শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

জনরায় দেখতে চায় ভারত

সংবিধান অনুযায়ী জয়ী দলের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত দিল্লি

জুলকার নাইন, নয়াদিল্লি থেকে

বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচনে জনগণের মতের প্রতিফলন দেখার অপেক্ষায় রয়েছে ভারত। সে নির্বাচন যদি সংবিধান অনুসারে হয় এবং সেখানে জনমতের প্রতিফলন ঘটে; সেখানে নির্বাচিত যে কোনো পক্ষের সঙ্গেই কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে ভারত। নয়াদিল্লি মনে করে, নির্বাচনে কোনো নির্দিষ্ট দলের অংশগ্রহণের চেয়ে জনগণের অংশগ্রহণই বড় বিষয়। শুধু জনগণ যদি নির্বাচনে অংশ না নেয় তবেই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলেও মনে করেন ভারতের পররাষ্ট্রনীতির নীতিনির্ধারকরা। গতকাল ভারতের সাউথ ব্লকের বিভিন্ন পর্যায় থেকে এ মতের কথা জানানো হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জেনারেল ভি কে সিং (অব.) নিজ মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ কী সিদ্ধান্ত নেয় আমরা তা দেখার অপেক্ষায় আছি। বিএনপি বা অন্য কেউ কী করল তা ধর্তব্য নয়। আসলে এটা বাংলাদেশের জনগণের বিষয়ই, তারাই তাদের সরকার নির্বাচিত করবে। তাই আসছে ১৬ ডিসেম্বরের পর যে কোনো সময় জনগণ তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ পাবে বলে মনে করছি, সে সিদ্ধান্তই আমরা দেখতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জনগণই তাদের স্বকীয় জাতিসত্তার পরিচয় চেয়েছিল, ভারত সেখানে সহায়তা করেছে। এবারও বাংলাদেশের জনগণ তাদের যে সরকারকে নির্বাচিত করবে নয়াদিল্লি তার সঙ্গে কাজ করবে।’ ভারতেও নির্বাচন আসন্ন— এ কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ভি কে সিং বলেন, ‘সব সম্পর্কেই পরিবর্তন হয়, নানা সমস্যার তৈরি হয়। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রেও সমস্যা আছে, কিন্তু কোনো বাধা-বিপত্তিতেই এ সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, বরং এগিয়েছে। ভবিষ্যতেও তাই হবে।’ পরে পৃথকভাবে পররাষ্ট্র সচিব বিজয় গোখলে বলেন, ‘ভারত সমুদ্রভিত্তিক কূটনীতিতে পরিচালিত হচ্ছে। আর বঙ্গোপসাগর হলো এই সমুদ্রভিত্তিক অর্থনীতির প্রধান হাব। তাই প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের জনগণকে সবসময়ই গুরুত্ব দেয় ভারত। নয়াদিল্লির গত সরকারের মতো বর্তমান সরকারও বাংলাদেশ-ভারতের গতিশীল সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করছে।’ তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে সংবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে জনগণের মতামতে নির্বাচিত যে কোনো সরকারের সঙ্গে কাজ করার জন্য ভারত সরকার অপেক্ষায় আছে।’ এ ক্ষেত্রে নেপাল, ভুটান ও মালদ্বীপের সাম্প্রতিক নির্বাচনের কথা স্মরণ করিয়ে তিনি বলেন, ‘সেখানকার জনগণের নির্বাচিত সরকারের সঙ্গেই রয়েছে নয়াদিল্লি।’ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিংয়ের মতো আসন্ন নির্বাচনের আগে ঢাকায় সফরের পরিকল্পনা আছে কিনা— জানতে চাইলে এক কথায় নেই বলে জানিয়ে দেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব। অনানুষ্ঠানিক মতবিনিময়ে ভারতের পররাষ্ট্র দফতরের বাংলাদেশ অনুবিভাগের শীর্ষ এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনে ফ্যাক্টর দেখতে চায় না নয়াদিল্লি। আর এ অবস্থানের কথাও পরিষ্কারভাবে জানাতে ইচ্ছুক ভারত।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর