সোমবার, ৬ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

শিক্ষার্থীদের বাইরে পেলে প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক

শিক্ষার্থীদের বাইরে পেলে প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

নুরুল ইসলাম নাহিদ

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, দাবি আদায়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সফল হয়েছে। সরকার তাদের সব দাবি মেনে নিয়েছে। ছাত্রছাত্রীরা এবার রাস্তায় নামলে এর দায় শিক্ষকদের। প্রতিষ্ঠান প্রধানদের ছাত্রছাত্রীরা যাতে আন্দোলনে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, শিক্ষকদের এ দায়িত্ব নিতে হবে। গতকাল সন্ধ্যায় সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ঢাকা মহানগরীর সব কলেজের অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক-সহকারী প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিকাল ৩টায় কলেজ শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করেন নুরুল ইসলাম নাহিদ। পরে বিকাল ৫টায় স্কুলের শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তিনি। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো যৌক্তিক ছিল। ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। ছাত্ররা রাস্তায় লাইসেন্স চেক করছে। কিন্তু অধিকাংশ গাড়ির কোনো ফিটনেস নেই। সরকার সব দাবি মেনে নিয়েছে। কিছু বাস্তবায়নও করেছে। বাকি কিছু বাস্তবায়ন করতে সময় লাগবে। মন্ত্রী বলেন, পরিবহন শ্রমিকদের ভাবতে হবে যে, তার সন্তানও স্কুলে পড়ে। তাই ছাত্রদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। মন্ত্রী বলেন, ছাত্রদের কাছে আহ্বান জানাই, তোমরা লেখাপড়ায় মনোনিবেশ কর। তোমরা আন্দোলনকে যে পর্যায়ে নিয়ে গেছ এর ফসল তুলে দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আপনারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান। ছাত্রছাত্রীদের নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব আপনাদের। প্রতিষ্ঠান প্রধানকে এটি নিশ্চিত করতে হবে যে, সরকার দাবি মেনে নেওয়ার পর যেন কোনো শিক্ষার্থী আন্দোলনে না নামে। এবার রাস্তায় নামলে ভাবতে হবে তাদের কেউ ব্যবহার করছে। এতে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার পরেও রাস্তায় নামছে। এতে বোঝা যায় এর পেছনে অন্যদের হাত রয়েছে। তারা চায় শিক্ষার্থীদের লাশ পড়ুক। কিন্তু কোনো শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হোক সেটি আমরা চাই না। অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ, আপনারা সন্তানকে নিরাপদে রাখুন। অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য দেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান। অনুষ্ঠানে লালমাটিয়া মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ মুজিবুর রহমান পরিস্থিতি  থেকে উত্তরণের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিজ নিজ পরিবহন ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব দেন। সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজের অধ্যক্ষ কানিজ মাহমুদা বলেন, অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘটে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানে ক্লাস হচ্ছে না। উত্তরার ঢাকা বয়েজ কলেজের অধ্যক্ষ মাসুদ রানা বলেন, রাস্তায় শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে কম। তাদের সঙ্গে দুর্বৃত্তরা যোগ দিয়েছে।

 কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আই কে সেলিম উল্যাহ খোন্দকার বলেন, যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তাতে শিক্ষক ও অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে। রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শওকত আলম বলেন, ছাত্রদের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করা স্পটগুলো চিহ্নিত করে ছাত্র প্রতিনিধি দিয়ে আন্দোলনকারীদের বোঝাতে হবে। অন্য শিক্ষকরা বলেন, পরিবহন সেক্টরে অরাজক পরিস্থিতি বন্ধ করতে হবে। ছাত্রদের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের আচরণ শোভনীয় নয়। এর আগে সকালে শিক্ষাবিষয়ক সাংবাদিক সংগঠন ‘ইরাব’ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সচিবালয়ে বৈঠককালে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, হঠাৎ করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। অন্য কেউ তাদের ব্যবহার করছে। এমন পরিস্থিতিতে ছাত্ররা বিরূপ কোনো পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে তারা দাবির জায়গা থেকে সরে যাবে।

সর্বশেষ খবর