতের সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, মুখ্যসচিব নজিবুর রহমান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, ২৯ জুলাই দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জাবালে নূর পরিবহনের একটি বেপরোয়া বাস বিমানবন্দর সড়কের জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভারের গোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হন।
শিক্ষার্থীদের ঘরে ফেরাতে বাড়ি বাড়ি যেতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ : নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাজধানীর রাজপথ অবরোধ করে রাখা শিক্ষার্থীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তাদের ঘরে ফেরার বার্তা দেবে আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গতকাল রাতে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মাধ্যমে দলীয় নেতা-কর্মীদের এ নির্দেশ দিয়েছেন। দলের ধানমন্ডি কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে অনির্ধারিত এক বৈঠকের সময় মোবাইল ফোনে প্রধানমন্ত্রী তাকে এ নির্দেশ দেন।