শুক্রবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত

জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত জনগণের সেবা করে যাব : শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত জনগণের সেবা করে যাব : শেখ হাসিনা

ঢাকা সেনানিবাস আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে বুধবার সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্মারক উপহার তুলে দেন সেনাবাহিনী প্রধান —বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত জনগণের সেবা করার সংকল্প ব্যক্ত করে এই দেশকে আগামী প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য করে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছেন। তিনি সুকান্তের ছাড়পত্র কবিতার পঙিক্ত উদ্ধৃত করে বলেন, ‘চলে যাব-তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ/ প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল,/ এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি-/নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।’ বুধবার বিকালে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। খবর বাসস। আসন্ন নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা পুনরায় দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেন, নির্বাচনে জনগণ যদি ভোট দেয় তাহলে আবার ক্ষমতায় আসবেন। আর যদি নাও আসেন তাহলেও আফসোস নেই। কারণ, বাংলাদেশকে যে উন্নয়নের মহাসড়কে তিনি তুলে দিতে সক্ষম হয়েছেন তার থেকে বাংলাদেশকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হবে না। তিনি পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে জীবনানন্দ দাসের ভাষায় বলেন, ‘আবার আসিব ফিরে এই ধানসিঁড়িটির তীরে, এই বাংলায়।’ প্রধানমন্ত্রী ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলায় তাঁর সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করে এ সময় বলেন, শত বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করেই তাঁর সরকার স্বাধীনতার সুফলকে জনগণের ঘরে পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছে। সশস্ত্র বাহিনী আমাদের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের প্রতীক উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এর আধুনিকায়নে তাঁর সরকারের পদক্ষেপসমূহ উল্লেখ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ করব না। যুদ্ধ করতে আমরা চাই না। কিন্তু একটি স্বাধীন দেশের যে সশস্ত্র বাহিনী হবে সেটাকে স্বাধীন দেশের উপযুক্ত হতে হবে।’

সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত : এদিকে যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ উদ্দীপনায় বুধবার সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে দেশের সব সেনানিবাস, নৌঘাঁটি ও স্থাপনা এবং বিমানবাহিনী ঘাঁটির মসজিদসমূহে দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি এবং সশস্ত্র বাহিনীর অগ্রগতি কামনা করে ফজরের নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর শহীদ সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকালে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীকে পৃথক পৃথকভাবে গার্ড অব অনার প্রদান করে। পুষ্পস্তবক অর্পণকালে শহীদদের স্মরণে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়। এর আগে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শিখা অনির্বাণে পৌঁছলে তাঁদেরকে স্বাগত জানান তিন বাহিনী প্রধানগণ এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার। মুক্তিযুদ্ধে শাহাদাত বরণকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মরণে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে সম্মিলিতভাবে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে যান। সেখানে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার এবং মহাপরিচালকবৃন্দ। তিন বাহিনী প্রধানগণ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে বীরশ্রেষ্ঠদের উত্তরাধিকারী এবং নির্ধারিত সংখ্যক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান করেন। তিনি তাদের হাতে সম্মানী চেক এবং উপহার তুলে দেন। উল্লেখ্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠের নিকট আত্মীয়সহ প্রায় ১০১ জন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারীগণ সংবর্ধনায় যোগ দেন।

তুরস্কে সশস্ত্র বাহিনী দিবস : তুরস্কের আঙ্কারায় বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে বুধবার সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত হয়েছে। আঙ্কারার আতলী হোটেলে এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তুরস্কের বিমান বাহিনী প্রধান জেনারেল হাসান কুচক আকিউচ, তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম. আল্লামা সিদ্দিকী, তুরস্কের নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল আদনান ওজবাল, কোস্ট গার্ড কমান্ডার রিয়ার এডমিরাল আহমেত কেনদির, চতুর্থ কোর কমান্ডারসহ তুরস্কের সামরিক বাহিনী, সরকার ও বিভিন্ন দূতাবাসের রাষ্ট্রদূতসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর