বুধবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

স্লোগানমুখর মনোনয়ন সংগ্রহ উৎসব বিএনপি অফিসে

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্লোগানমুখর মনোনয়ন সংগ্রহ উৎসব বিএনপি অফিসে

ভোটে যাওয়ার ঘোষণার পর দুই দিন ধরে মনোনয়ন উৎসব শুরু হয়েছে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহকে কেন্দ্র করে মিছিলে-স্লোগানে দিনভর উত্তাল ওই এলাকা। নয়াপল্টন থেকে নাইটিঙ্গেল মোড় পর্যন্ত ভিআইপি সড়কটির দুই অংশেই মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নেতা-কর্মীদের ঢল নামে। কার্যত সকাল ১০টা থেকে বিকাল প্রায় ৫টা পর্যন্ত ওই এলাকায় যান চলাচল প্রায় অচল হয়ে পড়ে। গতকাল দ্বিতীয় দিনের মতো দেশের বিভিন্ন নির্বাচনী আসন থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাদের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। ব্যান্ড বাজিয়ে, হাতি নিয়ে কিংবা ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে মনোনয়ন সংগ্রহ করতে আসেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। নেতা-কর্মীদের পদচারণে সেখানে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সকাল ১০টার আগেই কার্যালয়ের সামনের সড়কের একদিকে নাইটিঙ্গেল মোড়, অন্যদিকে ফকিরাপুলের মোড় পর্যন্ত নেতা-কর্মীদের ভিড়ে জনসমুদ্রে রূপ নেয়। বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মীর উপস্থিতির কারণে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় নেতা-কর্মীরা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ নানা স্লোগান দেন। গতকাল দ্বিতীয় দিন বিকাল ৪টা পর্যন্ত আট বিভাগে মোট এক হাজার ২১৩টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে বিএনপি। সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী। মনোনয়ন ফরম কেনা ও জমার সময় ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত। এর আগে সোমবার প্রথম দিন আট বিভাগে মোট এক হাজার ৩২৬টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে বিএনপি। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী শক্তির যে উত্থান ঘটেছে, আজকে নয়াপল্টনের অফিসের সামনে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে আসা নির্যাতিত নেতা-কর্মীদের জনস্রোত তার প্রমাণ। মানুষের তিল ধারণের ঠাঁই নেই। চরম কষ্ট করে নেতারা তাদের কর্মীদের নিয়ে এত গরমের মধ্যে ফরম সংগ্রহ করছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে।’

দ্বিতীয় দিন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করলেন যারা :  ঢাকা-৩ আসন থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। এ সময় কেরানীগঞ্জ থেকে সহস্রাধিক নেতা-কর্মী নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তার পক্ষে অবস্থান নেন। বরিশাল-১ থেকে সাবেক এমপি বিএনপি নেতা জহিরউদ্দিন স্বপন নেতা-কর্মীদের নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। তিনি বলেন, ‘ধানের শীষের প্রতীক পেলে এ আসনটি এবার পুনরুদ্ধার করব ইনশা আল্লাহ। তবে এবারের নির্বাচন শুধু এমপি-মন্ত্রী হওয়ার নির্বাচন নয়, গণতন্ত্রের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির পক্ষে গণরায় আদায় করারও সংগ্রাম।’ ঢাকা-১৩ ও মাদারীপুর-২ আসন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন সাবেক ছাত্রনেত্রী ও জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান। মোহাম্মদপুর এলাকায় বসবাস করেন হেলেন জেরিন খান। তিনি বলেন, এই এলাকায় তার বসবাস। নেতা-কর্মী সবার সঙ্গেই তার পরিচয় রয়েছে। সুষ্ঠু ভোট হলে মোহাম্মদপুর আসনে জয়লাভের প্রত্যাশা করছেন হেলেন জেরিন খান। এ ছাড়া গতকাল মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ফয়সাল আলিম (জয়পুরহাট-১), হাজি মোহাম্মদ লিটন ঢাকা-৬, কিশোরগঞ্জ-১ আসন থেকে খালেদ সাইফুল্লাহ (ভিপি সোহেল), কিশোরগঞ্জ-৫ থেকে ইশতিয়াক আহমেদ নাসির, কিশোরগঞ্জ-৪ থেকে সুরঞ্জন ঘোষ, চট্টগ্রাম-৮ আসন থেকে মোরশেদ খান, দুই সংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ কুমিল্লা-৫ আসন এবং কাদের গনি চৌধুরী চট্টগ্রাম-২ আসন থেকে, ফেনী-৩ থেকে এম আবদুল্লাহ, সিলেট-১ থেকে অধ্যাপক ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, সিলেট-৩ থেকে কর্নেল (অব.) সৈয়দ আলী আহমদ, সিলেট-৬ থেকে অ্যাডভোকেট মাওলানা রশিদ আহমেদ, চাঁদপুর-১ থেকে আহমদ মনিরুজ্জামান দেওয়ান মানিক এবং বাগেরহাট-২ আসন থেকে কারাবন্দী মনিরুল ইসলাম মনিরের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়। এ ছাড়া জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক (ঢাকা-১৪ ও ১৬), নিলোফার চৌধুরী মনি (জামালপুর-৫), মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল (জামালপুর-৩), তানভীর আহমেদ রবিন ও মীর হোসেন মিরু (ঢাকা-৫), সালাউদ্দিন আহমেদ (ঢাকা-৪), বরিশাল-২ আসনে দুলাল হোসেন, আলহাজ এ কে এম মোয়াজ্জেম হোসেন ঢাকা-১৬, পটুয়াখালী-২ আসনে মুনির হোসেন, নারায়ণগঞ্জ-২ থেকে নজরুল ইসলাম আজাদ, কুমিল্লা-৬ ও ১০ থেকে কারাবন্দী মনিরুল হক চৌধুরীর পক্ষে দুটি, আবদুল আউয়াল মিন্টু (ফেনী-৩), ভিপি জয়নাল আবেদীন (ফেনী-২), অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন (ময়মনসিংহ-৪), শামসুজ্জামান দুদু (চুয়াডাঙ্গা-১), সেলিমা রহমান (বরিশাল-৩), আলতাফ হোসেন চৌধুরী (পটুয়াখালী-১), শাহজাহান ওমর (ঝালকাঠি-১), দলের স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য আ স ম হান্নান শাহর ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান (গাজীপুর-৪), অধ্যাপক আবদুল মান্নান এবং হাসান উদ্দিন সরকার (গাজীপুর-২), ফজলুল হক মিলন (গাজীপুর-৩), সাইয়েদুল আলম বাবুল ও মজিবুর রহমান (গাজীপুর-১), খন্দকার ইকবাল হোসেন সেলিম (ফরিদপুর-৪), অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বাচ্চু ও সাখাওয়াত হোসেন সবুজ (গাজীপুর-৫), সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স (ময়মনসিংহ-১),  নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর পত্নী তাহসিনা রুশদির লুনা (সিলেট-২), খালেদ মাহমুদ শ্যামল ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩, অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন নারায়ণগঞ্জ-৫, বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সম্পাদক মো. মাইনুল ইসলাম টাঙ্গাইল-৩, কামরুজ্জামান রতন মুন্সীগঞ্জ-৩, সাইফুর রহমান আসাদ মানিকগঞ্জ-২, রিয়াজউদ্দিন আহমেদ (মাগুরা-২), শাহ আলম কাজী রাজা (চাঁদপুর-৩), মো. আনোয়ার হোসাইন চট্টগ্রাম-২, ব্যবসায়ী শাহীদুল ইসলাম চট্টগ্রাম-১, দেলোয়ার হোসেন দুলাল (নেত্রকোনা-৩), রফিক হেলালী (নেত্রকোনা-৩), হাসান বিন সোহাগ (নেত্রকোনা-৩), ডা. আনোয়ারুল হক (নেত্রকোনা-২), তাহমিনা জামান শ্রাবন্তী (নেত্রকোনা-৪), শহীদুল্লাহ ইমরান (নেত্রকোনা-৫), মামুন বিন আবদুল মান্নান (ময়মনসিংহ-৯), এ কে এম মোয়াজ্জেম হোসেন (ঢাকা-১৬), ফৈরদৌস আহমেদ মিষ্টি (ঢাকা-৭ ও ১৪), প্রয়াত বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুর পত্নী নাছিমা আক্তার কল্পনা (ঢাকা-৭), মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল (জামালপুর-৩), সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়সল (হবিগঞ্জ-৪), নাজমুল মোস্তফা আমিন (চট্টগ্রাম-১৫), শহিদুল ইসলাম বাবুল (ফরিদপুর-২), হাসান মামুন (পটুয়াখালী-৩), ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান (নরসিংদী-৩), সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুনুর রশিদ মামুন (নোয়াখালী-১), স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল (নরসিংদী-৪), শরীফুল আলম (কিশোরগঞ্জ-৪), অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া (ঢাকা-৪), ব্যারিস্টার কায়সার কামাল (নেত্রকোনা-৪), রশিদুজ্জামান মিল্লাত (জামালপুর-১), আমিরুল ইসলাম খান আলীম ও রাকিবুল করিম খান পাপ্পু (সিরাজগঞ্জ-৫), মমতাজ উদ্দিন মন্ডল, মো. মাসুদ রানা প্রধান, ফজলুর রহমান (জয়পুরহাট-১), এ এইচ এম ওবায়দুর রহমান চন্দন (জয়পুরহাট-২), সাইফুল আলম নীরব ও আনোয়ারুজ্জামান (ঢাকা-১২), মেজর (অব.) কামরুল ইসলাম এবং এ এস এম জাহাঙ্গীর (ঢাকা ১৮), সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু (টাঙ্গাইল ২ ও ৫), আফরোজা খান রিতা  এবং  এস এ কবির জিন্নাহ (মানিকগঞ্জ-১), এ বি এম মোশাররফ হোসেন (পটুয়াখালী-৪), খন্দকার আবু আশফাক ও মিয়া মো. আনোয়ার (ঢাকা-১), মিয়া নূরুউদ্দিন অপু (শরীয়তপুর-৩), রকিবুল ইসলাম বকুল (খুলনা-৩), আবদুস সালাম (ঢাকা-১৩), সাইফুল ইসলাম ফিরোজ (ঝিনাইদহ-৪), আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ (বরিশাল-৫), আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন ও আসাদুজ্জামান পলাশ (মাদারীপুর-৩), নাসির উদ্দিন কালু (শরীয়তপুর-১), সমীরন দেওয়ান (খাগড়াছড়ি-১), সফিকুর রহমান কিরণ (শরীয়তপুর-২), আক্তারুজ্জামান বাচ্চু (ময়মনসিংহ-১০), অনিন্দ্য ইসলাম অমিত (যশোর-৩), আবদুল মতিন (নওগাঁ-৪), হাবিব-উন নবী খান সোহেল (ঢাকা-৮), সেলিমুজ্জামান সেলিম (গোপালগঞ্জ-১), মিজানুর রহমান মিনু (রাজশাহী-২), মতিউর রহমান মন্টু, রায়হানুল আলম ও শফিকুল হক মিলন (রাজশাহী-৩), নাদিম মোস্তফা (রাজশাহী-৫), ফেরদৌস মুন্না (চট্টগ্রাম-৪), মামুন হাসান (ঢাকা-১৫), তানজীন চৌধুরী লিলি (ময়মনসিংহ-৩), মনিরুল ইসলাম (পটুয়াখালী-২), ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার ঢাকা-১৭, ওমর ফারুক আল হাদী (সুনামগঞ্জ-১), ভিপি জয়নাল আবেদীন ফেনী-২, ইয়াজ্জেম হোসেন রোমান মাদারীপুর-১, মেহেদী হাসান সুমন দিনাজপুর-১, অমলেন্দু দাশ অপু যশোর-৬ এবং আজিজুল বারী হেলাল খুলনা-৪ আসন থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।

সর্বশেষ খবর