শুক্রবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

রাজনীতি এখন বড় ব্যবসা

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজনীতি এখন বড় ব্যবসা

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য

বাংলাদেশে রাজনীতিই এখন সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক উদ্যোগ বলে মন্তব্য করেছেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য। একইসঙ্গে নির্বাচনী হলফনামায় দেওয়া প্রার্থীদের সম্পদের তথ্য জনগণের সামনে তুলে ধরতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সেইসঙ্গে ঋণখেলাপি ও কর ফাঁকিবাজদের তথ্যও জনগণের সামনে তুলে ধরার পরামর্শ দিয়েছেন এই বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ। গতকাল রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে সিপিডি কর্তৃক ‘দ্য লিস্ট  ডেভেলপমেন্ট কান্ট্রিস রিপোর্ট-২০১৮’ প্রকাশকালে এ মন্তব্য করেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। এতে দেশে ভবিষ্যৎ উদ্যোক্তা তৈরির দিকনির্দেশনা তুলে ধরা হয়। অর্থনীতির কাঠামোগত রূপান্তর ও সরকারি নীতি সংস্কারের বিষয়েও পরামর্শ তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য বলেন, নির্বাচনের ভিতরে ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর উপস্থিতি যথেষ্ট দৃশ্যমান। রাজনীতিবিদদের চেয়েও হয়তো ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর লোকেরাই তুলনামূলকভাবে দৃশ্যমান। ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এখন রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার প্রয়োজন বোধ করছে। এ ছাড়া রাজনীতি করাটাও একটা ব্যবসার মতো বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, কর অবকাশ থেকে শুরু করে কোনো একটি লাইসেন্স বা নতুন একটি ব্যাংকের কথা বলেন, এগুলো বিশেষভাবে আনুকূল্যের ভিত্তিতে হয়েছে। সেজন্য তারা রাজনীতি দিয়ে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে ব্যবহার করে একে সুরক্ষা দিতে চান।

 আবার রাজনীতিবিদরাও এখন অনেক বেশি ব্যবসার দিকে ঝুঁকছেন। এ ক্ষেত্রে রাজনীতিবিদরাও এখন ব্যবসায়ী হয়ে যাচ্ছেন। রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা একে অন্যের সমর্থনে কাজ করছেন এবং নাগরিকরা কে রাজনীতিবিদ আর কে ব্যবসায়ী তা বুঝে উঠতে পারছেন না। তাদের সামনে দৃশ্যমান হচ্ছে, বাংলাদেশে এখন রাজনীতি সবচেয়ে বড় ব্যবসায় উদ্যোগ। এটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। ড. দেবপ্রিয় বলেন, নির্বাচনের আগে যারা হলফনামার ঘোষণা দিচ্ছেন, সে হলফনামাগুলো এনবিআর দ্রততার সঙ্গে জনসমক্ষে প্রকাশ করতে পারে, করা উচিত। এতে জনগণের ওই প্রার্থীদের মূল্যায়ন করা সহজ হবে। নির্বাচনের পরে যারা এমপি হিসেবে শপথ নেবেন তখনই তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থ ঘোষণা দিয়ে নিবন্ধন করবেন। যেখানে বলতে হবে, এই এই খাতে আমার ব্যবসায়িক স্বার্থ আছে, বিনিয়োগ আছে, আমার পরিবার এটার সঙ্গে যুক্ত। তাহলে আইন প্রণয়ন করার ক্ষেত্রে তারা যখন মতামত দেবেন, তখন বোঝা যাবে নিজেদের স্বার্থকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন নাকি দেশ ও জনস্বার্থকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর