ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ বলেছেন, ‘এতদিন ধরে আমরা যা করতে পারিনি তোমরা তা করে দেখিয়েছ। তোমরা আজ শেখালে যে, এ দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা সম্ভব। প্রিয় ছেলেমেয়েদের বলি, তোমরা আমাদের পথনির্দেশনা দিয়েছ। এখন তোমরা ক্লাসে ফিরে যাও।’ সড়ক দুর্ঘটনা, বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর চলমান ছাত্র আন্দোলন, গণপরিবহনে নৈরাজ্য, কিছু কিছু মন্ত্রীর বেফাঁস মন্তব্য নিয়ে গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন এই শিক্ষাবিদ।
ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা আজ আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছে মন্তব্য করে এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বলেন, ‘কদিন ধরে পরিবহন সেক্টরে নৈরাজ্য ও অরাজকতার অন্ধকার দূর করার জন্য দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যে দুঃসাহসিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তা উজ্জ্বল আলোকরশ্মির মতো। বিশেষ করে এই আন্দোলন অকর্মণ্য ও দুর্নীতিপরায়ণ কর্মীদের জন্য দিকনির্দেশনাস্বরূপ।’ শিক্ষার্থীদের এখন ক্লাসে ফিরে যাওয়া উচিত বলে মনে করেন শিক্ষাবিদ ড. এমাজউদ্দীন। বলেন, ‘তোমাদের এই আন্দোলন আমাদের জন্য পথনির্দেশিকা। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্তাদের অনুরোধ, শিক্ষার্থীরা যা করেছে, এতে তাদের প্রাপ্য কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নয় বরং সরবে না হলেও নীরবে তাদের অভিনন্দন জানান। এই প্রশংসনীয় কর্মের অংশীদার আপনারাও।’ বিভিন্ন সময় মন্ত্রীদের বেফাঁস মন্তব্য জাতিকে আহত করে মন্তব্য করে ঢাবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন বলেন, ‘যখন কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তখন কিছু মন্ত্রী এদিকে গুরুত্ব না দিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন। হালকা তামাশা হিসেবে দেখেন। নির্বিকার থাকেন। সমাধানেও সিরিয়াস হন না। তাদের এমন বক্তব্যে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা আহত হয়ে দাবি আদায়ে রাজপথে নেমেছে। শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়।’ চলমান আন্দোলন থামাতে সরকারের সামনে দুটি উপায় রয়েছে বলে মনে করেন এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী। একটি হলো সরকারের পুলিশবাহিনী, যাদের হাতে লাঠি রয়েছে, তাদের দিয়ে শিক্ষার্থীদের রাজপথ থেকে তুলে দেওয়া। অবশ্য এটি কোনো ভালো সমাধান নয়। দ্বিতীয়ত, উদার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রশংসা করে তাদের দাবি মেনে নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফেরত পাঠানো। এটিই গ্রহণযোগ্য সমাধান বলে মনে করেন ড. এমাজউদ্দীন আহমদ।