রবিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগ নেতারা বললেন এটা সন্ত্রাসীদের ঐক্যফ্রন্ট

রফিকুল ইসলাম রনি

বিএনপি, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া, জেএসডি ও নাগরিক ঐক্য নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আত্মপ্রকাশকে ‘সন্ত্রাসীদের ঐক্যফ্রন্ট’ বলছে আওয়ামী লীগ। দলটির নেতারা বলছেন, এটা রাজনৈতিক জোট নয়, জনবিচ্ছিন্ন ও জনগণের প্রত্যাখ্যাত হতাশাগ্রস্ত কিছু ব্যক্তিদের ঐক্য। দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমানকে রক্ষা ও মুক্ত করার জোট। এই জোটের সঙ্গে দেশের জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই। গতকাল আত্মপ্রকাশ পাওয়া এই জোটের নেতাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

নতুন ঐক্যফ্রন্ট সম্পর্কে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহম্মদ ফারুক খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমাদের দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘শত ফুল ফুটতে দাও’। তারা যদি সুষ্ঠু ভোট ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রেখে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে চায় তাহলে তাদের স্বাগত জানাব। কিন্তু গতকাল যেসব দাবি তারা করছে তা অবান্তর। সংবিধান সম্মত নয়। তাদের দাবিগুলো দেখে প্রতীয়মান হয়েছে, তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ভণ্ডুল বা প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়। এরা নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে।’

এই ঐক্য প্রক্রিয়া যখন শুরু হয়, তখন একে স্বাগত জানিয়েছিলেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, শত ফুল ফুটতে দিন। এই দেশের দুটি জোট— একটি হচ্ছে আওয়ামী লীগ, আরেকটি অ্যান্টি আওয়ামী লীগ। কাজেই অ্যান্টি আওয়ামী লীগের ভোট তো কোথাও না কোথাও যেতে হবে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিএনপি জোট করছে জনবিচ্ছিন্ন, জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত ব্যক্তিদের নিয়ে। তারা যাদের নিয়ে জোট করেছে, তারা কখনো ভোটে জেতেনি। আর গতকালের জোট গঠনের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে, এটা সন্ত্রাসীদের জোট। কারণ কানাডার ফেডারেল কোর্টে রায় হয়েছে যে বিএনপি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। সর্বশেষ আমাদের দেশের কোর্টে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় রায় প্রমাণ হয়েছে বিএনপি সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী সংগঠন।

আওয়ামী লীগের আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘এ ঐক্যফ্রন্টের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। একদল হতাশাগ্রস্ত লোকের জোট। মানুষ যখন সমুদ্রের মধ্যে বিপদে পড়ে তখন খড়কুটাকে হাতড়িয়ে ধরে ভেলা হিসেবে সম্বল করে। বিএনপিও তাই করছে। সুতরাং নেতিবাচক রাজনীতির কারণে বিএনপি যখন অন্ধকারে নিমজ্জিত তখন এই হতাশাগ্রস্ত, জনবিচ্ছিন্ন লোকদের নিয়ে জোট গঠন করেছে। এই জোটের লক্ষ্য হচ্ছে, বিএনপির অশুভ শক্তিকে ভাড়া নেওয়া। আগামী নির্বাচনকে ভণ্ডুল করে অন্ধকার পথ দিয়ে ক্ষমতায় আসা।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের আরও কয়েকজন নেতা বলেছেন, বিএনপি শেষ অবলম্বন হিসেবে পরগাছা ধরে বাঁচার চেষ্টা করছে। কিন্তু শেষ রক্ষা হবে না। কারণ মানুষ আর বিএনপিকে ভোট দেবে না। দলছুট, গণবিচ্ছিন্ন নেতারাও কখনো এই দেশে এমপি-মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এরা নির্বাচন এলেই ষড়যন্ত্র করে। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই এই জোটের আত্মপ্রকাশ। এরা সাম্প্রদায়িক শক্তি। নীতিহীনদের এই জোট হালে পানি পাবে না।

সর্বশেষ খবর