বৃহস্পতিবার, ১৬ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

ফের মমতা ব্যানার্জির তোপ

কলকাতা প্রতিনিধি

ফের মমতা ব্যানার্জির তোপ

আসামের জাতীয় নাগরিকপঞ্জি ইস্যুতে ফের বিজেপি-কে তোপ দাগলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জি। গত মঙ্গলবার রাজ্য সরকারের সচিবালয় নবান্নে সংবাদ সম্মেলন করে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে মমতা বলেন, ‘আমি অমিত শাহকে জিজ্ঞাসা করতে চাই যে— তার নিজের বাবা-মার আদৌ জন্মের সনদ আছে কি? আমি জানি যে আমার বাবা-মায়ের কোনো জন্ম সনদ নেই। স্বামী বিবেকানন্দের কি জন্ম সনদ আছে? অটল বিহারি বাজপেয়ি অসুস্থ আছেন, তাই আমি তাকে জিজ্ঞাসা করতে পারছি না। কিন্তু আমারও ইচ্ছা যে অটল জিরও সমস্ত সনদ আছে কি না তা জানার। আসলে আগেকার দিনের খুব অল্প মানুষ রয়েছেন যারা তাদের বাবা-মা বা পূর্ব পুরুষের জন্মের সনদ রেখে দিয়েছেন। আগামীদিনে মহাত্মা গান্ধীর পরিবারও যদি এই সনদ দেখাতে ব্যর্থ হয় তবে গান্ধীজিও প্রকৃত ভারতীয় নাগরিক কি না তার প্রমাণ দিতে হবে। এমনকি গরুরও জন্মের সনদ তৈরি করা উচিত, না হলে তাদেরও একদিন দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে।’ মমতা আরও বলেন, ‘আমি যদি পশ্চিমবঙ্গে জন্মগ্রহণ না করতাম, তবে তারা আমাকেও আমার ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে বলত।’ উল্লেখ্য, গত ১১ আগস্ট কলকাতা সফরে এসে অমিত শাহ মমতাকে তোপ দেগে বলেছিলেন, ‘আমি মমতা দিদিকে বলতে চাই যে, তিনি কেন অনুপ্রবেশকারীদের রক্ষা করছেন। তিনি যতই আপত্তি করুন এনআরসির কাজ থমকে থাকবে না। আমরা দেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীদের বিতাড়িত করবই।’ সংবাদ সম্মেলন থেকে মমতা অভিযোগ করেন, ‘জাতীয় নাগরিকপঞ্জি খসড়ার তালিকা থেকে বাদ পড়া ৪০ লাখের মধ্যে ৩৮ লাখ বাঙালির নাম বাদ গেছে। এর মধ্যে ২৫ লাখ হিন্দু বাঙালি ও ১৩ লাখ বাঙালি মুসলিম রয়েছেন। বাকি ২ লাখ হিন্দিভাষী, নেপালি সব মিলিয়ে রয়েছেন।’ বিজেপিকে উদ্দেশ করে মমতা বলেন, ‘নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতেই বিজেপি এই ধরনের নাগরিকপঞ্জির তালিকা তৈরি করেছে। আগে ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশ একত্রিত ছিল। কিন্তু দেশ ভাগের পর পাকিস্তানের লোকেরা পাঞ্জাব, রাজস্থানে যায়। বাংলাদেশের লোকেরা পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসামে যায়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে যারা এখানে বসবাস করছে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সেইসব ভারতীয় নাগরিকদের কখনো শরণার্থী, আবার কখনো অনুপ্রবেশকারী বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’ মমতার অভিযোগ, ‘অনুপ্রবেশকারী বলে ভারতীয় নাগরিকদের অসম্মান করার প্রচেষ্টা চলছে। সেখানে কাউকে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না। যে কোনো মুহূর্তে তাদের ধরে নিয়ে ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে রাখা হচ্ছে।’ প্রসঙ্গত, গত ৩০ জুলাই আসামে প্রকাশিত হয় জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) চূড়ান্ত খসড়া তালিকা। এনআরসি-এর কাছে জমা পড়া ৩.২৯ কোটি আবেদনকারীর মধ্যে চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ২.৮৯ কোটি মানুষের নাম। তালিকা থেকে বাদ পড়েছে প্রায় ৪০ লাখ বাসিন্দার নাম।

সর্বশেষ খবর